এলোমেলো বোলিং, দিশাহীন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বড় হার

রভম্যান পাওয়েল পাল্টা আক্রমণ শুরু করতেই যেন হারিয়ে গেল সব নিয়ন্ত্রণ। কোথায় বল ফেলবেন তাই যেন ভেবে পেলেন না বোলাররা। তাতে বাংলাদেশ পেল রেকর্ড গড়ার চ্যালেঞ্জ। মাহমুদউল্লাহর দল যেতে পারল না এর ধারে কাছেও। এলোমেলো বোলিংয়ের পর বিবর্ণ ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হারল বড় ব্যবধানে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2022, 05:03 PM
Updated : 3 July 2022, 09:16 PM

বাংলাদেশের ৩৫ রানের হার

জিততে হলে গড়তে হতো রেকর্ড, ক‍্যারিবিয়ানে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়। গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। তবে এর বাস্তবিক কোনো সম্ভাবনা কখনও গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর চেষ্টা করেছিলেন আফিফ হোসেন ও সাকিব আল হাসান। তবে তারা কেবল পরাজয়ের ব‍্যবধানই কমাতে পেরেছেন কিছুটা, সত‍্যিকারের সম্ভাবনা জাগাতে পারেননি। 

দুই ক‍্যারিবিয়ান স্পিনার আকিল হোসেন ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র মিলিয়ে ৮ ওভারে ৫০ রান দিয়ে নিয়েছেন ১টি উইকেট। ম‍্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় যা দুর্দান্ত। আর শুরুতে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেওয়ার কাজটা করেছিলেন পেসাররা।

শেষ ওভারে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়ায় কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন মোসাদ্দেক হোসেন।

৫২ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। তবে তাকে ঘিরে সেভাবে ইনিংস গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ।

প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের দুই হাজার রান ও একশ উইকেটের ডাবল গড়ার দিনে মূলত ব‍্যবধান গড়ে দেন রভম‍্যান পাওয়েল। তার শেষের ঝড়েরই জবাব খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ।

পাঁচ বছর পর ডমিনিকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার ম‍্যাচ ১৩ ওভার হয়েই ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। পরের ম‍্যাচে ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম‍্যাচ জেতার পর দিল ল‍্যাপ অব অনার। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (কিং ৫৭, মেয়ার্স ১৭, ব্রুকস ০, পুরান ৩৪, পাওয়েল ৬১*, শেফার্ড ৩, স্মিথ ১১* ; তাসকিন ৩-০-৪৬-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৬-০, সাকিব ৪-০-৩৮-১, শরিফুল ৪-০-৪০-২, মোসাদ্দেক ১-১-০-০)

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৮/৬ (এনামুল ৩, লিটন ৫, সাকিব ৬৮*, মাহমুদউল্লাহ ১১, আফিফ ৩৪, সোহান ৭, মোসাদ্দেক ১৫, মেহেদি ৫*; আকিল ৪-০-২৭-১, ম‍্যাককয় ৪-০-৩৭-২, স্মিথ ৩-০-৩২-১, শেফার্ড ৪-০-২৮-২, পল ১-০-৯-০, ওয়ালশ জুনিয়র ৪-০-২৩-০)

২ হাজারে সাকিব

ফিফটির পর ক‍্যাচ দিয়েও বেঁচে যান সাকিব। হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের ব‍্যর্থতায় পেয়ে যান চার। এরপর ওবেড ম‍্যাককয়কে ওড়ান ছক্কায়। এই শটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব‍্যাটসম‍্যান হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব।

সাকিবের পঞ্চাশ

এক প্রান্ত আগলে রাখা সাকিব আল হাসান ম‍্যাচের শেষ পর্যায়ে এসে পেলেন ফিফটির দেখা, ৪৫ বলে। বাংলাদেশের সামনে যে লক্ষ‍্য এর বিবেচনায় বেশ মন্থর। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে তিনিই যতটা সম্ভব এগিয়ে নিচ্ছেন দলকে।

পঞ্চাশ ছোঁয়ার পথে সাকিবের ব‍্যাট থেকে এসেছে চারটি চার ও একটি ছক্কা।

ছক্কায় চেষ্টায় ‘অক্কা’ সোহান

ওভার প্রতি প্রয়োজন ১৮ রান। প্রতি বলে প্রয়োজন প্রায় ৩ করে। এমন সময়েও কোনো বাউন্ডারি আসছে না ব‍্যাট থেকে। তাই মরিয়া চেষ্টায় আকিল হোসেনের উপর চড়াও হতে চাইলেন নুরুল হাসান সোহান। তবে ছক্কার চেষ্টায় তিনি ধরা পড়লেন সীমানায়।

