এমন ব্যাটিং ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ সাকিবের কাছে

৫ দিন আর ১৫ সেশনের খেলা। কিন্তু প্রথম দিন প্রথম সেশনেই সম্ভাবনার মৃত্যু! প্রথম সেশনেই ৬ উইকেট হারালে আদতে বাকি তেমন আর কিছু থাকেও না। ম্যাচ শেষে সাকিব আল হাসান বললেন, ওই এক সেশনই বাংলাদেশকে ছিটকে দিয়েছে ম্যাচ থেকে। সতীর্থদের প্রতি অধিনায়কের সতর্কবার্তা, এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। বিপর্যয় কাটানোর পথ বের করতে বললেন তিনি ব্যাটসম্যানদেরই।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2022, 03:58 PM
Updated : 19 June 2022, 04:26 PM

অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিন প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারায় ৪৬ রানে। সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি দল। প্রথম ইনিংস শেষ হয় ১০৩ রানে। বোলাররা পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬৫ রানে আটকে রাখলেও বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় ফিরে আসে দ্বিতীয় ইনিংসেও। এবার ৬ উইকেট হারাতে হয় ১০৯ রানে।

টেস্টের প্রথম দিনে টস হেরে আর্দ্রতা থাকা উইকেটে আগে ব্যাট করার কঠিন কাজটি করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। টস হেরে সাকিব বলেছিলেন, টস জিতলে আগে বোলিং নিতেন তিনিও। তবে এটিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে চান না বাংলাদেশ অধিনায়ক।

“অবশ্যই এটা (টস) উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। তবে তা নিয়ে তো অভিযোগ করতে পারি না। এটা মেনে নিতেই হবে। আমাদের প্রয়োজন ছিল ভালো ব্যাট করা। উইকেট কঠিন ছিল বটে। তবে আমরা যদি আরও বেশি নিবেদন দেখাতাম, ৬ উইকেট না হারিয়ে ২টি হারিয়ে লাঞ্চে যেতাম, তাহলে আদর্শ হতো।”

“ওই সেশনের পর থেকে উইকেট গত তিন দিন ধরেই ছিল ভালো। ওই এক সেশনই আমাদের খেলা শেষ করে দিয়েছে। আমরা ম্যাচে সবসময় পেছনে পড়ে থেকেছি। উন্নতির তাই অনেক জায়গা আছে।”

এই টেস্টের ব্যাটিং বিপর্যয় কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত কিছুদিন ধরে চলে আসা ব্যাটিং ব্যর্থতারই ধারাবাহিকতা এটি। গত জানুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ড সফরে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে দারুণ জয়ের পর দ্বিতীয় টেস্টে ক্রাইস্টচার্চে ২৭ রানে ৫ উইকেট হারায় দল। পরে ১২৬ রানে শেষ হয় প্রথম ইনিংস।

এরপর মার্চ-এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পড়ে ১০১ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে দলের ইনিংস শেস হয় স্রেফ ৫৩ রানে। দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পড়ে ১২২ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে পড়ে ৬ উইকেট।

এরপর দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে প্রথম টেস্টে ভালো ব্যাটিং করলেও দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পড়ে ২৪ রানে, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট হারায় দল ৫৩ রানে।

এরপর এবার অ্যান্টিগার এই বিপর্যয়। এই টেস্ট থেকেই নেতৃত্বের নতুন অধ্যায় শুরু করা সাকিব কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের।

“এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এরকম আমরা নিয়মিতই করছি এখন। গত ৪-৫ টেস্ট ধরেই এটা হচ্ছে। রান করা ও উইকেটে টিকে থাকার পথ ব্যাটসম্যানদের খুঁজে বের করতে হবে। টেস্ট ক্রিকেটে এভাবেই এগোতে হয়। এরপর বোলারদের দায়িত্ব। এটাই সরল সমীকরণ, যেটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।”

এই টেস্টে বোলারদের পারফরম্যান্সে অবশ্য দারুণ সন্তুষ্ট অধিনায়ক। তার আশা, পরের টেস্টে ব্যাটিংয়েও ভালো করবে দল।

“বোলারদের নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই আমার। সবাই নিজেকে উজাড় করে বোলিং করেছে। প্রতিটি দিনই মাঠে নেমে ওরা চেষ্টা করেছে। ওদের নিয়ে তাই আপত্তি নেই কোনো। ব্যাটিংই আমাদের ডুবিয়েছে। তবে আশা করি, পরের ম্যাচে আমরা ঘুরে দাঁড়াব।”