ট্রেন্ট ব্রিজে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন ৪ উইকেটে ৩১৮ রান নিয়ে শেষ করেছে সফরকারীরা।
৩ রানে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান মিচেল। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় নিজেকে মেলে ধরে এখন খেলছেন তিনি ৮১ রানে। ১৪৭ বলের ইনিংসটি সাজানো ২ ছক্কা ও ৯ চারে। ব্লান্ডেল অপরাজিত আছেন ৮ চারে ৬৭ রান নিয়ে।
সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে দলের বিপর্যয়ে এই দুই জনই টেনেছিলেন নিউ জিল্যান্ডকে। গড়েছিলেন ১৯৫ রানের জুটি। এবারও তাদের ব্যাটে দারুণ একটি দিন পার করল দলটি। দিন শেষে অবিচ্ছিন্ন তারা ১৪৯ রানের জুটি গড়ে।
লর্ডস টেস্টের একাদশ অপরিবর্তিত রেখেই দ্বিতীয় ম্যাচে নামে ইংল্যান্ড। যদিও মাথায় আঘাত পেয়ে ওই ম্যাচে খেলতে পারেননি জ্যাক লিচ। বাঁহাতি এই স্পিনারের কনকাশন বদলি হিসেবে খেলেছিলেন লেগ স্পিনার ম্যাট পার্কিনসন। সুস্থ হয়ে ফিরেছেন লিচ।
নিউ জিল্যান্ডের একাদশে পরিবর্তন তিনটি। বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলের জায়গায় এসেছেন পেসার ম্যাট হেনরি। করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়া অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের বদলি হেনরি নিকোলস। চোটে পড়া কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের জায়গায় অভিষেক হয়েছে মাইকেল ব্রেসওয়েলের।
নটিংহ্যামে শুক্রবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ডের শুরুটা হয় দারুণ। হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেট থেকে কিছুটা সুইং আদায় করে নেন ইংলিশ পেসাররা। জেমস অ্যান্ডারসন, স্টুয়ার্ট ব্রড, ম্যাথু পটসকে সামলে প্রথম ঘণ্টার কঠিন চ্যালেঞ্জ ভালোভাবেই কাটিয়ে দেন টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং।
জমে যাওয়া দুজনের প্রতিরোধ ভাঙেন বেন স্টোকস। নিজের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ফিরিয়ে দেন তিনি ইয়াংকে। ৯ চারে ৪৭ রান করা কিউই ওপেনারের নিচু ক্যাচ দ্বিতীয় স্লিপে ধরেন জ্যাক ক্রলি।
পরের বলেই আবার উল্লাসে মাতে ইংল্যান্ড। দারুণ বোলিং করে যাওয়া অ্যান্ডারসনের শর্ট বল পুল করে শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ দেন উইলিয়ামসন না থাকায় নেতৃত্ব পাওয়া ল্যাথাম (৬ চারে ২৬)।
প্রথম সেশনের বাকি সময় নিরাপদেই কাটিয়ে দেন ডেভন কনওয়ে ও দলে ফেরা নিকোলস। দ্বিতীয় সেশনের শুরুর দিকেই সুযোগ হাতছাড়া করে ইংল্যান্ড। ব্রডের বলে ১৭ রানে থাকা নিকোলসের ক্যাচ ছাড়েন ক্রলি।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের ব্যাটের বাইরের কানা নিয়ে বল যাচ্ছিল প্রথম স্লিপে রুটের সোজা। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতের চেষ্টায় বল মুঠোয় জমাতে পারেননি ক্রলি।
৫০ ছাড়িয়ে বড় হতে থাকা জুটিতে ফাটল ধরান ইংলিশ অধিনায়ক স্টোকস। শরীর থেকে দূরের বল খোঁচা দিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন নিকোলস (৪ চারে ৩০)।
৪১ রানে অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া কনওয়েকে বেশিদূর যেতে দেননি অ্যান্ডারসন। ৪৬ রানে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান অভিজ্ঞ পেসার।
নিউ জিল্যান্ডকে আরও চেপে ধরার সুযোগ এসেছিল ইংলিশদের সামনে। কিন্তু মিচেলের ওই ক্যাচ ছাড়ার মাশুল দিতে হয় স্বাগতিকদের। ব্লান্ডেলকে নিয়ে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মিচেল।
দেখেশুনে খেলে ইংলিশ বোলারদের হতাশ করে এগিয়ে যান মিচেল-ব্লান্ডেল। সবশেষ ইনিংসে ১০৮ রান করা মিচেল পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ৯১ বলে, যা টেস্ট ক্যারিয়ারে তার চতুর্থ ফিফটি। ব্লান্ডেলের টানা দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি আসে ৯৩ বলে। লর্ডসে ৯৬ করে ফিরেছিলেন তিনি।
৮০ ওভার শেষ হতেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয় ইংল্যান্ড। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই দুজনের জুটি আর ভাঙাতে পারেনি দলটি। সুযোগ অবশ্য একবার এসেছিল। ব্রডের বলে ব্লান্ডেলের ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্লিপের মাঝ দিয়ে বল যায়। কিন্তু কোনো চেষ্টাই করেননি ক্রলি ও জনি বেয়ারস্টো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮৭ ওভারে ৩১৮/৪ (ল্যাথাম ২৬, ইয়াং ৪৭, কনওয়ে ৪৬, নিকোলস ৩০, মিচেল ৮১*, ব্লান্ডেল ৬৭*; অ্যান্ডারসন ১৮-৬-৪২-২, ব্রড ১৮-৪-৭৪-০, পটস ১৮-৪-৬৯-০, স্টোকস ১২-০-৪০-২, লিচ ১৮-৩-৬২-০, রুট ৩-০-১৫-০)