‘ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ সেমি-ফাইনাল, ফাইনাল, সবকিছু’

তামিম ইকবালের চোখ ফোনের স্ক্রিনে। লর্ডসে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া লড়াই তখন কেবল শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের ওপেনার স্কোর দেখতে দেখতে বলছিলেন, “সাড়ে তিনশ করতে হবে, আজকে আমি অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্টার।” পাশেই দাঁড়ানো মাশরাফি বিন মুর্তজা সঙ্গত করলেন, “আমি তো ছোট থেকেই অস্ট্রেলিয়ার সাপোর্টার!” রসিকতায় হাসির রেশ থাকতে থাকতেই অধিনায়ক আবার সিরিয়াস, “আগে নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করতে হবে। আপাতত ভারত ম্যাচ আমাদের ফাইনাল।”

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিসাউথ্যাম্পটন থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 June 2019, 01:58 PM
Updated : 25 June 2019, 08:50 PM

আফগানিস্তানকে হারানোর পর সেমি-ফাইনালে খেলার সম্ভাব্য ছক কষছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার সকালে টিম হোটেলের সামনে তামিম-মাশরাফির কথায়-আ্ড্ডায় সেটিই ফুটে উঠছিল বারবার। ইংল্যান্ড সব ম্যাচ হারলে বাংলাদেশের সুবিধা, নিউ জিল্যান্ড হারলে নাকি জিতলে ভালো, এসব হিসাব চলছিল।

তামিম মনে করিয়ে দিলেন, শ্রীলঙ্কাকেও হিসেবের বাইরে রাখা যাবে না। বিশ্বাস নেই পাকিস্তানকে দিয়েও। যখন-তখন চমকে দিতে পারে। তবে শেষমেষ আলোচনার চূড়ান্ত ধাপ গিয়ে ঠেকে একই বিন্দুতে। আগে নিজেদের কাজটা করতে হবে।

বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচই এখন নিজেদের শেষ ম্যাচ হিসেবে দেখছে দল। জিততে হবে প্রতিটিই। আফগানিস্তান বাধা পেরুনোর পর সামনে এখন ভারত। আফগানদের বিপক্ষে জয় যতটা প্রত্যাশিত ছিল, টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট ভারতকে হারানো হবে ততটাই কঠিন।

তবে সহজ-কঠিন ভাবার বিলাসিতা এখন নেই দলের। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমি-ফাইনালে ভারতের কাছে যেখানে হেরেছিল বাংলাদেশ, সেই বার্মিংহামেই ম্যাচ। এবার ম্যাচ প্রাথমিক পর্বের, তবে সাউথ্যাম্পটন থেকে বার্মিংহামে যাওয়ার বাসে ওঠার আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে অধিনায়ক বললেন, তারা ম্যাচটিকে দেখছেন নক আউট হিসেবেই।

“সেমি-ফাইনালে যেতে হলে জিততে হবে। আমাদের কাছে এই ম্যাচ তাই সেমি-ফাইনাল বা ফাইনাল, বা সবকিছু বলতে পারেন। ডু অর ডাই। শক্তিতে আমরা কতটা পিছিয়ে, ওরা কতটা ফেভারিট, এসব ভাবার সুযোগ নেই। টিকতে হলে জিততে হবে, জেতার পথ বের করতে হবে।”

সেই পথ বের করায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যার, দলের কম্পিউটার অ্যানালিস্ট, ভারতেরই শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন বললেন, পথ অবশ্যই মিলবে।

“ভারতকে হারানো অসম্ভব নয়, অবশ্যই পথ আছে। যদিও বার্মিংহামে ওদেরকে হারানো সহজ হবে না। তবে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন যদি আমরা ঠিকঠাক করতে পারি, সবাই সেরাটা দিতে পারে, অবশ্যই সম্ভব।”

সীমিত সামর্থ্য নিয়েও খেলোয়াড়ী জীবনে ভয়ডরহীন মানসিকতার জন্য পরিচিত ছিলেন খালেদ মাহমুদ। এখন তিনি বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার, কণ্ঠে সেই পরিচিত মানসিকতারই প্রতিফলন।

“ভয় পেয়ে লাভ আছে? খেলতে হবে, জিততে হবে। হিসাব সোজা। মাঠে নেমে আমরা সমানে সমান লড়াই করব। তার পর যা হয়।”

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জয়ও যথেষ্ট নাও হতে পারে সেমি-ফাইনালে উঠতে। প্রয়োজন হতে পারে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ও। সৌম্য সরকারের ভাবনা, শেষ চার না ভেবে একটি করে ম্যাচ জিতে সামনে এগিয়ে চলা।

“সেমি-ফাইনালে খেলতেই হবে ধরে নিলে কাজটা কঠিন হয়ে উঠতে পারে। আমরা একটি করে ম্যাচ ধরে এগোচ্ছি। পরের ম্যাচ ভারতের বিপক্ষে, চাওয়া থাকবে ভালো খেলে ম্যাচটা জেতার। এরপর তাকাব পরের ম্যাচে। সেমিতে খেলতে পারব নাকি পারব না, সেটি পরে। আমাদের পরের ম্যাচটি জিততে হবে। তার পর দেখব সুযোগ আছে কিনা।”