চোখের জলে তাসকিনের ফিরে আসার প্রত্যয়

যেন ৮ বছর আগের সেই দৃশ্যগুলোরই পুনরায় চিত্রায়ন। ২০১১ বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পেয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে ভেঙে পড়েছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ঠিক একইভাবে এবার নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না তাসকিন আহমেদ। তবে চোখের জলেই তাসকিন শোনালেন ফেরার লড়াইয়ে হাল না ছাড়ার প্রত্যয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 April 2019, 11:40 AM
Updated : 16 April 2019, 05:39 PM

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে ২০১১ বিশ্বকাপের দল ঘোষণা যখন হলো, মাশরাফি ছিলেন পাশেই একাডেমি মাঠে। ফিটনেস বিবেচনায় রাখা হলো না মাশরাফিকে, যদিও বিশ্বকাপ তখনও মাসখানেক পরে। দল ঘোষণার পর তার প্রতিক্রিয়া জানতে গেল সংবাদমাধ্যম। মুখ খোলার আগে খুলে গেল তার আবেগের বাঁধন। টপটপ করে গড়িয়ে পড়ল অশ্রু। মাশরাফির সেই কান্না এখনও বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে ট্রাজেডির অধ্যায়গুলোর একটি।

মাশরাফি ততদিনে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছিলেন দেশসেরা পেসার। বিশ্বকাপ ছিল দেশের মাটিতে। তার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে এবার তাসকিন অধ্যায়ের মিল ছিল সামান্যই। তবে ফিটনেস বিবেচনায় বাদ পড়া আর কান্না, দুটি মিলিয়ে দিল দুই পরিস্থিতিকে।

একাডেমির সামনে যখন ক্যামেরা-মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়ালেন তাসকিন, নত হয়ে গেল মাথা। কথা বলতে গিয়ে ধরে এলো কণ্ঠ। নিজেকে সামলে রাখায় প্রবল চেষ্টায় এক পর্যায়ে হার মানলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠেই শোনালেন ফেরার আশাবাদ।

“নাহ…ঠিক আছে.. যেটা ভালো হয়...। সবাই তো ভালোই চায়, খারাপ চায় না কেউ। সামনে আরও সুযোগ আছে। আমি আমার চেষ্টা চালিয়ে যাব। সুপার লিগ খেলব (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের)। ভালো করে খেলার চেষ্টা করব। ঠিক আছে... সবাই দোয়া করবেন... আমি চেষ্টা করব ভালোভাবে।”

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে এমনিতে বিতর্কের অবকাশ খুব বেশি নেই। তবে আলোচনার জায়গা সম্ভবত কেবল তাসকিনকে নিয়েই। পঞ্চম পেসার হিসেবে দলে জায়গা পেয়েছেন এখনও ওয়ানডে না খেলা আবু জায়েদ। নির্বাচকেরা বিবেচনায় রেখেছেন তার সুইং করানোর সামর্থ্য।

তাসকিনকে দলে না রাখার মূল কারণ তার ফিটনেসে সন্তুষ্ট হতে না পারা। এমনিতে কেউ পুরো ফিট না থাকলে তাকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠার কারণ নেই। তবে বিশ্বকাপ এখনও প্রায় দেড় মাস দূরে। ২৩ মে পর্যন্ত সুযোগ আছে দলে যে কোনো পরিবর্তন আনার। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টেও বাজিয়ে দেখার সুযোগ ছিল।

সবকিছু বিবেচনায় তাসকিনকে রাখা যেত কিনা, এই প্রশ্ন উঠল বারবার। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বললেন ফিটনেসের কথা। শোনালেন তাসকিনের জন্য আশার বাণীও।

“আমরা ওকে নিয়ে অনেক দিন থেকেই চিন্তা করছি। সে কিন্তু ২০১৭ সালের ২২ অক্টোবর সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। গত নিউ জিল্যান্ড সফরে ওকে নিয়েছিলাম, আবার ইনজুরিতে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি ফিট নয়।”

“আমরা কিন্তু তাকে স্কিল ফিট হিসেবে চাচ্ছি না। ঘরোয়া ক্রিকেটে একটি ম্যাচ খেলেছে স্কিল ফিট হিসেবে। কিন্তু সে শতভাগ ফিট নয়। তবে এখনও সময় আছে। আয়ারল্যান্ড সফরে আমাদের ১৭ জন যাচ্ছে। এর মধ্যে সে যদি পুরো ফিট হয় ও দরকার হয়, ওকে আমরা ব্যাক আপ হিসেবে রাখব।”