৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেটে বিশ্বকাপ শেষ: কোহলি

পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্রাথমিক পর্ব শেষ করেছিল ভারত। মাঠের পারফরম্যান্সে তাদেরকে মনে হয়েছে অপ্রতিরোধ্য। প্রথম সেমি-ফাইনালে তারাই ছিল ফেভারিট। সম্ভাবনায় এগিয়ে ছিল রিজার্ভ ডে শুরুর সময়ও। কিন্তু টুর্নামেন্টের ৪১ দিন পরও যাদেরকে মনে হয়েছে দাপুটে, সেই দল হেরে গেছে ৪০-৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেটে। ম্যাচ শেষে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির সবচেয়ে বড় আক্ষেপ সেখানেই।

ক্রীড়া প্রতিবেদক ম্যানচেস্টার থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2019, 05:24 PM
Updated : 10 July 2019, 07:00 PM

ওই ৪৫ মিনিটে রীতিমত ঝড় বয়ে গেছে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ওপর দিয়ে। ২৩৯ রানের পুঁজিতে বোলিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ড উড়িয়ে দেয় ভারতের টপ অর্ডার। নতুন বলে ম্যাট হেনরি ও ট্রেন্ট বোল্টের অসাধারণ বোলিংয়ের জবাব পায়নি ভারত।

টপ অর্ডারের যে তিনজনের ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে ভারতীয় ব্যাটিং, তিনজনই বিদায় নেন চার ওভারের মধ্যে। রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল ও কোহলি, সবাই ফিরেছেন ১ রান করে। ৫ রানে ভারত হারায় ৩ উইকেট।

পাঁচে নামা দিনেশ কার্তিক ২০ বলে রানশূন্য থাকার পর পেয়েছিলেন প্রথম রানের দেখা। তার ভোগান্তি শেষ হয় ৬ রানে। ১০ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ২৪ রান তুলে ভারত তখন ধুঁকছে।

পরে রবীন্দ্র জাদেজা ও মহেন্দ্র সিং ধোনির লড়াইয়ে জয়ের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিল ভারত। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়নি। কোহলি দায় দিলেন সেই বাজে শুরুকেই।

“আমাদের ব্যাটিংয়ের প্রথম ৪০ মিনিটেই খেলা বদলে গেছে। নিউ জিল্যান্ডকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। নতুন বলে নিখুঁত বোলিংয়ের প্রদর্শনী মেলে ধরে ওরা আমাদের বাধ্য করেছে ভুল করতে। প্রথম ৪০-৪৫ মিনিটের চাপ ছিল প্রবল। ৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। সেখান থেকে আমাদের চেষ্টা ছিল দারুণ। কিন্তু ওদের প্রথম স্পেলই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।”

এ নিয়ে টানা দুটি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনাল থেকে ছিটকে গেল ভারত। ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল ধোনির ভারত। এবার অধিনায়ক কোহলি পেলেন সেই তেতো স্বাদ।

ফেভারিট হয়েও ফাইনালে উঠতে না পারার হতাশা লুকালেন না ভারত অধিনায়ক। আফসোস করলেন আবারও সেই বাজে শুরু নিয়ে।

“অবশ্যই খুবই হতাশ। টুর্নামেন্ট জুড়ে আমরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছি। স্রেফ ৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেটে বিশ্বকাপ শেষ হওয়াটা দুঃখজনক। আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে। কারণ মোমেন্টাম গড়ে তুলতে আমরা প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছি।”

“পয়েন্ট টেবিলের এক নম্বরে থেকে শেষ করার পর (প্রাথমিক পর্বে) এক স্পেলের বাজে ক্রিকেটে টুর্নামেন্ট থেকে পুরোপুরি ছিটকে গেলাম। এখন মেনে নিতেই হবে। আগেও আমাদের সঙ্গে এসব হয়েছে। সেখান থেকে শিখে আমরা আরও ভালো ক্রিকেটার হয়ে উঠেছি। ৪০-৪৫ মিনিটের বাজে ক্রিকেট আমাদের ছিটকে দিয়েছে। এসব খেলারই অংশ।”

আইপিএল, বিপিএল বা অন্য কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে শেষ চার থেকে ফাইনালে ওঠার ফরম্যাট একটু ভিন্ন। সেমি-ফাইনাল বলে কিছু সেখানে নেই, প্রাথমিক পর্বের শীর্ষে থাকা দুই দল সেখানে অন্তত দুটি সুযোগ পায় ফাইনালে ওঠার। তিন ও চারে শেষ করা দলকে ফাইনালে উঠতে হয় দুই ধাপ পেরিয়ে। বিশ্বকাপেও তেমন হওয়া উচিত কিনা, সেই প্রশ্ন উঠল। কোহলি জানালেন, তিনি তাকিয়ে থাকবেন এমন কোনো পরিবর্তনের জন্য।

“ভবিষ্যতে, কে জানে, হতেও পারে, যদি পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে শেষ করার আলাদা কোনো মূল্য থাকে। আমি মনে করি, এটা বিবেচনায় আসা উচিত, টুর্নামেন্টের বিশালত্বের কথা চিন্তা করে। এটা অবশ্যই যৌক্তিক পয়েন্ট।”