শ্রীলঙ্কার সেরা আটে থেকে আগামী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আশা প্রায় শেষ হয়ে গেল।
Published : 09 Nov 2023, 07:32 PM
শ্রীলঙ্কাকে অল্পে থামিয়ে লক্ষ্যটা নাগালে রাখলেন বোলাররা। ব্যাটসম্যানরা সারলেন বাকিটা। অনায়াস জয়ে বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল নিউ জিল্যান্ড।
প্রথম রাউন্ডে দুই দলের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। বেঙ্গালুরুতে বৃহস্পতিবার লঙ্কানদের ১৭১ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর ১৬০ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে কিউইরা।
আসরে প্রথম চার ম্যাচে জয়ের পর টানা চারটি হারে নিউ জিল্যান্ড। অবশেষে পঞ্চম জয়ের স্বাদ পেল তারা। চার নম্বরে তাদের পয়েন্ট হলো ১০, নেট রান রেট ০.৭৪৩।
সেমি-ফাইনালের লাইনআপের চার নম্বর দল হওয়ার লড়াইয়ে নিউ জিল্যান্ডের সঙ্গে আছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। এই দুই দলের জন্য কাজটা অবশ্য প্রায় অসম্ভবের কাছাকাছি।
নেট রান রেটে নিউ জিল্যান্ডকে ছাড়িয়ে যেতে শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের ইংল্যান্ডকে হারাতে হবে ২৮৭ রানে। আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তানের জিততে হবে ৪৩৮ রানে! রান তাড়া করতে হলে পাকিস্তানের জন্য কাজটা তো একরকম অসম্ভব। লক্ষ্য যদি হয় ১৫০ রানের, বাবর আজমদের জিততে হবে ৩.৪ ওভারে!
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে শ্রীলঙ্কার সেরা আটে থেকে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার আশা প্রায় শেষ হয়ে গেল। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে নবম স্থানে। সমান পয়েন্ট নিয়ে সাত ও আটে থাকা ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ যদি শেষ ম্যাচে অনেক বড় ব্যবধানে হারে এবং দশে থাকা নেদারল্যান্ডস ভারতের কাছে হারে, তাহলেই কেবল সুযোগ তৈরি হতে পারে শ্রীলঙ্কার।
নিউ জিল্যান্ডের জয়ের নায়ক এ দিন ট্রেন্ট বোল্ট। ১০ ওভারে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা তিনিই। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২টি করে শিকার ধরেন লকি ফার্গুসন, মিচেল স্যান্টনার ও রাচিন রবীন্দ্র।
রবীন্দ্র পরে আলো ছড়ান ব্যাট হাতেও। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় নিউ জিল্যান্ড উড়ন্ত শুরু পায় রবীন্দ্র ও ডেভন কনওয়ের ৭৪ বলে ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে।
দুজনই পঞ্চাশের কাছে গিয়ে ফেরেন পরপর দুই ওভারে। কনওয়ে ৪২ বলে ৯ চারে করেন ৪৫। রবীন্দ্রর ৩৪ বলে ৪২ রানের ইনিংস গড়া ৩টি করে ছক্কা ও চারে।
কেন উইলিয়ামসন ও মার্ক চ্যাপম্যান এরপর ভালো করতে পারেননি। ৩১ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৩ রানের ইনিংসে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান ড্যারিল মিচেল।
এম চিন্নাস্বামি স্টেডিয়ামে এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ওভারেই হারায় পাথুম নিসানকাকে। নতুন বলেই কুসাল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাউইক্রামাকে ফিরিয়ে বিশ্বকাপে ৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন বোল্ট।
আরও আগে কুসাল পেরেরা ফিরতে পারতেন শূন্য রানে। তার ক্যাচ ফেলেন টম ল্যাথাম। জীবন পেয়ে ২২ বলে ফিফটি করেন পেরেরা। ২৮ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
চারিথ আসালাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, ধানাঞ্জয়া ডি সিলভারা দায়িত্ব নিতে পারেননি এ দিন। ১২৮ রানে ৯ উইকেট হারানোর পর মাহিশ থিকশানা (৯১ বলে ৩৮*) ও দিলশান মাদুশঙ্কার (৪৮ বলে ১৯) ৪৩ রানের শেষ উইকেট জুটিতে দেড়শ ছাড়াতে পারে লঙ্কানরা। লড়াইয়ের জন্য তা যথেষ্ট হলো না মোটেও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা:৪৬.৪ ওভারে ১৭১ (নিসানকা ২, পেরেরা ৫১, মেন্ডিস ৬, সামারাউইক্রামা ১, আসালাঙ্কা ৮, ম্যাথিউস ১৫, ধানাঞ্জয়া ১৯, চামিকা ৬, থিকশানা ৩৮*, বোল্ট ১০-৩-৩৭-৩, সাউদি ৮-০-৫২-১, ফার্গুসন ১০-২-৩৫-২, স্যান্টনার ১০-২-২২-২, রবীন্দ্র ৭.৪-০-২১-২, ফিলিপস ১-০-৩-০)
নিউ জিল্যান্ড: ২৩.২ ওভারে ১৭২/৫ (কনওয়ে ৪৫, রবীন্দ্র ৪২, উইলিয়ামসন ১৪, মিচেল ৪৩, চ্যাপম্যান ৭, ফিলিপস ১৭*, ল্যাথাম ২*; মাদুশঙ্কা ৬.২-০-৫৮-০, থিকশানা ৭-০-৪৩-১, ধানাঞ্জয়া ৪-১-২০-১, ম্যাথিউস ৪-০-২৯-২)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ট্রেন্ট বোল্ট