
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দেয়ায় ইতোমধ্যে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে আশরাফুলকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি জাতির কাছে, আমার ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইছি। যা করেছি তার জন্য আমি ভীষণ লজ্জিত।”
দেশের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, “আশরাফুল স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তাই এই ব্যাপারে কোনো প্রমাণের দরকার নেই। তাকে আমরা শাস্তি দিচ্ছি না। কিন্তু আসন্ন কোনো খেলায় তার অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।”
বিপিএলে ম্যাচ পাতানো নিয়ে আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ও নিরাপত্তা ইউনিটের (আকসু) তদন্ত প্রতিবেদন এক সপ্তাহের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
এর আগে বোর্ড সভাপতি জানান, বিসিবির দুর্নীতি বিরোধী নীতিমালায় ম্যাচ পাতানোর মতো অপরাধে ৬ মাস থেকে আজীবন নিষেধাজ্ঞার বিধান রয়েছে।
বিসিবির সংবাদ সম্মেলনের ঘন্টা দুয়েক পরে আশরাফুলের বাড়িতে সংবাদিকরা জড়ো হলে তিনি বলেন, “জাতির প্রতি এমন অবিচার করা আমার উচিৎ হয় নি। নিজেকে আমার অপরাধী মনে হচ্ছে।”
“কখনো কখনো আমার আচরণ হয়ত সঠিক ছিল না। কিন্তু প্রথম সুযোগেই আকসুকে আমি সত্য জানিয়েছি। তাদের এক বর্ণও মিথ্যে বলিনি,” যোগ করে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের এই ব্যাটসম্যান।
আশরাফুল বলেন, “ক্রিকেটের উন্নয়নে আইসিসিকে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি। এ ব্যাপারে তাদের আমি সবকিছু খুলে বলেছি। এক যুগের ক্যারিয়ারে ছোটখাটো কিছু ভুল করেছি, সে সম্পর্কেও বলেছি।”
২০০৪ সালে ভারতীয় বাজিকর জাভেদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ায় তিনি সাবেক তিন ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আশরাফুল।
তিনি বলেন, বলেন, “এই বিষয়ে তদন্ত চলছে তাই কিছু বলা ঠিক হবে না। ঠিক কোন পরিস্থিতিতে আমি এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছি সেটা এখন বুঝিয়ে বলতে পারবো না। এটা এখন কাউকেই বোঝানো যাবে না। যে পড়ে কেবল সেই বুঝতে পারবে।”
২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় আশরাফুলের। ৬১ টেস্টে ৬টি শতকসহ ২৪ গড়ে ২৭৩৭ রান করেন আশরাফুল। গত মার্চেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৯০ রানের অনবদ্য ইনিংস। দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ টেস্ট শতকের রেকর্ড তারই।
একই বছর এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয় তার। ১৭৭ ম্যাচে ৩টি শতকসহ ২২.২৩ গড়ে করেন ৩৪৬৮ রান। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেকের পর খেলেছেন ২৩ ম্যাচ। এতে দুটি অর্ধশতকসহ ১৯.৫৬ গড়ে তার রান ৪৫০।