পান্তের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এখনও পর্যন্ত এটি এক প্রবল রহস্য। তার ব্যাটিংয়ের ধরন, আগ্রাসী মানসিকতা, স্কিল ও পেশির জোর, বোলারদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার সামর্থ্য, সবকিছুই বলে দেয়, সীমিত ওভারে তিনি হতে পারেন বিধ্বংসী এক ব্যাটসম্যান। অথচ জাতীয় দলের জার্সিতে তার ওয়ানডে রেকর্ড এখনও সাদামাটা, টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স একদমই হতাশাজনক।
কিন্তু দারুণ উজ্জ্বল তিনি টেস্টে। ৩১ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারেই এমন কিছু ইনিংস তিনি খেলে ফেলেছেন, যেগুলো জায়গা পেয়ে গেছে ভারতের টেস্ট ইতিহাসের সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যে। বয়স তার মোটে ২৪। অথচ টেস্টে ভারতের সর্বকালের সেরা কিপার-ব্যাটসম্যান তিনিই কিনা, এই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে এখনই।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত এজবাস্টন টেস্টেই দলের বিপর্যয়ের মধ্যে তিনি খেলেন ১১১ বলে ১৪৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসেও করেন ফিফটি।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। পান্তের জন্য যা এই সংস্করণে নিজেকে মেলে ধরার আরেকটি সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ। আইপিএলে তার রেকর্ড যথেষ্ট ভালো, কিন্তু ভারতের হয়ে তিনি বিবর্ণ।
৩১ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরিসহ পান্তের ব্যাটিং গড় ৪৩.৩২। অথচ ওয়ানডেতে ২৪ মাচ খেলে গড় ৩২.৫০, টি-টোয়েন্টিতে ৪৮ ম্যাচে ২৩.১৫।
টেস্টে আগে ছয়-সাতে ব্যাট করলেও এখন পান্তকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে পাঁচে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতেও তাকে চার-পাঁচে খেলানো হয়।
ভারতের স্পোর্টস টুডে-কে গাভাস্কার বললেন, লাল ও সাদা বলে পান্তের ব্যাটিং পজিশন ভিন্ন করে দেখা যেতেই পারে।
“এটা মোটেও খারাপ ভাবনা নয় (পান্তকে ওপেন করানো)। সাদা বলের ক্রিকেটে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট অস্ট্রেলিয়ার জন্য কী করেছে, ভেবে দেখুন! টেস্টে সে ছয়-সাতে ব্যাট করেছে, কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে ওপেন করেছে এবং বিধ্বংসী এক ব্যাটসম্যান ছিল। পান্তও একইরকম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে ওপেনিংয়ে, আরও বেশি ওভার খেলার সুযোগ সে পাবে।”
ইনিংস শুরু করলে পান্তের মানসিকতায় পরিবর্তন আসবে বলেও মনে করেন গাভাস্কার, যা তাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে পারে।
“আমরা তাকে নিয়ে কথা বলছি ফিনিশার হিসেবে (সীমিত ওভারে)। কিন্তু সে মাঠে নেমেই সরাসরি মারতে শুরু করে এবং দ্রুত আউট হয়ে যায়। ওপেন করলে তার ভাবনায় এটা থাকবে যে শুরু থেকেই তেড়েফুঁড়ে খেলতে হবে না। বলের গতি ও মুভমেন্টের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কিছুটা সময় পাওয়া যাবে।”
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পান্ত একবারই ওপেন করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ওয়ানডে ম্যাচটিতে তিনি ছিলেন একদমই অচেনা। ১৮ রান করেন ৩৪ বল খেলে। পরের ম্যাচে পাঁচে নেমে করেন ৫৪ বলে ৫৬।
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে ওপেন না করলেও ৬টি ম্যাচে তিনি তিনে ব্যাট করেছেন। ফিফটি না পেলেও সেখানে তিন ম্যাচে তার ইনিংস আছে ৩৫ বলে ৩৮, ২৮ বলে অপরাজিত ৪০ ও ১৩ বলে অপরাজিত ২৭ রানের।