১০ বছর পর বিসিবি সভাপতির কথা, ‘২ বছর পর দেখবেন’

প্রায় ১০ বছর আগে সরকারের মনোনয়নে বিসিবি সভাপতি হওয়ার পরপরই নাজমুল হাসান বলেছিলেন, “সীমিত ওভারে বাংলাদেশ ভালো দল, মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন টেস্টে।” এরপর তিন দফায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়ে এখনও তিনি বিসিবি সভাপতি। তবে শুরুর দিকের সেই বক্তব্য অনেকটাই অস্বীকার করে এখন তার আশা, আরও দুই বছর পর টেস্টে অন্য চেহারায় দেখা যাবে বাংলাদেশকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2022, 04:54 PM
Updated : 2 June 2022, 04:54 PM

২০১২ সালের অক্টোবরে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর নাজমুল হাসান বলেছিলেন, “আমরা বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে দুর্বল। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আমরা ভালো। বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। ক্রিকেটকে দেশজুড়ে আরও জনপ্রিয় করতে হবে আমাদের এবং প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ক্রিকেটার বের করে আনতে হবে। এটাই আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”

পরে ২০১৩ সালে বিসিবির প্রথম নির্বাচিত সভাপতি হন তিনি। ২০১৭ ও ২০২১ সালে নির্বাচিত হন আবারও। কোনোবারই তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না।

বিসিবিতে বৃহস্পতিবার নতুন টেস্ট অধিনায়ক ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল হাসান বললেন, সামনে তারা গুরুত্ব দিতে চান টেস্ট ক্রিকেটে।

“তিনটি ফরম্যাটের মধ্যে আমরা কেবল ওয়ানডেতে কিছুটা ভালো। যা কিছু সাফল্য, ওয়ানডেতেই। অন্য দুই ফরম্যাটে ভালো নই। শুধু টেস্টে নয়, টি-টোয়েন্টিতেও পারফরম্যান্স ভালো নয়। আমরা বলতে পারি না যে টি-টোয়েন্টিতে শক্তিশালী দল। আমরা যেটা করতে চাচ্ছি, পরবর্তী গুরুত্ব দিতে চাচ্ছি টেস্টেই। টেস্টে উন্নতি করার জন্য যা যা করা দরকার আমরা পরিকল্পনা করেছি এবং সামনে দেখতে পাবেন, আমরা কী কী করেছি।”

২০১২ সালের ১৮ অক্টোবর ইএসপিএনক্রিকইনফোর সংবাদ, যেখানে নাজমুল হাসান বলেছিলেন টেস্টকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা।

টানা এত বছর দায়িত্বে থাকার পর এতদিনে তিনি টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে পরিকল্পনার কথা বলতেই উঠে গেল প্রশ্ন। প্রায় ১০ বছর আগে বলা কথা তাকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো যে তখনই চেয়েছিলেন টেস্টকে গুরুত্ব দিতে। নাজমুল তা স্বীকার করতেই চাইলেন না, সঙ্গে যোগ করলেন লম্বা ব্যাখ্যা।

“না না না না না না… কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। আমি যখন এসেছিলাম তখন কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ, কিছু বলার কথা নয়। আমি শুধু বলেছিলাম, এখানে পেশাদারিত্ব আনতে চাই, দায়বদ্ধতা ও শৃঙ্খলা, এই তিনটির ওপর জোর দিতে চাই। এছাড়া আর কিছুই বলি নাই, প্রথম যখন আসছি।”

“তারপর দায়িত্বে এসে আমি দেখলাম যে তিন ফরম্যাটের মধ্যে কোনটায় ভালো করার সুযোগ আছে। টেস্ট এমন একটা খেলা, যেখানে ইচ্ছা করলেই আমি তাড়াহুড়ো করে ভালো করতে পারব না। এটা আমার কাছে তখন মনে হয়েছে। আর টি-টোয়েন্টি তখন অত জনপ্রিয় ছিল না। অনেকে মনে করত, টি-টোয়েন্টি কোনো খেলাই না। তো আমরা ওয়ানডেকে বেছে নিয়েছিলাম এবং ওয়ানডেতে ওরা ভালো করেছে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আমরা মনে করছি, আমাদের টেস্টেও ভালো করতে হবে।”

নাজমুল যে ২০১২ সালের অক্টোবরেই বলেছিলেন ‘বাংলাদেশ সংক্ষিপ্ত সংস্করণে ভালো এবং টেস্টে মনোযোগ দিতে হবে’, সেটির খবর সেই সময়ের দেশি-আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল, সেসবের প্রমাণ আছে এখনও।

বিসিবি সভাপতি পরে বললেন, টেস্টের এখনকার স্কোয়াড দিয়ে উন্নতির আশা বাদ দিয়ে তাকাতে হবে সামনে।

“এখন টেস্টে ভালো করতে গেলে যা যা করা দরকার, এই স্কোয়াড দিয়ে করাটা কিন্তু কঠিন। আপনাদের এই জিনিসটা বুঝতে হবে। ওরা যতদিন খেলে যাবে, এটার প্রভাব তো যাবে না। ঘরোয়া ক্রিকেটে এটার ধারা যদি চলতে থাকে, আমাদের বিকল্প অনেক বেড়ে যাবে। আমার ধারণা, আজ থেকে দুই বছর পরে দেখবেন অনেক পরিবর্তন, অনেক বদল।”