লোকের কথার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিজের কাছে প্রশ্ন: মাশরাফি

পিছু না ছাড়া চোট আর অসংখ্য প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করে সাজানো বর্ণিল ক্যারিয়ার। শেষ সময়ে এসে কেউ কেউ তুলছেন প্রশ্ন। অধিনায়কের পারফরম্যান্স কি দলে থাকার জন্য যথেষ্ট? প্রশ্নটাকে অস্বাভাবিক বলছেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে সেসব নিয়ে খুব ভাবিতও নন। বাংলাদেশ অধিনায়কের দায়বদ্ধতা নিজের কাছেই। নিজের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েই বিচার করেন সাফল্য-ব্যর্থতার খতিয়ান।

ক্রীড়া প্রতিবেদক ব্রিস্টল থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 June 2019, 05:16 PM
Updated : 10 June 2019, 05:16 PM

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম তিন ম্যাচে এখনও পর্যন্ত নিজের সেরাটা দেখাতে পারেননি বোলার মাশরাফি। প্রথম ম্যাচে ৬ ওভারে দিয়েছিলেন ৪৯ রান। পরের ম্যাচে ৫ ওভারে ৩২। দুই ম্যাচেই ছিলেন উইকেটশূন্য। তৃতীয় ম্যাচে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়ে কাটিয়েছেন উইকেটখরা। ১০ ওভারে রান দিয়েছেন ৬৮।

সামগ্রিক বিচারে খুব খরুচে বোলিং করেছেন, এমন নয়। তবে খুব প্রভাব বিস্তারও করতে পারেননি, তার নিজের মানে পারফরম্যান্স ছিল না সন্তোষজনক।

এই টুর্নামেন্টের আগ পর্যন্ত তার বোলিং নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কোনো সুযোগ সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে কখনোই দেননি। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সফলতম বোলারই শুধু নন, গত ৫ বছরের মানদণ্ডে তিনি বাংলাদেশের সফলতম বোলার। বিবেচনা যদি হয় গত ২ বছর বা ১ বছর, তিনি দ্বিতীয় সফলতম বোলার।

বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩টি করে উইকেট। ফাইনালে উইকেট না পেলেও বোলিং ছিল বেশ মিতব্যয়ী। তবে ফাইনাল ম্যাচেই টান লেগেছিল বাঁ হ্যামস্ট্রিংয়ে। সেটিই তাকে বেশ ভোগাচ্ছে এখনও।

এরপরও দু-একটি ম্যাচের ব্যর্থতায় তুমুল সমালোচনায় হতাশ লাগে কিনা, এই প্রশ্ন উঠল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে। মাশরাফি উত্তর দিলেন নিজের স্বভাবসুলভ ঢঙয়ে।

“হতাশ একেবারেই নই। পেশাদারি জীবনে যখন আপনি সেরাটা দিতে পারবেন না, তখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। সেটা গ্রহণ করেও নিতে হবে। আমি বলতে পারব না কারা কথা বলছে বা কী।”

“প্রথম দুই ম্যাচে উইকেটের আচরণ দাবি করছিল স্পিন বেশি করানো। আমাদের স্পিনাররা ভালো ভূমিকা পালন করেছিল বলেই তাদের বেশি বোলিং করিয়েছি। শেষ ম্যাচে আমার ১০ ওভার দরকার ছিল দলের, করেছি। ৯ ওভার পর্যন্ত আমার সবকিছু ঠিকই ছিল (বোলিং ফিগার ছিল ৯-০-৫০-১)। আর ভালো সময়, খারাপ সময়ের পার্থক্য দিন শেষে একেকজন একেকভাবে প্রকাশ করে।”

অধিনায়ক জানালেন, বাইরের আলোচনা তাকে স্পর্শ করে সামান্যই। সমালোচনার তীরের চেয়ে বেশি যন্ত্রণা পান নিজের কাছে নিজের দাবি মেটাতে না পারলে।

“দিন শেষে আমি আমার কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যাশা করি। এটা সত্য কথা। দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পছন্দ করি। সেটা না হলে আমি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি। তো লোকে কি বলল, সেটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি নিজে কেমন অনুভব করছি। সেরাটা দিতে না পারলে, লোকের কথার চেয়ে আমার খারাপ লাগে নিজের কাছে নিজের আশা পূরণ করতে না পারায়। সেটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”