আগের ম‍্যাচে ক‍্যামিও ইনিংস খেলা কিপার-ব‍্যাটসম‍্যান এবার ১৩ বলে করেন ৭ রান।

১৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ৯৯। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী মোসাদ্দেক হোসেন।

আফিফের বিদায়ে ভাঙল জুটি

আক্রমণে ফিরে রোমারিও শেফার্ড ভাঙলেন পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি। বিদায় করে দিলেন দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা আফিফ হোসেনকে।

পেসার শেফার্ডের বল সরে গিয়ে ফাইন লেগ দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন আফিফ। ঠিক মতো পারেননি বাঁহাতি এই ব‍্যাটসম‍্যান। গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ে নিকোলাস পুরানের গ্লাভসে। ভাঙে ৪৪ বল স্থায়ী ৫৫ রানের জুটি।

২৭ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রান করেন আফিফ।

১১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৮০। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী নুরুল হাসান সোহান।

সাকিব-আফিফের ব‍্যাটে পঞ্চাশ

দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে কক্ষপথে ফেরাতে লড়াই করছেন সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন। দুই বাঁহাতি ব‍্যাটসম‍্যান উপহার দিয়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি, ৩৭ বলে। জুটিতে সাকিবের অবদান ১৫ বলে ১৭। আফিফের অবদান ২২ বলে ৩১।

পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট

বড় রান তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ। দ্রুত ৩ উইকেট হারানো দলকে টানার চেষ্টা করছেন সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন।

দ্বিতীয় ওভারে পরপর দুই বলে লিটন দাস ও এনামুল হককে বিদায় করেন ওবেড ম‍্যাককয়। পরের ওভারে মাহমুদউল্লাহকে থামান ওডিন স্মিথ।

এরপর থেকে জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন সাকিব ও আফিফ।

পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রান করেছে বাংলাদেশ। ৯ বলে আফিফের রান ১১, সাকিব রান ১২ বলে ১১।

বিপদ বাড়িয়ে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ

পুল করে ওডিন স্মিথকে ছক্কায় ওড়ানোর পর পয়েন্ট দিয়ে চার মারলেন মাহমুদউল্লাহ। আভাস দিলেন চাপে পড়া দলকে টেনে তোলার। কিন্তু সেই ওভারেই মিড অফে ধরা পড়লেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। 

বেরিয়ে এসে স্মিথের ওপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু পার করতে পারেননি ওবেড ম‍্যাককয়কে। আগের ওভারে জোড়া উইকেট নেওয়া এই পেসার নেন ক‍্যাচ।  

৭ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে মাহমুদউল্লাহ করেন ১১ রান। 

৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২৩। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী আফিফ হোসেন।

পরপর দুই বলে লিটন-এনামুলের বিদায়

মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে চমৎকার চারে শুরু করেছিলেন লিটন দাস। তবে নিজের ইনিংস বড় করতে পারলেন না এই ডানহাতি ব‍্যাটসম‍্যান। আরেক ওপেনার এনামুল হকও ফিরলেন দ্রুত।

আকিল হোসেনের প্রথম ওভার থেকে আসে ৮ রান। দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসে পরপর দুই বলে লিটন দাস ও এনামুল হককে বিদায় করেন ওবেড ম‍্যাককয়।

মিডল স্টাম্পে থাকা লেংথ বল খুব একটা জোরের সঙ্গে খেলেননি লিটন। কিন্তু তার ফ্লিকে বল চলে যায় ডিপ ব‍্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ সীমানায়, ফিল্ডারের হাতে। সহজেই মুঠোয় জমান শামার ব্রুকস।

পরের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। ড্রাইভ করার চেষ্টায় সেটা স্টাম্পে টেনে আনেন এনামুল।

৪ বলে লিটন করেন ৫, সমান বলে এনামুলের রান ৩

২ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেট হারিয়ে ১০। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী ম‍্যাককয়ের হ‍্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেওয়া অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

