অসাধারণ জুটিতে সেঞ্চুরির দুয়ারে মিচেল ও ব্লান্ডেল

ম্যাথু পটসকে দৃষ্টিনন্দন এক অফ ড্রাইভে চার মেরে ৯৭ রানে পৌঁছে গেলেন ড্যারিল মিচেল। রাতে ঠিকমতো ঘুম হবে কি নিউ জিল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যানের? দিনের খেলা যে সেখানেই শেষ! আরও একবার যখন দলের সামনে চোখ রাঙাচ্ছিল অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা। টম ব্লান্ডেলের সঙ্গে কী চমৎকার জুটিই না গড়ে তুললেন মিচেল। তাদের ব্যাটেই এখন লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দেওয়ার পথে কিউইরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2022, 06:27 PM
Updated : 3 June 2022, 07:19 PM

প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৩৬ রান। ৬ উইকেট হাতে রেখে সফরকারীরা এগিয়ে ২২৭ রানে।

মিচেল ও ব্লান্ডেল দুজনই তৃতীয় দিন শুরু করবেন সেঞ্চুরির দুয়ারে দাঁড়িয়ে। ১৮৮ বলে ১১ চারে ৯৭ রানে অপরাজিত মিচেল। ১৮২ বলে ১২ চারে ৯০ রানে খেলছেন ব্লান্ডেল।

প্রথম ইনিংসে এক পর্যায়ে ৭ উইকেটে ৪৫, সেখান থেকে ১৩২ রানে অলআউট, পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আবারও বিপর্যয়ে, সেই দলের লিডই এখন দুইশ ছাড়িয়ে। যার পুরো কৃতিত্ব মিচেল ও ব্লান্ডেলের। পঞ্চম উইকেটে ৩৩৯ বলে ১৮০ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন দুজন।

প্রথম দিনের ১৭টিসহ টেস্টের প্রথম চার সেশনে যেখানে পতন হয় ২৩ উইকেটের, পরের দুই সেশনে উইকেট পড়ে স্রেফ একটি!

দ্বিতীয় দিনের শুরুতেও উইকেট থেকে সিম মুভমেন্ট পান পেসাররা। ইংল্যান্ড দিন শুরু করে ৭ উইকেটে ১১৬ রান নিয়ে। আধা ঘণ্টার একটু বেশি সময়ে তারা গুটিয়ে যায় ১৪১ রানে। ৪৯ রানে শেষ ৮ উইকেট হারানো দলটি লিড পায় ৯ রানের।

১৯৫৪ সালের পর এই প্রথম ইংল্যান্ডের মাটিতে কোনো টেস্টে দুই দলই প্রথম ইনিংসে অলআউট হলো দেড়শর নিচে।

টিম সাউদি নিজের পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান বেন ফোকস ও স্টুয়ার্ড ব্রডকে। জ্যাক লিচের ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে টেস্ট অভিষেক হওয়া ম্যাট পার্কিনসনকে বিদায় করে স্বাগতিকদের ইনিংস গুটিয়ে দেন ট্রেন্ট বোল্ট।

৫৫ রানে সাউদির প্রাপ্তি ৪টি। লর্ডসে সফরকারী বোলার হিসেবে সবচেয়ে বেশি টেস্ট উইকেটের রেকর্ড ছুঁতে তার প্রয়োজন আর দুটি। সমান ২৬ উইকেট নিয়ে রেকর্ডটা যৌথভাবে কিউই কিংবদন্তি স্যার রিচার্ড হ্যাডলি ও অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট গ্লেন ম্যাকগ্রার।

বোল্ট ২১ রানে নেন ৩ উইকেট।

আবার ব্যাটিংয়ে নেমে নিউ জিল্যান্ডের প্রথম চার ব্যাটসম্যান ব্যর্থ দ্বিতীয় ইনিংসেও। শুরুটা উইল ইয়াংকে দিয়ে। এবারও ঠিক ইনিংসের ১৩তম বলে বিদায় নেন তিনি। বোলার আবারও সেই জেমস অ্যান্ডারসন। তার দারুণ ডেলিভারিতে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন ইয়াং।

আরেক ওপেনার টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসন প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তবে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তাদের লড়াই। নিজের পরপর দুই ওভারে দুজনকেই ফেরান অভিষিক্ত ম্যাথু পটস। ম্যাচে তার উইকেট সংখ্যা হলো ৬।

অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাক ফুট পাঞ্চ করে তৃতীয় স্লিপে ধরা পড়েন অধিনায়ক উইলিয়ামসন (৩৪ বলে ১৫)। দুই ইনিংসেই তিনি পটসের শিকার। দারুণ এক ডেলিভারিতে কট বিহাইন্ড হন ল্যাথাম (৩৩ বলে ১৪)।

আর ডেভন কনওয়েকে যখন ফিরিয়ে দেন ব্রড, ৫৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে আরও একবার অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় নিউ জিল্যান্ড। লিড তখন কেবল ৪৭ রানের।

সেখান থেকেই শুরু মিচেল ও ব্লান্ডেলের লড়াই। দুই ব্যাটসম্যানই সময় নিয়ে মনোযোগ দেন ইনিংস গড়ায়। ব্লান্ডেল ফিফটি পূর্ণ করেন ১০১ বলে। পঞ্চাশ ছুঁতে মিচেলের লাগে ৯৭ বল। জুটির রান শতরান স্পর্শ করে ১৮১ বলে।

পেসারদের পর অভিষিক্ত লেগ স্পিনার পার্কিনসনকে আক্রমণে আনেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস। তবে কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা আর মেলেনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৩২

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪২.৫ ওভারে ১৪১ (আগের দিন ১১৬/৭) (ফোকস ৭, ব্রড ৯, অ্যান্ডারসন ৭*, পার্কিনসন ৮; সাউদি ১৪-৩-৫৫-৪, বোল্ট ১৩.৫-৪-২১-৩, ডি গ্র্যান্ডহোম ৮-২-২৪-১, জেমিসন ৭-৩-২০-২)

নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৭৯ ওভারে ২৩৬/৪ (ল্যাথাম ১৪, ইয়াং ১, উইলিয়ামসন ১৫, কনওয়ে ১৩, মিচেল ৯৭*, ব্লান্ডেল ৯০* ; অ্যান্ডারসন ১৬-৬-৪৯-১, ব্রড ২১-৬-৪৭-১, পটস ১৯-৩-৫০-২, স্টোকস ৮-১-৪৩-০, পার্কিনসন ১৪-০-৪৩-০, রুট ১-০-২-০)