গত বছর স্থগিত হওয়া সিরিজের পঞ্চম টেস্ট ম্যাচটি নতুন সূচিতে মাঠে গড়াল ২৯৪ দিন পর। বৃষ্টিবিঘ্নিত প্রথম দিনে খেলা হলো ৭৩ ওভার। ৫ উইকেটে ৯৮ রানের নড়বড়ে অবস্থান থেকে ভারত শুক্রবার দিন শেষ করল ৭ উইকেটে ৩৩৮ রানে! ওভারপ্রতি রান ৪.৬৩ করে।
উইকেটকিপার হিসেবে ভারতের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে ১১১ বলে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলেন পান্ত। যেখানে ১৯টি চারের পাশে ছক্কা ৪টি। জাদেজা অপরাজিত আছেন ১৬৩ বলে ৮৩ রানে।
দুজনের জুটির রান ২৩৯ বলে ২২২, দুই দলের মধ্যকার টেস্টে ষষ্ঠ উইকেটে যা সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ডও ছিল ভারতের, ২০১৮ সালে দা ওভালে লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ২০৪ রানের সেই জুটিতেও ছিলেন পান্ত।
আড়াই বছর ধরে কোনো ধরনের ক্রিকেটেই সেঞ্চুরি না পাওয়া বিরাট কোহলি ব্যর্থ এদিনও। সাবেক ভারত অধিনায়ক করেন স্রেফ ১১ রান।
গত বছর ভারত এই সিরিজের প্রথম চার টেস্ট খেলেছিল কোহলির নেতৃত্বে। সফরকারী দলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় স্থগিত করা হয়েছিল পঞ্চম টেস্ট।
মেঘলা আকাশের নিচে শুরুতে উইকেট থেকে সহায়তা পান পেসাররা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতের শুরুটা ভালো হয়নি। সপ্তম ওভারে তারা হারায় শুবমান গিলকে। অ্যান্ডারসনের শরীর থেকে বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন ডানহাতি ওপেনার।
কাউন্টি ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে টেস্ট দলে ফেরা চেতেশ্বর পুজারা এ দিন ইনিংস ওপেন করতে নামেন রোহিতের অনুপস্থিতিতে। হনুমা বিহারিকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন তিনি।
এরপরই আবার অ্যান্ডারসনের আঘাত। অভিজ্ঞ পেসারের লাফিয়ে ওঠা বলে স্লিপে জ্যাক ক্রলির হাতে ধরা পড়েন পুজারা (৪৬ বলে ১৩)। ভাঙে ৭১ বল স্থায়ী ১৯ রানের জুটি।
আগের ওভারে বিদায় হতে পারত বিহারিরও। পটসের বলে সেবার স্লিপে তার ক্যাচ নিতে পারেননি ক্রলি। সুযোগটা যদিও কাজে লাগাতে পারেননি বিহারি।
বৃষ্টির কারণে লাঞ্চ বিরতি নেওয়া হয়েছিল আগেভাগে। বিরতির পরপর সেই পটসের বলেই বিহারি এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন ২০ রানে।
পটসের পরের ওভারেই ফিরে যান কোহলি। অফ স্টাম্পের বাইরের বল শেষ মুহূর্তে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বল তার ব্যাটে লেগে এলোমেলো করে দেয় স্টাম্প।
কিপার স্যাম বিলিংসের এক হাতে নেওয়া দুর্দান্ত ক্যাচে অ্যান্ডারসনের তৃতীয় শিকার হয়ে যখন ফিরলেন শ্রেয়াস আইয়ার, একশর আগে ৫ উইকেট হারিয়ে খুব বিপদে ভারত।
পরের পঞ্চাশ করতে ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যানের লাগে আর ৩৮ বল। ৮৮ থেকে লিচকে পরপর দুটি চার মেরে পা রাখেন তিনি নম্বইয়ের ঘরে। পরের ওভারে ৯৮ থেকে ডাবল নিয়ে ৮৯ বলে স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক।
ভারতের কিপার হিসেবে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এতদিন ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির। ২০০৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন ৯৩ বলে।
পঞ্চম সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পরও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যান পান্ত। লিচের চার বলের মধ্যে মারেন দুটি ছক্কা ও একটি চার। জো রুটকে আরেকটি ছক্কার পরই অবশ্য অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় তার দুর্দান্ত ইনিংস।
শার্দুল ঠাকুরকে এরপর দ্রুত বিদায় করে দেন ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস। ১০৯ বলে ফিফটি করা জাদেজা দিনের বাকিটা কাটিয়ে দেন মোহাম্মদ শামির সঙ্গে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ১ম ইনিংস: ৭৩ ওভারে ৩৩৮/৭ (শুবমান ১৭, পুজারা ১৩, বিহারি ২০, কোহলি ১১, পান্ত ১৪৬, শ্রেয়াস ১৫, জাদেজা ৮৩*, শার্দুল ১, শামি ০*; অ্যান্ডারসন ১৯-৪-৫২-৩, ব্রড ১৫-২-৫৩-০, পটস ১৭-১-৮৫-২, লিচ ৯-০-৭১-০, স্টোকস ১০-০-৩৪-১, রুট ৩-০-২৩-১)