পুরোনো লড়াই নতুন করে

অন্য অনেক খেলার তুলনায় ক্রিকেটের দুনিয়া অনেক ছোট। দলগুলির নিজেদের মধ্যে দেখা হয় নিয়মিতই। এর পরও প্রতিপক্ষ হিসেবে পরস্পরের অরুচি চলে আসার কথা বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সাম্প্রতিক সময়ে মুখোমুখি হয়েছে এতবার! বিশ্বকাপ তবু আরেকবার মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে দুই দলকে। লড়াইয়ের নতুন অধ্যায় এবার বিশ্বমঞ্চে।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিটনটন থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2019, 07:16 PM
Updated : 16 June 2019, 07:18 PM

বিশ্বকাপে প্রায় আবশ্যিক জয়ের ম্যাচে সোমবার টনটনে লড়বে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই ম্যাচ না জিতলে শেষ চারের লড়াই থেকে ছিটকে যাচ্ছে না কোনো দলই। তবে অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাবে সম্ভাবনার দুয়ার। জয়টা তাই খুব জরুরি দুই দলের জন্যই।

এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি যে দুই দল, পরস্পরের নাড়ি-নক্ষত্র তারা জানে। গত এক বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ১৯ বার!

ওয়ানডে ছিল ৯টি। বাংলাদেশ জিতেছে তার ৭টিই। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে তাই পরিষ্কারভাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সিরিজ জিতেছে, জয় এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে। বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিরপেক্ষ ভেন্যু আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশ জিতেছে তিন ম্যাচই। এক সময় ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করা দলটিকে ম্যাচের পর ম্যাচ দাপটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

সাম্প্রতিক এই পারফরম্যান্সই ম্যাচের আগের সমীকরণে এগিয়ে রাখছে বাংলাদেশকে। তবে সেই সমীকরণকে একদমই পাত্তা দিচ্ছেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। বাংলাদেশ অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন, নিজেদের দিনে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল হয়ে উঠতে পারে ভয়ঙ্কর।

“দ্বিপাক্ষিক সিরিজ ও এই ধরনের টুর্নামেন্টের বাস্তবতা এক নয়। একইরকম মাইন্ডসেট থাকে না। এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল যে কোনো কিছু করতে পারে। নিজেদের দিনে যে কোনো দলকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। আগের ৯ ম্যাচের ৭টি জিতেছি বলেই আরেকটি জয়ের গ্যারান্টি নেই। নতুন ম্যাচে শুরু থেকেই আবার শুরু করতে হবে। আবার ভালো খেলেই জিততে হবে।”

জেসন হোল্ডারের অবশ্য নিজেদের আন্ডারডগ মানতে আপত্তি নেই। বিশ্বকাপে যে আগের ম্যাচগুলির পারফরম্যান্সের প্রভাব থাকবে না, ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জানিয়ে রাখলেন সেটিও।

“সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বেশ কয়েকবার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছি, ওরা আমাদের চেয়ে ভালো করেছে। আমাদেরকে আন্ডারডগ বললে, সেটি উপযুক্তই। সবশেষ ৯ ম্যাচের ৭টি হারলে সেটি বলাই যায়। তবে সবাই দেখেছি, এবারের বিশ্বকাপ কেমন হচ্ছে। তুমুল লড়াই হয়েছে অনেক ম্যাচেই, দু-একটি অঘটনও দেখা গেছে।”

“এটা নতুন মঞ্চ, নতুন দিন, নতুন সুযোগ। ক্রিকেট খেলাটা নির্ভর করে নির্দিষ্ট দিনের ওপর। চ্যালেঞ্জের জন্য আমরা প্রস্তুত, মুখিয়ে আছি ভালো খেলতে।”

এই ম্যাচের আগে পয়েন্ট টেবিলে দুই দল আছে প্রায় কাছাকাছিই। ৪ ম্যাচে এক জয়, দুই হার, আরেকটি ম্যাচ ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। দুই দলেরই পয়েন্ট তিন।

এর পরের ম্যাচেই বাংলাদেশ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, সামনে আছে ভারতের বিপক্ষে লড়াইও। এই ম্যাচে তাই জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছেন না মাশরাফি।

“শেষ কথা হলো, জয় প্রয়োজন। আমরা যদি আরও একটি ম্যাচ বেশি জিতে থাকতাম, তবু এই ম্যাচে জয় প্রয়োজন ছিলই। জয়ের বিকল্প আসলে কিছু নেই।”