কোহলি-উইলিয়ামসন লড়াইয়ের নতুন অধ্যায়

একজনের গোলগাল, আদুরে চেহারা। আরেকজন যেন কৈশোর পার হননি। ১১ বছর আগে এমনই ছিলেন বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়ামসন। ২০০৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে মুখোমুখি হওয়া ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক ছিলেন এই দুজন। দুজনের তখনকার ছবি দিয়ে ম্যাচটি মনে করিয়ে দিয়েছে আইসিসি, সেটি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। উপলক্ষ, আরেকটি সেমি-ফাইনাল। এবার মূল বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালের মঞ্চে অধিনায়ক হিসেবে মুখোমুখি হচ্ছেন দুজন।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিম্যানচেস্টার থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2019, 04:20 PM
Updated : 8 July 2019, 04:27 PM

সময়ের পরিক্রমায় দুজনের চেহারা বদলে গেছে অনেক। তবে তার চেয়ে বেশি বদলেছে দুজনের ক্রিকেট। সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের দুজন তারা, জায়গা করে নিয়েছেন সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের কাতারেও। অধিনায়ক হিসেবেও যথেষ্ট সফল। এগিয়ে চলার পথেই দুজন এবার প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে।

যুব ক্রিকেটের দিনগুলোয় প্রায় নিয়মিতই বোলিং করতেন কোহলি। ১১ বছর আগে কুয়ালা লামপুরে সেই সেমি-ফাইনালে ৩৭ রান করা উইলিয়ামসনকে আউট করেছিলেন কোহলিই। ২ উইকেট নেওয়ার পর ৪৩ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক।

সেই ম্যাচে খেলা আরও তিন জন আছেন এবারের সেমি-ফাইনালে। এখনকার পেসার টিম সাউদি তখন ছিলেন অলরাউন্ডার। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করেছিলেন। বল হাতে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। এখনকার মতোই সেদিন সাউদির সঙ্গে নতুন বল নিয়েছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট। ভারতীয় দলে ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা।

তবে মূল আলো যথারীতি কোহলি ও উইলিয়ামসনের ওপরই থাকবে। অধিনায়কত্ব একটা কারণ। ব্যাটিংয়েও দুজন দলের বড় ভরসা। দলে দুজনের প্রভাব প্রবল। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণে দুজনেরই থাকবে বড় ভূমিকা।

ক্রিকেটে দুজনের ঘরানা ও ব্যক্তিত্ব যদিও পুরোই আলাদা। কোহলি অনেকটাই ডাকাবুকো, আগ্রাসী। ব্যাটিংয়ের মতো শরীরী ভাষায়ও গুঁড়িয়ে দিতে চান প্রতিপক্ষকে। সৌম্য দর্শন উইলিয়ামসন আচরণেও ঠিক এমনই। তার ব্যাটিং, ২২ গজে হাঁটাচলা, মাঠের ভেতরে-বাইরে বিচরণ ও কথা, সবকিছুতেই জড়িয়ে থাকে প্রশান্তির অনুভূতি।

দুজনের সম্পর্ক অবশ্য দারুণ। সেই সম্পর্কের কথা জানালেন কোহলি। ১১ বছর আগের স্মৃতির দোলা আন্দোলিত করল দুজনকেই। যুব থেকে মূল বিশ্বকাপে এই পুনরাবৃত্তিতে কোহলিকে মনে হলো দারুণ রোমাঞ্চিত।

“কেনকে আমি মনে করিয়ে দেব। কালকে যখন দেখা হবে, ওকে বলব আমি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ১১ বছর পর আবার সিনিয়র বিশ্বকাপে দুজনের আবার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা দারুণ ব্যাপার। ওই বিশ্বকাপের আমাদের ব্যাচ, ওদের ব্যাচ থেকে অনেকেই জাতীয় দলে খেলেছে, এখনও খেলছে। খুব ভালো ব্যাপার সেটি।”

“সেদিন নিশ্চয়ই আমি বা সে, আমরা কেউই ধারণা করতে পারিনি একদিন এরকম কিছু হবে। আমরা আবার এভাবে মুখোমুখি হব। স্মৃতিটা দারুণ।”

সেই ম্যাচ আর এই ম্যাচ নিয়ে প্রায় একই রকম অনুভূতির ছোঁয়া পাওয়া গেল কেন উইলিয়ামসনের কণ্ঠেও।

“সত্যি বলতে, এটা আমার মাথায় আসেনি। মনে পড়ে বেশ ভালো লাগছে। কয়েক বছর পরে, আমরা আবার এখানে, তবে একটু ভিন্ন মঞ্চে। তবে এটিও স্পেশাল। সবচেয়ে বড় মঞ্চে সেমি-ফাইনালে দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারা দারুণ সম্মানের।”

“দুই দলই মাঠে নেমে চ্যালেঞ্জটি নিতে মুখিয়ে থাকবে। রোমাঞ্চকর একটি সুযোগ এটি।”

দলের জন্য যেমন সুযোগ, তেমনি সুযোগ এই দুজনেরও। ১১ বছর আগে সেই সেমি-ফাইনাল জিতে ফাইনালে উঠেছিল কোহলির ভারত, পরে জিতেছিল শিরোপাও। এবার কোহলির সামনে হাতছানি সেই ইতিহাস ফিরিয়ে আনার, উইলিয়ামসনের সুযোগ নতুন ইতিহাস গড়ার।