প্রথম সেশনেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ

চার বছর আগের চেয়ে এবার অন্তত ভালো! এই মাঠেই ২০১৮ সালে প্রথম সেশনে ৪৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার প্রথম সেশনে হয়েছে ৩৩ রান বেশি, উইকেট পড়েছে ৬টি। উন্নতি তো বটেই! তবে এটাকেই যখন উন্নতি বলতে হয়, দলের অবস্থাও বোঝা যায়। আবারও বিধ্বস্ত বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার। আবারও শুরুটা হলো বাজে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 June 2022, 04:36 PM
Updated : 16 June 2022, 04:46 PM

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম দিন প্রথম সেশনে বাংলাদেশের রান ২৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৭৬।

চার ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন শূন্য রানে। শুরুটা ভালো করলেও তামিম ইকবাল আউট হয়ে গেছেন ২৯ রানে।

ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটিং করলেও একবার জীবন পেয়ে লাঞ্চ পর্যন্ত টিকে গেছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ অধিনায়কের রান ৩৯ বলে ২৭ । ২১ বলে ২ রান নিয়ে তার সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।

স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামের উইকেট এবার একটু ভিন্ন ধরনের। উইকেটে কোথাও আছে ঘাস, কোথাও নেই। টস জিতে বোলিং নিয়ে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট বলেন, উইকেটে শুরুর আর্দ্রতা তারা কাজে লাগাতে চান।

অধিনায়কের চাওয়া পূরণ করতে খুব বেশি সময় নেননি ক্যারিবিয়ান পেসাররা। মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক- বাংলাদেশের তিন ব্যাটসম্যানই ফেরেন শূন্য রানে।

শুরুটা করেন কেমার রোচ। টেস্টের আগের দিন ফিটনেস পরীক্ষায় উতরে এই ম্যাচে খেলতে নামা অভিজ্ঞ পেসার নিজের প্রথম দুই ওভারেই শিকার করেন দুই উইকেট।

প্রথমটি ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই। মাহমুদুল হাসান জয়ের খেলা প্রথম বল সেটি। ছেড়ে দেওয়ার মতো বলটিতে ব্যাট বাড়িয়ে স্লিপে ধরা পড়েন জয়।

৭ টেস্টেই ৫ বার শূন্য রানে আউট হয়ে গেছেন তরুণ এই ওপেনার।

রোচের পরের ওভারের প্রথম বলে উপড়ে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর (৫ বলে ০) স্টাম্প। নেতৃত্ব ছাড়ার পর প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ মুমিনুল হকও (৬ বলে ০)। তিনি স্লিপে ধরা পড়েন জেডেন সিলসের বলে।

ব্যর্থতার চক্রে থাকা এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান টানা ৮ ইনিংসে আউট দলেন দু অঙ্ক ছোঁয়ার আগে।

রান তখনও পর্যন্ত যা করেছেন, কেবল তামিম ইকবালই। আত্মবিশ্বাসী শুরু করে কয়েকটি বাউন্ডারি তিনি আদায় করে নেন। ১৯ রানের মাথায় স্পর্শ করেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫ হাজার টেস্ট রান। দলের রানও ছিল তখন ১৯।

১৬ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে কিছুটা এগিয়ে নেন তামিম ও লিটন দাস। এই জুটির সময়ে মনে হচ্ছিল, বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু আলগা শটে তামিমের বিদায়ে আবার আসে বিপদ।

আলজারি জোসেফের লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট ছুঁইয়ে আউট হয়ে যান তামিম (৪৩ বলে ২৯)। এরপর কাইল মেয়ার্স এসে প্রথম ওভারেই নেন দুই উইকেট!

শুরু থেকে একটি আউট সুইং, একটি ইনসুইংয়ে লিটনকে সংশয়ে ফেলে দেন মেয়ার্স। সুইং কাভার করতে একটু এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লিটন (১২)। এক বল পরই অনেকটা সুইং করে ভেতর ঢোকা বল না খেলে ছেড়ে দিয়ে শূন্য রানে বিদায় নেন নুরুল হাসান সোহান।

৬ উইকেটে রান তখন ৪৫, চার বছর আগের স্মৃতি উঁকি দিতে শুরু করেছে।

তবে লাঞ্চের আগে আর উইকেট পড়েনি। বিপদ যদিও হতে পারত। একের পর এক উইকেট হারিয়েই কিনা, সাকিব ব্যাট করতে শুরু করেন অনেকটা টি-টোয়েন্টির ধরনে। প্রায় প্রতি বলে আগ্রাসী শট খেলার চেষ্টা করতে থাকেন। একবার জীবনও পান সিলসের হাতে, যদিও ক্যাচটি ছিল কঠিন।

বেঁচে গিয়েও সাকিব খেলতে থাকেন একই ভাবে। প্রথম দুই ওভার মেডেন নেওয়া মেয়ার্সকে ছক্কায় ওড়ান তিনি লং অফ দিয়ে। আরেক পাশে মিরাজ আঁকড়ে রাখেন উইকেট।

বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপে এরপর অপেক্ষায় কেবল তিন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান, ইবাদত হোসেন চৌধুরি ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। দলের ইনিংস তাই অনেকটা নির্ভর করবে এই জুটির ওপরই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর (লাঞ্চ পর্যন্ত):

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৫ ওভারে ৭৬/৬ (তামিম ২৯, জয় ০, শান্ত ০, মুমিনুল ০, লিটন ১২, সাকিব , সোহান ০, মিরাজ ; রোচ ৮-২-২১-২, সিলস ৬-১-২৪-১, জোসেফ ৫-২-১৫-১, মেয়ার্স ৫-২-১০-২, মোটি ১-০-১-০)।