মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করে বিসিবি। চতুর্থবারের মতো ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্টে খেলার অপেক্ষায় থাকা তামিম মনে করেন, এখন সময় মানসিকভাবে নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার।
“স্কোয়াড প্রস্তুত করা খুব সহজ ব্যাপার নয়। অবশ্যই কিছু খেলোয়াড় আছে যারা খুব ভালো করেও এখানে জায়গা পায়নি।... আমার মনে হয়, এখন কে থাকা উচিত ছিল বা কে থাকলে ভালো হতো, এই আলোচনা না করে দলে থাকা ১৫ ক্রিকেটারের পাশে থাকা জরুরি। দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। অমুকের জায়গায় অমুক থাকলে ভালো হতো, এমন কিছু করলে হবে কি, যারা সুযোগ পেয়েছে তারা মন ছোট করবে। আমরা চার বছর অপেক্ষা করেছি বিশ্বকাপের জন্য। এখন মন ছোট না করে ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করা উচিত।”
“মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় হবে কি, আপনি ৫০ দিন অনুশীলন করেছেন, কিন্তু আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত না, তাহলে ওই ৫০ দিন আপনাকে খুব বেশি সাহায্য করবে না।”
২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলেছিলেন সে সময়ের ১৭ বছর বয়সী তামিম। এবার প্রথমবারের মতো এই টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছেন মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ও আবু জায়েদ। তাদের উচ্ছ্বাস-রোমাঞ্চ বুঝতে পারছেন তমিম।
নিজের জন্য আলাদা কোনো লক্ষ্য ঠিক করছেন না তামিম। দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাটিং ভরসা তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে যেতে চান। বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগে তার ভাবনার কেন্দ্রে আছে নিজের ভুল-ত্রুটির অন্তত ৫-১০ শতাংশ উন্নতি। প্রত্যাশা মিটিয়ে ইংল্যান্ডে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভালোবাসা ফিরিয়ে দেওয়ার ভাবনাও আছে তার।
“২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলছিলাম, তখনও আমার মনে হয়েছে আমি ঢাকায় খেলছি। সেখানে বাংলাদেশের সমর্থক ইংল্যান্ডের চেয়েও বেশি ছিল। আমি নিশ্চিত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডে থাকা বাংলাদেশিরা আসবে এবং সারা বিশ্ব থেকেও আসবে। বাংলাদেশ থেকেও অনেকে যাবে। আশা করি, আমরা সমর্থকদের কিছু ফিরিয়ে দিয়ে পারব।”
গত বিশ্বকাপে কোয়ার্টার-ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। এবারের দলটি গতবারের চেয়েও শক্তিশালী। প্রধান নির্বাচকের মতে, বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী দল এটি। এই দল নিয়ে কত দূর যাওয়া সম্ভব ভাবছেন তামিম?
“কতদূর যাওয়া সম্ভব এটা আমি বলতে পছন্দ করি না। কারণ ১০টা দল বিশ্বকাপে খেলছে। কোনো দল অংশগ্রহণ করার জন্য খেলছে না। সবাই যাচ্ছে জেতার জন্য। আমরাও যাচ্ছি জেতার জন্য। আমার কথা হলো, আমরা পারি বা না পারি, আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে আমরা জিততে পারি। এই বিশ্বাসটা নিয়েই আমাদের যেতে হবে।”
“অবশ্যই ভারত ফেভারিট। ইংল্যান্ডও ফেভারিট। এখানে অনেক টিমই আছে তাদের আপনি সহজে নিতে পারবেন না। অস্ট্রেলিয়া আছে, পাকিস্তান আছে। আরও অনেক দল আছে। এটা নির্ভর করে ওই টুর্নামেন্টে কে দল হিসেবে ছন্দে আছে। ক্রিকেটে যে কোনো কিছুই হতে পারে। এটা অনিশ্চয়তার খেলা। ১৯৯৬ আসরে কেউ আশা করেনি শ্রীলঙ্কা শিরোপা জিতবে। আপনি জানবেন না, ক্রিকেট সবার জন্য কি চমক জমা করে রেখেছে।”