রাজকোটে শুক্রবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে রিশাভ পান্তের দলের জয় ৮২ রানে। ১৭০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৮৭ রানে থমকে যায় সফরকারীরা।
এই সংস্করণে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন স্কোর এটিই। ২০২০ সালে জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৯ রান ছিল আগের রেকর্ড।
দলটির বিপক্ষে রানের দিক থেকে ভারত পেল সবচেয়ে বড় জয়। ছাড়িয়ে গেল আগের ম্যাচে পাওয়া ৪৮ রানের জয়কে।
ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৭ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা কার্তিক। পান্ডিয়া ৩১ বলে করেন ৪৬ রান।
৪ ওভারে ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার আভেশ। ২১ রানে যুজবেন্দ্র চেহেলের প্রাপ্তি ২টি। হার্শাল প্যাটেল ২ ওভারে স্রেফ ৩ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট।
প্রথম দুই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের পর টানা দুই ম্যাচ জিতল ভারত। আগামী রোববার বেঙ্গালুরুতে শেষ ম্যাচে হবে সিরিজের ফয়সালা।
উইকেটে ছিল হালকা ঘাসের ছোঁয়া, পেসাররা পেয়েছেন বাড়তি বাউন্স, স্পিনাররা টার্ন।
প্রথম ১০ ওভারে ভারতের রান ছিল মাত্র ৫৬। শেষ ৫ ওভারে তারা যোগ করে ৭৩ রান!
সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে হারায় স্বাগতিকরা। লুঙ্গি এনগিডির বাড়তি বাউন্সে আলগা শটে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ডানহাতি ওপেনার।
তিনে নেমে শ্রেয়াস আইয়ার টেকেন কেবল দুই বল। টি-টোয়েন্টি অভিষেকে প্রথম উইকেটের স্বাদ পান মার্কো ইয়ানসেন। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় রিভিউ নিয়ে সফল হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
সপ্তম ওভারে ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত। পঞ্চম উইকেটে ৪১ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক পান্ত ও পান্ডিয়া।
ঝড় তোলার আগেই পান্তকে (১৭) ফিরিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজ। এরপরই ভারত ইনিংস সেরা ৩৩ বলে ৬৫ রানের জুটি পায় পান্ডিয়া ও কার্তিকের ব্যাটে।
৩টি করে চার-ছক্কায় ৪৬ রান করে শেষের আগের ওভারে বিদায় নেন পান্ডিয়া। শেষ ওভারে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে ছক্কায় উড়িয়ে কার্তিক পঞ্চাশে পা রাখেন ২৬ বলে।
৩৬তম ম্যাচে এসে প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটি পেলেন ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ২০১১ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত অবশ্য জাতীয় দলের হয়ে এই সংস্করণে তিনি খেলার সুযোগ পাননি। এই সিরিজ দিয়ে দলে ফেরেন তিন বছর পর।
এবারের আইপিএলে নিজেকে ফিনিশার হিসেবে নতুন করে চেনান কার্তিক। সেটারই আরেক ঝলক দেখা গেল এই ম্যাচে। ২০৩.৭০ স্ট্রাইক রেটে ৯ চার ও ২ ছক্কায় গড়া তার ৫৫ রানের ইনিংসটি।
সিরিজে টানা চতুর্থ ম্যাচে রান তাড়া করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় ওভারে খায় বড় ধাক্কা। নন স্ট্রাইক প্রান্তে ডাইভ দেওয়ার সময় কনুইয়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।
পরের ওভারে প্রিটোরিয়াসের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান কুইন্টন ডি কক (১৪)। প্রিটোরিয়াস পরের ওভারে শূন্য রানে ফেরেন আভেশের বলে ক্যাচ দিয়ে।
হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। রাসি ফন ডার ডাসেনের ২০ রান হয়ে থাকে ইনিংসের সর্বোচ্চ।
আভেশ একই ওভারে ফন ডাসেনের সঙ্গে তুলে নেন ইয়ানসেন ও মহারাজের উইকেট। নরকিয়া ও এনগিডিও বিদায় নেন দ্রুতই। বাভুমা পরে আর ব্যাটিংয়ে নামেননি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ২০ ওভারে ১৬৯/৬ (রুতুরাজ ৫, কিষান ২৭, শ্রেয়াস ৪, পান্ত ১৭, হার্দিক ৪৬, কার্তিক ৫৫, আকসার ৮*, হার্শাল ১*; ইয়ানসেন ৪-০-৩৮-১, এনগিডি ৩-০-২০-২, প্রিটোরিয়াস ৪-০-৪১-১, নরকিয়া ৩-০-২১-১, শামসি ২-০-১৮-০, মহারাজ ৪-০-২৯-১)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৬.৫ ওভারে ৮৭ (ডি কক ১৪, বাভুমা ৮ রিটায়ার্ড হার্ট, প্রিটোরিয়াস ০, ফন ডাসেন ২০, ক্লাসেন ৮, মিলার ৯, ইয়ানসেন ১২, মহারাজ ০, নরকিয়া ১, এনগিডি ৪, শামসি ৪*; ভুবনেশ্বর ২-০-৮-০, পান্ডিয়া ১-০-১২-০-, আভেশ ৪-০-১৮-৪, হার্শাল ২-০-৩-১, চেহেল ৪-০-২১-২, আকসার ৩.৫-০-১৯-১)
ফল: ভারত ৮২ রানে জয়ী
সিরিজ: পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম চারটির পর ২-২ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ: দিনেশ কার্তিক