স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের খেলা শেষে স্বাগতিকদের রান ২ উইকেটে ৯৫। ১৪৯ বলে চারটি চারে ৪২ রানে খেলছেন শূন্য ও ১৬ রানে জীবন পাওয়া ব্র্যাথওয়েট। এক চারে ৪৩ বলে ১২ রান করে তার সঙ্গী এনক্রুমা বনার।
সহজ কঠিন মিলিয়ে তিনটি সুযোগ হাতছাড়া না করলে প্রথম দিন শেষে হয়তো ভালো জায়গাতে থাকতে পারতো বাংলাদেশ।
উইকেটের কোথাও ঘাস আছে, কোথাও নেই। ঘাসে পড়লে বল দ্রুত যাচ্ছে ব্যাটে, একটু বাড়তি বাউন্সও করছে। স্বাভাবিকভাবেই ব্যাটসম্যানদের পুরোটা সময় দ্বিধায় থাকতে হচ্ছে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতা কমে যাওয়ায় ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা সহজ হয়ে গেছে।
ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যার্থতার পর বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। প্রথম পাঁচ ওভার মেডেন নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তৃতীয় ওভারে একটি উইকেটও মিলতে পারত। কিন্তু মুস্তাফিজের বলে লেগ গালিতে ব্র্যাথওয়েটের ক্যাচ ছাড়েন মুমিনুল হক।
দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনার ছিলেন সাবধানী। তাদের রানের তেমন কোনো সুযোগ দিচ্ছিলেন না সফরকারী বোলাররা। ষষ্ঠ ওভারে প্রথম রানের দেখা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৪তম বলে রানের খাতা খোলেন ক্যাম্পবেল, ২২তম বলে ব্র্যাথওয়েট।
প্রথম ১৫ ওভারে আসে কেবল ১৫ রান। মুস্তাফিজ প্রথম স্পেলে ৫ ওভারে দেন কেবল ১ রান।
চা-বিরতির পর কিছুটা বাড়ে রানের গতি, সেটা মূলত মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিংয়ে। এক পর্যায়ে ৩৯ বলে ১ রান করা ক্যাম্পবেল এই অফ স্পিনারকে হাঁকান ছক্কা ও চার।
দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে ক্যাম্পবেলকে বোল্ড করে ১৫৩ বল স্থায়ী ৪৪ রানের শুরুর জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি পেসার পরে টানা দুই বলে তৈরি করেন দুটি সুযোগ। দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ঝাঁপিয়ে রেমন রিফারের ক্যাচ নিতে পারেননি লিটন দাস। পরের বলে তিনিই লেগ গালিতে ধরতে পারেননি ব্র্যাথওয়েটের ক্যাচ। সে সময়ে ১৬ রানে ছিলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।
দুটি ক্যাচই ছিল ভীষণ কঠিন, সাধ্যমতো চেষ্টা করেছিলেন লিটন কিন্তু সফল হননি।
৪ রানে বেঁচে যাওয়া রিফার যেতে পারেননি বেশিদূর। ইবাদত হোসেনের দারুণ এক ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হয়ে যান তিনি। দিনের বাকি সময়টা বনারকে নিয়ে নিরাপদে কাটিয়ে দেন ব্র্যাথওয়েট। দুই জনে ৮৫ বলে যোগ করেন কেবল ২৩ রান।
আর্দ্রতা কমে যাওয়ার পর উইকেটে টিকে থাকা কঠিন ছিল না। তবে দ্রুত রান তোলা ছিল ভীষণ কঠিন। পরিস্থিতি বুঝে সেই চেষ্টাতে যাননি ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। তাদের মনোযোগ উইকেটে পড়ে থাকার দিকেই।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিয়ে নেমে দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান মাহমুদুল হাসান জয়। ফিটনেস পরীক্ষায় উতরে এই ম্যাচে খেলা কেমার রোচ পরের ওভারে ফিরে শূন্যতে বিদায় করেন নাজমুল হাসান শান্তকেও।
বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া মুমিনুল হককে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় করেন জেডেন সিলস। নিয়মিত উইকেট পতনের মধ্যে এক প্রান্ত আগলে রাখা তামিম ইকবাল বিদায় নেন লেগ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়ার চেষ্টায়।
ছন্দে থাকা লিটন দাসও পারেননি দলকে টানতে। শেষ ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল সাকিব আল হাসান। পাল্টা আক্রমণে অধিনায়ক করেন ৫১। এরপরও ১০৩ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
সব মিলিয়ে তৃতীয় ও টানা দ্বিতীয় টেস্টে এক ইনিংসে বাংলাদেশের ছয় ব্যাটসম্যান আউট হন শূন্য রানে।
সিলস ও আলজারি জোসেফ নেন তিনটি করে উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন রোচ ও কাইল মেয়ার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৮ ওভারে ৯৫/২ (ব্র্যাথওয়েট ৪২*, ক্যাম্ববেল ২৪, রিফার ১১, বনার ১২*; মুস্তাফিজ ১২-৬-১০-১, খালেদ ৯-৪-১৫-০, ইবাদত ১২-৪-১৮-১, সাকিব ৮-২-২০-০, মিরাজ ৭-১-২৮-০)