রভম‍্যান-ঝড়ে ১৯৪ রানের লক্ষ‍্য পেল বাংলাদেশ

প্রথম ৪ ওভারের মধ‍্যে দুটি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল দারুণ। তবে ওপেনার ব্র‍্যান্ডন কিংয়ের ফিফটিতে ঘুরে দাঁড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষে রভম‍্যান পাওয়েলের খুনে ইনিংসে বাংলাদেশকে দেয় বড় লক্ষ‍্য।

ছয় ছক্কা ও দুই চারে ২৮ বলে পাওয়েলের ৬১ রানের ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে।

২০তম ওভারের প্রথম বলে রোমারিও শেফার্ডকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। ক‍্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার আগের ওভারে লিটন দাসকে খুব কঠিন একটা ক‍্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে কাহে লাগাতে পারেননি সুযোগ। শরিফুলের বলে ধরা পড়েন শর্ট থার্ড ম‍্যানে।

পরের চার থেকে ওডিন স্মিথ নেন ১১ রান। শেষ বলে স্ট্রাইক পেয়ে ছক্কায় ইনিংস শেষ করেন রভম‍্যান।

নিজের একমাত্র ওভারে উইকেট-মেডেন নিলেও বিস্ময়করভাবে এরপর আর বোলিং পাননি মোসাদ্দেক হোসেন। শেখ মেহেদি হাসান ছাড়া একাধিক ওভার করা অন‍্য সব বোলারই ওভার প্রতি রান দিয়েছেন নয়ের বেশি করে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৯৩/৫ (কিং ৫৭, মেয়ার্স ১৭, ব্রুকস ০, পুরান ৩৪, পাওয়েল ৬১*, শেফার্ড ৩, স্মিথ ১১* ; তাসকিন ৩-০-৪৬-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৬-০, সাকিব ৪-০-৩৮-১, শরিফুল ৪-০-৪০-২, মোসাদ্দেক ১-১-০-০)

কিংয়ের বিদায়, রভম‍্যানের ঝড়ো ফিফটি

অন‍্য প্রান্তে এমন তাণ্ডব শুরু করেছেন রভম‍্যান পাওয়াল যে একরতম দর্শকই হয়ে গেছেন ব্র‍্যান্ডন কিং। স্ট্রাইক পেয়ে এই ওপেনার চেষ্টা করলেন শরিফুল ইসলামকে ছক্কায় ওড়ানোর। তাতে সফল হলেন না কিং, সীমানায় চমৎকার ক‍্যাচ নিলেন সাকিব আল হাসান।

কিংয়ের বিদায়ে ভাঙে ২৮ বল স্থায়ী ৬৩ রানের জুটি।

ক‍্যারিবিয়ান ওপেনার ৪৩ বলে সাত চার ও এক ছক্কায় করেন ৫৭ রান।

পরের বলেই সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন রভম‍্যান। মাত্র ২০ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করার সময় তার ব‍্যাট থেকে আসে পাঁচ ছক্কা ও দুই চার।

সাকিবের ওপর চড়াও রভম‍্যান পাওয়েল

আগের তিন ওভারে কেবল একটি বাউন্ডারি হজম করেছিলেন সাকিব আল হাসান। দিয়েছিলেন মোটে ১৫ রান। এক ওভারেই তার বোলিং হয়ে গেল খরুচে।

বাঁহাতি স্পিনারের করা ষোড়শ ওভারে ২৩ রান নেন রভম‍্যান পাওয়েল।  ডিপ মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা হাঁকানোর পর বেরিয়ে এসে মারেন চার। পরের দুই বল ওড়ান ছক্কায়। পঞ্চম বলে নেন এক রান। ওভারের শেষ বলে রান নিতে পারেননি ব্র‍্যান্ডন কিং।

প্রথম ৯ বলে ৭ রান করা পাওয়েলের রান ওভার শেষে ১৪ বলে ৩০।

সাকিব ৪ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।

কিংয়ের ফিফটি

নিজের তৃতীয় ওভারে এসে প্রথম বাউন্ডারি হজম করলেন সাকিব আল হাসান। সেই চারেই ৩৬ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করলেন ব্র‍্যান্ডন কিং।

দলকে এগিয়ে নেওয়া এই ওপেনার ফিফটি করার পথে মারেন ৬টি চার ও ১ ছক্কা।

পুরানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন মোসাদ্দেক

বোলিংয়ে এসেই উইকেট পেলেন মোসাদ্দেক হোসেন। নিকোলাস পুরানকে এলবিডব্লিউ করে ভাঙলেন দ্রুত এগোনো জুটি।

