বিজয় দিবসে চট্টগ্রাম কলেজের শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ কর্মীরা ফুল দেওয়ার পর তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মীরা।
Published : 16 Dec 2015, 12:37 PM
বুধবার দুপুরে এই হামলার পর দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে কলেজ ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে শিবিরকর্মী সন্দেহে অন্তত ২৫জনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরা অবস্থান নিয়ে আছেন।
চকবাজার থানার ওসি আজিজ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বেলা ১২টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ক্যাম্পাসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করার সময় শিবিরকর্মীরা হামলা চালায়।
অন্য ছাত্র সংগঠনগুলোর কর্মী ও শিক্ষার্থীরা জানান, শিবিরনিয়ন্ত্রিত চট্টগ্রাম কলেজে অন্য কোনো সংগঠন কোনো কর্মসূচি পালন করতে পারে না। সেখানে দুটি আবাসিক হলও শিবির দখল করে রাখায় সাধারণ ছাত্ররা থাকার সুযোগ পায় না।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে শিবিরের অবস্থান উপেক্ষা করেই কালেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দেওয়ার পরপরই কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে হাতবোমা বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। পরে শহীদ মিনারে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীদের দিকে ইটও ছোড়া হয়।
এক পর্যায়ে মুখোমুখি অবস্থান নেয় শিবির ও ছাত্রলীগ; শুরু হয় হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
সংঘর্ষের মধ্যে দুই পক্ষই বৃষ্টির মত ঢিল ছুড়তে থাকে বলে কলেজের এক কর্মচারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
এভাবে ১০/১৫ মিনিট চলার পর শিবিরের কর্মীরা ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে যায়। প্রধান ফটকে তালা লাগানো হয়। পরে ছাত্রলীগের ছেলেরা কলেজের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে, সড়ক থেকে ইট ছোড়ে।
২০/২৫ মিনিট পরে পুলিশ এসে কলেজের মূল ফটকের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে অভিযান চালায়। ওই সময়ও থেমে থেমে মিছিল করছিল ছাত্রলীগ।
এদিকে কলেজ অডিটোরিয়ামে বিজয় দিবসের আলোচনাসভা ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সংঘর্ষের কারণে মাঝপথে পণ্ড হয়ে যায়। সেখানে আটকা পড়েন অনুষ্ঠানে আসা সবাই।
পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে বেলা দেড়টার দিকে পুলিশের সহায়তায় অধ্যক্ষসহ সবাই বেরিয়ে আসেন।
কলেজের অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনুষ্ঠানের সময় বাইরে গোলমাল হয়েছে। কারা করেছে আমরা জানি না। ভেতরে আমিসহ চারশজনের বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থী আটকে ছিলাম। নিরাপত্তার কথা ভেবে আমরা বের হইনি। পুলিশ এলে বের হয়ে আসি।”
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিমের অভিযোগ, “সংঘর্ষের সময় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। দীর্ঘদিন ধরে এখানে শিবির আধিপত্য চালাচ্ছে। অন্য কোনো সংগঠনকে রাজনীতি করতে দেয় না। তারা আমাদের উপর নির্লজ্জভাবে হামলা করেছে।”
এই ছাত্র নেতা বলেন, “কলেজের আবাসিক দুটি হল রয়েছে। সেখানে আবাসিক কেউ থাকার সুযোগ পায় না। শিবিরের লোকেরা অনৈতিকভাবে অবস্থান নিয়ে আছে। সব গণ্ডগোলের মূলে রয়েছে শিবিরের এই অবৈধ অবস্থান।”
হল দুটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান নুরুল আজিম।