বোলাররা ধৈর্য হারানোয় হতাশ বাংলাদেশ কোচ

শুরু আর শেষে কত তফাত! সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অসাধারণ এক প্রথম সেশন কেটেছিল বাংলাদেশের। সেই দলই পরের দুই সেশনে যেন মিইয়ে গেল হঠাৎ করে। সকালে প্রবল চাপে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাই পরে ম্যাচের লাগাম ধরল শক্ত হাতে। বোলিংয়ে এই খেই হারানো এবং যথেষ্ট ধারাবাহিক হতে না পারায় বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কণ্ঠে আবারও ফুটে উঠল সেই পুরনো আক্ষেপ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2022, 03:33 AM
Updated : 26 June 2022, 08:47 AM

টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশকে ২৩৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিন শেষ করে বিনা উইকেটে ৬৭ রানে। ম্যাচে ফিরতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল দারুণ কিছু এবং দ্বিতীয় দিন সকালে শনিবার তেমন কিছুই করে দেখান বোলাররা। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানদের খুব একটা সুযোগ দেননি চার বোলার। শরিফুল ইসলাম প্রথম ব্রেক থ্রু দেওয়ার পর ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে সৈয়দ খালেদ আহমেদ এক ওভারেই নেন দুই উইকেট। ইবাদত উইকেট না নিলেও প্রথম স্পেলে ৭ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে তৈরি করেন চাপ।

প্রথম সেশনে ৪ উইকেট নেয় বাংলাদেশ। তখন এমনকি লিড নেওয়ার সম্ভাবনাও ছিল উজ্জ্বল। লাঞ্চ বিরতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ৪ উইকেটে ১৩৭। উইকেটে তখনও নতুন দুই ব্যাটসম্যান।

লাঞ্চের পর সেই শৃঙ্খলা ও চাপ ধরে রাখার প্রক্রিয়ায় দেখা যায়নি বাংলাদেশের বোলিংকে। প্রায় প্রতি ওভারেই দেখা যায় আলগা বল। সেটির ফায়দা নিয়ে কাইল মেয়ার্স ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড গড়ে তোলেন জুটি। দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেটই পড়েনি।

দিনজুড়ে ভালো বোলিং করতে পেরেছেন কেবল মিরাজ। তিনিই শেষ সেশনে ব্ল্যাকউডকে (৪০) আউট করে ১১৬ রানের জুটি ভাঙেন। কিন্তু মেয়ার্স আরও একটি জুটি গড়ে তোলেন জশুয়া দা সিলভাকে নিয়ে। দিনশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেটে ৩৪০। মেয়ার্স অপরাজিত ১২৬ রানে।

দিনশেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ডমিঙ্গো অসন্তুষ্টির কথা জানালেন বোলিংয়ের সামগ্রিক চিত্রে। ধারাবাহিকতার অভাব নিয়ে পুরনো হতাশার কথাই আবার বললেন কোচ।

“এই মুহূর্তে গল্পটা টেস্ট ক্রিকেটের মতোই, একটা সেশন ভালো গেছে আমাদের, আরেক সেশন খুবই বাজে। হয়তো ছেলেরা অধৈর্য হয়ে গিয়েছিল। টানা যথেষ্ট পরিমাণে আঁটসাঁট বোলিং করে ওদেরকে চাপে ফেলতে পারিনি আমরা, যেটা পেরেছিলাম প্রথম সেশনে। খুবই হতাশার এটি।”

“প্রথম সেশনে আমরা অসাধারণ বোলিং করেছি। কিন্তু লাঞ্চের পর সেটা ধরে রাখতে পারিনি। উইকেটের জন্য বোলিং করতে গিয়ে কিছু আলগা বল করেছি। যখন ওভার দা উইকেট করার কথা, তখন রাউন্ড দা উইকেট করেছি। যথেষ্ট পরিমাণে ধৈর্য না ধরে মৌলিক কিছু ভুল করেছি।”

লাঞ্চের পর বাংলাদেশের কিছুটা এলোমেলো বোলিং দেখে মনে হয়েছে, পরিকল্পনা বুঝি ছিল ভিন্ন কিছু। তবে কোচ জানালেন, দলের প্রতি তাদের বার্তা ছিল আগের মতোই।

“বার্তাটা সবসময়ই থাকে ডট বল করে চাপ গড়ে তোলা। রান রেট নিয়ন্ত্রণে রাখা। উইকেট নেওয়ার জন্যই আমাদের সেই প্রক্রিয়াটা দরকার। কিন্তু উইকেটের তাড়নায় আমরা অনেক বেশি আলগা বল করে ফেলেছি। ধৈর্য ধরা, শৃঙ্খলা রাখা, এই প্রক্রিয়াগুলোয় আমরা জোর দিয়েই বলে যাচ্ছি। কিন্তু যথেষ্ট লম্বা সময় ধরে আমরা তা করতে পারছি না। আমরা এক সেশন করতে পারি, আরেক সেশনে পারি না। লম্বা সময় চাপ ধরে রাখতে পারি না।”