রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে উইন্ডিজকে হারাল শ্রীলঙ্কা

আভিশকা ফার্নান্দোর সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় লক্ষ্য দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। রান তাড়ায় শুরুটা ভালো না হলেও দলকে ম্যাচে ফেরান নিকোলাস পুরান। প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে থামিয়ে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জয় তুলে নেয় দিমুথ করুনারত্নের দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2019, 01:37 PM
Updated : 1 July 2019, 06:55 PM

চেস্টার লি স্ট্রিটের দা রিভারসাইড ডারহামে ২৩ রানে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। ৩৩৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯ উইকেটে ৩১৫ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

জয়ের জন্য শেষ ৩ ওভারে ৩১ রান প্রয়োজন ছিল ক্যারিবিয়ানদের। সেঞ্চুরিয়ান পুরান ক্রিজে ছিলেন বলে সম্ভাবনা বেঁচে ছিল তাদের। চমকে দিয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের হাতে সে সময় বল তুলে দেন লঙ্কান অধিনায়ক। দেড় বছর পর বোলিং করে প্রথম বলেই পুরানকে ফিরিয়ে ম্যাচ লঙ্কানদের মুঠোয় নিয়ে আসেন ম্যাথিউস। এরপর আর পেরে ওঠেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।   

টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ নতুন বলে উইকেট নিতে পারেনি। তাদের এলোমেলো বোলিংয়ের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দুই ওপেনার কুসল পেরেরা ও দিমুথ করুনারত্নে গড়েন বড় সংগ্রহের ভিত। দারুণ এক ডেলিভারিতে অধিনায়ক করুনারত্নেকে কট বিহাইন্ড করে ৯৩ রানের জুটি ভাঙেন জেসন হোল্ডার।

এর কিছুক্ষণ পর রান আউট হয়ে ফিরে যান শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা কুসল পেরেরা। আগের দুই ম্যাচে ভালো শুরু পেয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি ফার্নান্দো। টানা তিন জুটিতে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি উপহার দেওয়া ২১ বছর বয়সী এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ১০৩ বলে ৯ চার ও দুই ছক্কায় করেন ১০৪ রান। 

লাহিরু থিরিমান্নের সঙ্গে তার জুটিতে এবারের আসরে প্রথমবারের মতো তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ গড়ে ১৯৯৬ আসরের চ্যাম্পিয়নরা। থিরিমান্নে অপরাজিত থাকেন ৪৫ রানে। 

বড় রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সুনিল আমব্রিসকে কট বিহাইন্ড করার পর শেই হোপকে বোল্ড করে দেন লাসিথ মালিঙ্গা। সপ্তম ওভারে পেতে পারতেন ক্রিস গেইল ও শিমরন হেটমায়ারের উইকেট। ফিল্ডাররা মুঠোয় জমাতে পারেননি ক্যাচ।

সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি গেইল ও হেটমায়ার। দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই ফিরেন থিতু হয়ে। ৮৪ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে চাপে পড়া ক্যারিবিয়ানদের টানেন পুরান। সপ্তম উইকেটে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। ৩২ বলে ৫১ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলেন এই স্পিনিং অলরাউন্ডার।

অ্যালেনের রান আউটে ভাঙে ৮৩ রানের জুটি। ইনিংসে তৃতীয় রান আউটের পর কাজটা অনেক কঠিন হয়ে যায় ক্যারিবিয়ানদের জন্য। পুরান ছিলেন বলে আশায় ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চার ছক্কা ও ১১ চারে ১১৮ রান করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে ম্যাথিউস ফিরিয়ে দিলে আসরে তৃতীয় জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা।

ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়া ফার্নান্দো জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে উঠে এসেছে শ্রীলঙ্কা। সমান ম্যাচে ষষ্ঠ হারের স্বাদ পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে নয় নম্বরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ৩৩৮/৬ (করুনারত্নে ৩২, কুসল পেরেরা ৬৪, ফার্নান্দো ১০৪, মেন্ডিস ৩৯, ম্যাথিউস ২৬, থিরিমান্নে ৪৫*, উদানা ৩, ডি সিলভা ৬*; কটরেল ১০-০-৬৯-১, টমাস ১০-১-৫৮-১, গ্যাব্রিয়েল ৫-০-৪৬-০, হোল্ডার ১০-০-৫৯-২, ব্র্যাথওয়েট ৭-০-৫৩-০, অ্যালেন ৮-০-৪৪-১)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩১৫/৯ (গেইল ৩৫, আমব্রিস ৫, হোপ ৫, হেটমায়ার ২৯, পুরান ১১৮, হোল্ডার ২৬, ব্র্যাথওয়েট ৮, অ্যালেন ৫১, কটরেল ৭*, টমাস ১, গ্যাব্রিয়েল ৩; মালিঙ্গা ১০-০-৫৫-৩, ডি সিলভা ১০-০-৪৯-০, উদানা ১০-০-৬৭-০, রাজিথা ১০-০-৭৬-১, ভ্যান্ডারসে ৭-০-৫০-১, করুনারত্নে ১-০-৭-০, ম্যাথিউস ২-০-৬-১)

ফল: শ্রীলঙ্কা ২৩ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আভিশকা ফার্নান্দো