শারমিনের আরেকটি সেঞ্চুরির দিনে সুশমার আক্ষেপ

আসরে নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন শারমিন সুলতানা। টানা ব্যর্থতার বলয় ছিঁড়ে আরেকটি দারুণ শতক উপহার দিলেন আবাহনী লিমিটেডের এই ওপেনার। তার প্রাপ্তির দিনে অল্পের জন্য সেঞ্চুরির উষ্ণ ছোঁয়া না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়লেন সুশমা দেবি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2022, 01:27 PM
Updated : 12 June 2022, 08:02 PM

ব্যাট হাতে এই দুইজনের জ্বলে ওঠার দিনে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের বিপক্ষে ১৭৮ রানের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে আবাহনী। মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে রোববার ২৫৯ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে স্রেফ ৮১ রানে।

ইনিংস শুরু করতে নেমে ১২৬ বলে ৮ চারে ১০১ রানে অপরাজিত থাকেন শারমিন। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনিই। পাঁচে নামা সুশমা ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৯৫ বলে করেন ৯৫ রান।

গুলশান ইয়ুথকে একশর আগে থামিয়ে দেওয়ায় বড় অবদান রাখেন সন্দিহা ইসলাম আশা। স্রেফ ১২ রান দিয়ে ধরেন তিনটি শিকার। দুটি করে প্রাপ্তি জাহানারা আলম ও হ্যাপি আলমের।

বিকেএসপির এক নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে তৃতীয় ওভারেই উইকেট হারায় আবাহনী। জিন্নাত অর্থিকে নিয়ে সেই ধাক্কা সামাল দেন শারমিন।

দুইজনে গড়েন ৫৮ রানের জুটি। ৩ চারে ২৬ করা অর্থির বিদায়ে ভাঙে তাদের প্রতিরোধ। চারে নেমে টিকতে পারেননি পেসার জাহানারা।

আবাহনী সবচেয়ে বড় জুটি পায় এরপর। সুশমা ও শারমিন মিলে দলের রান নিয়ে যান আড়াইশ কাছে। তাদের ১৭৬ বল স্থায়ী জুটিতে আসে ১৭৬ রান।

৬৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করা শামরিন সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ১২৪ বলে। সুশমার পঞ্চাশ আসে ৫৮ বলে।

আবাহনীর রানের চাপে শুরুতেই পথ হারিয়ে ফেলে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব। ৩৮ রানে হারায় তারা প্রথম পাঁচ ব্যাটার। যেখানে কেবল একজন যেতে পারেন দুই অঙ্কে।

শেষ পাঁচ উইকেট হারায় দলটি স্রেফ ২৪ রানে। তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন মিশু খান। ১১১ বল খেলে তিনি মারেন ৬টি চার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ২৫৯/৪ (মন্টি ২, শারমিন ১০১*, অর্থি ২৬, জাহারানা ৩, সুশমা ৯৫, তাজ ১৪*; রিয়া ৯-০-৫২-১, আনিশা ৮-০-৩৪-০, খাদিজা ১০-০-৩৯-২, শাহনাজ ১০-১-৫২-০, বৃষ্টি ৬-০-৪৩-১, মোরশেদা ৭-০-৩৮-০)

গুলশান ইয়ুথ: ৪৭.৫ ওভারে ৮১ (আইভী ১০, রিয়া ০, শাহনাজ ১, নুজহাত ১, আনিশা ১, মিশু ৪৫, বৃষ্টি ৬, রিমি ৪, মোরশেদা ০, খাদিজা ০*; জাহানারা ৬-১-৭-২, হ্যাপি ৬-৪-৩-২, সাবেকুন ১০-৩-২১-১, ফাহিমা ১০-১-২০-১, আশা ৭.৫-২-১২-৩, ইশমা ৮-৩-১১-১)

ফল: আবাহনী লিমিটেড ১৭৮ রানে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: শারমিন সুলতানা

শেখ রাসেল-রূপালী ব্যাংক

টানা চার ফিফটি ও এক সেঞ্চুরির পর এক ম্যাচে করতে পারেননি বড় রান, বৃষ্টিতে আরেক ম্যাচ হয় পরিত্যক্ত। স্বল্প সেই বিরতির পর আবারও হাসল ফারজানা হক পিংকির ব্যাট। তার অপরাজিত পঞ্চাশ ছাড়ানো ইনিংসে শেখ রাসেল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট একাডেমিকে হারাল রূপালী ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে রূপালী ব্যাংকের জয় ৭ উইকেটে। শেখ রাসেলকে ১৩৮ রানে থামিয়ে দিয়ে ১২২ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় তারা।

২ ছক্কা ও ১০ চারে ৭৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা ফারজানা । ৩৩ রান আসে নিগার সুলতানার ব্যাট থেকে।

শেখ রাসেলকে দেড়শর আগে আটকে রাখার কারিগর লাকি খাতুন ৩৪ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। দুই উইকেট পান নাহিদা আক্তার।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে শেখ রাসেল। তাদের পাঁচ ব্যাটার যেতে পারেন দুই অঙ্কে, কিন্তু কেউ ছুঁতে পারেননি পঞ্চাশ।

