বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস পরাজয়

শূন্য রানে আউট হননি কেউ। প্রথম ইনিংসে ৬ ব্যাটসম্যান শূন্য রানে বিদায় নেওয়া দলের জন্য বড় সুখবরই বটে! তবে সুসংবাদের সমাপ্তি ওখানেই। শূন্যের মিছিল থামলেও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বাজে ব্যাটিংয়ের মহড়া থামেনি। দেখা যায়নি লড়াইয়ের তাড়না। তৃতীয় দিন লাঞ্চ বিরতি নাগাদ তাই চেপে ধরেছে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 June 2022, 04:31 PM
Updated : 18 June 2022, 04:31 PM

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১১৫। ইনিংস হার এড়াতে প্রয়োজন এখনও ৪৭ রান।

শনিবার প্রথম সেশনে ২৯ ওভার খেলে ৬৫ রান তুলতে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৪ উইকেট। কাইল মেয়ার্স ফিরিয়েছেন দুঃসময়ের বলয়ে থাকা দুই বাঁহাতি নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হককে। কেমার রোচের শিকার লিটন দাস ও মাহমুদুল হাসান জয়।

এই দুজনই উপহার দিয়ে এসেছেন উইকেট। বড় ভরসা লিটন ইতিবাচক শুরুর পর হুট করেই খেলেছেন দায়িত্বজ্ঞানহীন আলগা শট। এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করা জয় লাঞ্চের মিনিট দশেক আগে বাজে শটেই হারিয়েছেন উইকেট। প্রথম ইনিংসে ‘গোল্ডেন ডাক’ পাওয়া তরুণ ওপেনার এবার ১৫৩ বল খেলে করতে পেরেছেন ৪২।

আগের দিন তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজকে হারানো বাংলাদেশ তৃতীয় দিন শুরু করে ২ উইকটে ৫০ রান নিয়ে। দিনের তৃতীয় বলেই কেমার রোচকে দারুণ ড্রাইভে চার মারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। একটু পর বাউন্ডারি আদায় করেন তিনি জেডেন সিলসের বলেও। তবে এই দুই বাউন্ডারি ছাড়া আঁটসাঁট বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের আটকে রাখেন রোচ ও সিলস।

উইকেট ধরা দেয় মেয়ার্স আক্রমণে আসার পর। যথারীতি নিখুঁত লাইন-লেংথ আর দুই দিকেই সুইং মিলিয়ে ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলেন তিনি। পুরস্কারও পান দ্রুতই। হালকা বেরিয়ে যাওয়া বাড়তি বাউন্সের ডেলিভারিতে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন শান্ত (৪৫ বলে ১৭)।

মুমিনুল হক গিয়েও ভুগতে থাকেন মেয়ার্সের সুইংয়ে। প্রথম ইনিংসে শূন্যতে বিদায় নেওয়া ব্যাটসম্যান এবার রানের দেখা পান সৌভাগ্যের ছোঁয়ায়। আউট সুইঙ্গার করতে করতে হুট করেই একটি ইনসুইঙ্গার (বাঁহাতির ব্যাটসম্যানের জন্য) করেন মেয়ার্স। মুমিনুলের ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্পের একটু ওপর দিয়ে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে।

ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় লড়াই করলেও শেষ পর্যন্ত আউট হন বাজে শটে। ছবি: আইসিসি।

তবে ওখানেই শেষ। মেয়ার্সের পরের ওভারেই মুমিনুল এলবিডব্লিউ হন ওই ৪ রানেই। ভয়ঙ্কর বাজে ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান এই নিয়ে টানা ৯ ইনিংসে আউট হলেন দু অঙ্ক ছোঁয়ার আগে।

লিটন উইকেটে গিয়ে শুরু করেছিলেন আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে। আলজাসি জোসেফের শর্ট বলে পুল করে বাউন্ডারি মারার পরের বলে আরেকটি চার মারেন তিনি দৃষ্টিনন্দন অফ ড্রাইভে। কিন্তু রোচ আক্রমণে এসেই ফেরান লিটনকে।

দায় যদিও পুরোপুরি ব্যাটসম্যানের। স্টাম্পের বাইরে নিরীহ এক বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে আলগা শটে স্লিপে ক্যাচ দেন লিটন (১৫ বল ১৭)।

একটু পর আরেকটি বড় ধাক্কা। বোলার এবার সেই রোচ, একই ধরনের বাইরের বলে ব্যাটসম্যানের একই ধরনের আলগা শট। সকাল থেকে যিনি ধৈর্য ধরে আঁকড়ে রেখেছিলেন উইকেট, নিজের প্রথম বাউন্ডারির জন্য অপেক্ষা করেন সপ্তদশ ওভার পর্যন্ত, সেই জয় দেড়শর বেশি বল খেলে আচমকা মনোযোগ হারিয়ে বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে দেন জায়গায় দাঁড়িয়ে। কিপারের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় তার ইনিংস।

অধিনায়ক সাকিব হাল হাসান উইকেটে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই রোচকে তেঁড়েফুড়ে মারতে গিয়ে সফল হননি। লাঞ্চের আগে অল্প সময়টুকু পার করে দেন তিনি ও নুরুল হাসান সোহান মিলে।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর (তৃতীয় দিন লাঞ্চ পর্যন্ত):

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৩

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ২৬৫

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৫০/২) ৪৯ ওভারে ১১৫/৬ (জয় ৪২, শান্ত ১৭, মুমিনুল ৪, লিটন ১৭, সাকিব ৫*, সোহান ২*; রোচ ১৬-৭-২৯-২, সিলস ৮-১-২৫-০, জোসেফ ১১-৩-৩৩-২, মেয়ার্স ৮-২-১৬-২, মোটি ৬-১-৯-০)।