পেসাররা তেমন ভূমিকা রাখতে পারছেন না। তাই মুনিম শাহরিয়ারের চোটে সুযোগ পাওয়া মোসাদ্দেককে ত্রয়োদশ ওভারে আক্রমণে এনেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের প্রত‍্যাশার চেয়েও হয়তো ভালো করে মোসাদ্দেক নেন উইকেট-মেডেন।

প্রথম বলে স্টাম্পড হতে হতে বেঁচে যান পুরান। পরের বলটি খেলেন ডট। এর জন‍্যই হয়তো অস্থির হয়ে গেছিলেন। তৃতীয় বলটি রিভার্স সুইপের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব‍্যাটে খেলতে পারেননি। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন ক‍্যারিবিয়ান অধিনায়ক।

তবে পাল্টায়নি সিদ্ধান্ত। ভাঙে ৫৬ বল স্থায়ী ৭৪ রানের জুটি।

৩০ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রান করেন পুরান।

১৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩ উইকেটে ১০০। ম‍্যাচে এটাই প্রথম মেডেন ওভার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের একশ

সপ্তম ওভারে পঞ্চাশ ছুঁয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান, তিন অঙ্কে গেল দ্বাদশ ওভারের শেষ বলে। প্রথম ১২ ওভারে কেবল দুই ওভার বাউন্ডারি ছাড়া করতে পারল বাংলাদেশ। দুটিই করেন সাকিব আল হাসান।

১২ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২ উইকেটে ১০০। ২৭ ভের ৩৪ রানে খেলছেন নিকোলাস পুরান। ৩৪ বলে ওপেনার ব্র‍্যান্ডন কিংয়ের রান ৪৫।

কিং-পুরানের জুটিতে পঞ্চাশ

দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টানছেন ব্র‍্যান্ডন কিং ও নিকোলাস পুরান। তৃতীয় উইকেটে দুই জনে গড়েছেন পঞ্চাশ রানের জুটি, ৩৪ বলে।

হতে হতেও ক‍্যাচ হলো না

মুস্তাফিজুর রহমানের বলে সীমানায় ক‍্যাচের মতো দিয়েছিলেন ব্র‍্যান্ডন কিং। মুঠোয় নিয়েছিলেনও লিটন দাস। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সীমানা পেরিয়ে যাচ্ছেন বুঝতে পেরে শেষ মুহূর্তে ভেতর দিকে ছুঁড়ে দেন বল। নষ্ট হয় কঠিন একটি সুযোগ।

সে সময় ২৭ রানে ছিলেন কিং।

৯ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২ উইকেটে ৭৫।

পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট

পাঁচ বোলারকে দিয়ে প্রথম ছয় ওভার করালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। সাকিব আল হাসান ছাড়া বাকি সবাই হজম করলেন বাউন্ডারি।

পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শুরুতে ঝড় তোলার আভাস দিয়েছিলেন কাইল মেয়ার্স। দ্বিতীয় ওভারেই তাকে ফিরিয়ে দেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান। পরে সাকিব এসে বিদায় করেন শামার ব্রুকসকে।

এই ম‍্যাচে স্পিনার কমিয়ে পেসার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। তাদের বোলিংয়েই রান আসছে দ্রুত।

এসেই সাকিবের আঘাত

অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসানের পর আঘাত হানলেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান। তাকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ক‍্যাচ দিয়ে বিদায় নিলেন শামার ব্রুকস।

সাকিবের প্রথম বল কাভারে খেলে রান নিতে পারেননি ব্রুকস। পরের বলটি স্লগ সুইপ করে ওড়াতে চেয়েছিলেন ছক্কায়। মাঝ ব‍্যাটে খেলতে পারেননি। শর্ট মিডউইকেটে ক‍্যাচ নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।

সেই ওভার থেকে আসে কেবল ১ রান। এটাই ম‍্যাচের প্রথম বাউন্ডারি ছাড়া ওভার।

৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২ উইকেটে ২৭। ক্রিজে ব্রান্ডন কিংয়ের সঙ্গী নিকোলাস পুরান।

বিপজ্জনক মেয়ার্সকে ফেরালেন মেহেদি

টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে ভোগানো কাইল মেয়ার্স ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন। তবে তাকে দ্রুতই ফিরিয়ে দিলেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদি হাসান।

মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে তাসকিন আহমেদকে চার মারেন মেয়ার্স। পরে ওড়ান ছক্কায়। মেহেদিকে চার দিয়ে স্বাগত জানান বাঁহাতি এই ব‍্যাটসম‍্যান। তবে পরের তিনটি বল তাকে ডট খেলান মেহেদি।

সে কারণেই হয়তো অফ স্পিনারকে তেড়েফুড়ে স্লগ সুইপ করতে চেয়েছিলেন মেয়ার্স। কিন্তু বলের লাইন মিস করে হয়ে যান বোল্ড। ৯ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ক‍্যারিবিয়ান ওপেনার করেন ১৭।

২ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ১ উইকেটে ১৮। ক্রিজে ব্রান্ডন কিংয়ের সঙ্গী শামার ব্রুকস।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে ১ পরিবর্তন

ডেভন টমাসের চোটে একটি পরিবর্তন এনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগের ম‍্যাচে কিপিং করা টমাসের জায়গায় দলে ফিরেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার কিমো পল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল: নিকোলাস পুরান (অধিনায়ক), রভম্যান পাওয়েল (সহ-অধিনায়ক), শামার ব্রুকস, আকিল হোসেন, ব্র্যান্ডন কিং, কাইল মেয়ার্স, ওবেড ম্যাককয়, রোমারিও শেফার্ড, ওডিন স্মিথ, কিমো পল, হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র।

বাংলাদেশ দলে ২ পরিবর্তন

বাংলাদেশ দলে এসেছে দুটি পরিবর্তন। এর একটি বাধ‍্য হয়ে। পিঠের চোটের জন‍্য দলে নেই ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। তার জায়গায় এসেছেন মিডল অর্ডার ব‍্যাটসম‍্যান মোসাদ্দেক হোসেন।

সফরকারীরা কৌশলগত একটি পরিবর্তনও এনেছে। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের জায়গায় দলে এসেছেন গতিময় পেসার তাসকিন আহমেদ। আগের ম‍্যাচে তিন স্পিনার নিয়ে খেলা বাংলাদেশ এই ম‍্যাচে খেলছে তিন পেসার নিয়ে।  

বাংলাদেশ দল: মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), লিটন দাস, এনামুল হক, সাকিব আল হাসান, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, শেখ মেহেদি হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ।

টস হেরে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

আগের ম‍্যাচে লম্বা সময় উইকেট ছিল কাভার দিয়ে ঢাকা। তাই টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন নিকোলাস পুরান। আবার টস জিতলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। এবার নিলেন ব‍্যাটিং।

উন্নতির আশায় বাংলাদেশ

বৃষ্টিতে পরিত‍্যক্ত হয়ে যাওয়া প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ব‍্যাটিংয়ে ভালো শুরুটা কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রাপ্তি কেবল সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের দুটি ক‍্যামিও ইনিংস। সেখানে ব‍্যর্থতার জন‍্য কোনো অজুহাত দাঁড় করাননি রাসেল ডমিঙ্গো। ব‍্যর্থতা মেনে নিয়ে উন্নতির আশায় বাংলাদেশ কোচ।

বাংলাদেশ সময় রোববার রাত সাড়ে ১১টায় শুরু হবে প্রথম টি-টোয়েন্টি।

বিপিএলে আলো ছড়িয়ে জাতীয় দলে আসা মুনিম শাহরিয়ার প্রথম তিন ম‍্যাচে তেমন কিছু করতে পারেননি। তবে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নিশ্চিত করেছেন, এই তরুণসহ সবাইকেই যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হবে। বাংলাদেশের হয়ে দুই টি-টোয়েন্টির মাঝে সময় ও ম‍্যাচের দিক থেকে সবচেয়ে লম্বা বিরতির রেকর্ড গড়া এনামুল হক আগের ম‍্যাচে কিছু ঝলক দেখালেও বড় করতে পারেননি ইনিংস। তার সামনে আরেকটি সুযোগ নিজেকে প্রমাণ করার।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব‍্যর্থতায় মূল দায় ব‍্যাটিংয়েরই। প্রথম ম‍্যাচেও দেখা গেছে সেই চিত্র। সেখান থেকে দলকে বের করে নিয়ে আসার চ‍্যালেঞ্জ সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, সোহানদের সামনে।