দলটির হয়ে ৬ চারে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন সোবহানা মোস্তারি।

রান তাড়ায় ২৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে শুরুতে কিছুটা চাপে পড়ে যায় রূপালী ব্যাংক। সেখান থেকে দলকে পথে ফেরান ফারজানা ও নিগার। তাদের ১০৮ রানের জুটিতে জয়ের দুয়ারে পৌঁছে যায় দলটি।

৩ চারে ৩৩ রান করে নিগার ফিরলেও জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন ৬৪ বলে ফিফটি করা ফারজানা। আসরে যা তার পঞ্চম অর্ধশত।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শেখ রাসেল: ৫০ ওভারে ১৩৮/৯ (মুরশিদা ০, একা ১৫, প্রিয়াঙ্কা ৩, ফারজানা ২৭, নিপা ১১, সোবহানা ৪৬, ইসমত ১৬, শানজিদা ০, রোকেয়া ৬, সুমা ০*, ইয়ামিম ০*; রূপা ৬-২-১১-১, পূজা ৫-০-২২-১, নাহিদা ১০-৫-১৪-২, মুক্তা ১০-৩-২১-১, শরিফা ৫-০-২২-০, লাখি ১০-০-৩৪-৩, শুকতারা ৪-১-১২-০)

রূপালী ব্যাংক: ২৯.৪ ওভারে ১৪২/৩ (সাথী ৮, মুক্তা ১৩, ফারজানা ৭৯*, নিগার ৩৩, শুকতারা ১*; শানজিদা ৭.৪-১-৩৪-০, প্রিয়াঙ্কা ৬-১-৩০-২, সোবহানা ৩-০-১২-০, সুমা ২-০-১৪-০, রোকেয়া ৪-০-২৪-০, ইসমত ৭-০-২৭-১)

ফল: রূপালি ব্যাংক ক্রীড়া পরিষদ ৭ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফারজানা হক

খেলাঘর-মোহামেডান

ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন শামীমা সুলতানা। সম্ভাবনা জাগালেন সেঞ্চুরির। কিন্তু কাছে গিয়েও তিন অঙ্কের স্বাদ না নিতে পারার আক্ষেপে পুড়লেন তিনি। তবে তার দারুণ ইনিংসে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির বিপক্ষে জয় তুলে নিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ৩ উইকেটে জিতেছে মোহামেডান। ১৫৭ লক্ষ্যে তারা পৌঁছে গেছে ৪৫ বল বাকি থাকতে।

এক ছক্কা ও ১২ চারে ৯০ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন মোহামেডানের শামীমা সুলতানা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খেলাঘরের চার ব্যাটার যেতে পারেন দুই অঙ্কে, কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারেননি কেউই।

তাদের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৪ রান আসে লতা মণ্ডলের ব্যাট থেকে। ৫৯ বলের ইনিংসে চারটি চার মারেন তিনি। এক ছক্কায় ৩৫ রান করেন রিতু মনি।

মোহামেডানের হয়ে দারুণ বোলিং করে ২৮ রান দিয়ে৩ উইকেট নেন দিশা দিপক। দুটি করে শিকার ধরেন সালমা খাতুন ও সোহেলি আক্তার।

রান তাড়ায় মোহামেডানকে একাই টানেন শামীমা। শুরুর চার ব্যাটারের মধ্যে কেবল তিনিই যেতে পারেন দুই অঙ্কে।

তারা ইনিংসে সবচেয়ে বড় জুটি পায় রুমানা আহমেদ ও শামীমার ব্যাটে। তাদের ৬২ রানের প্রতিরোধ ভাঙে ৩ চারে ২৬ রান করা রুমানার বিদায়ে।

পরে হতাশা নিয়ে বিদায় নেন শামীমাও। তবে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়নি মোহামেডানকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি: ৪৯.৩ ওভারে ১৫৬ (বন্যা ৯, সুলতানা ৫, সাবেকুন ২৭, মিষ্টি ০, লতা ৪৪, রিতু ৩৫, স্বর্ণা ২, ফাতেমা ১, রুনা ১, ফোয়ারা ৪*; তাজিয়া ৩-০-১৮-০, সালমা ১০-১-৩০-২, দিশা ১০-২-২৮-৩, রুমানা ৯.৩-২-১৮-১, শায়েলা ৭-১-২৪-১, সোহেলি ১০-০-৩৮-২)

মোহামেডান: ৪২.৩ ওভারে ১৫৮/৭ (শামীমা ৯০, শারমিন ০, দিশা ৯, শায়েলা ৭, রুমানা ২৬, শম্পা ১৯*, শারমিন ৩, সালমা ১, সোহেলি ০*; রিতু ১০-৩-২৩-১, ফাতেমা ৬-১-২৩-১, ফোয়ারা ১০-০-৪৮-১, লতা ১০-০-৩১-২, সুলতানা ৪-০-১৬-০, স্বর্ণা ২.৩-০-১৬-০)

ফল: মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ৩ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: শামীমা সুলতানা