‘নিঃসন্দেহে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলবে ডেভিড’

শেকড় অস্ট্রেলিয়ায় হলেও জন্ম সিঙ্গাপুরে। এশিয়ার দেশটির হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদও নিয়ে ফেলেছেন টিম ডেভিড। তবে বিধ্বংসী এই ব্যাটসম্যানের স্বপ্ন অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়ে জড়ানো। দেশটির কিপার-ব্যাটসম্যান ম্যাথু ওয়েডের দৃঢ় বিশ্বাস, ডেভিডের চাওয়া পূরণ হলো বলে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2022, 12:53 PM
Updated : 31 May 2022, 12:53 PM

অস্ট্রেলিয়া থেকে নব্বইয়ের দশকে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমায় ডেভিডের পরিবার। তার জন্মের দুই বছর পরই অবশ্য আবার দেশে ফেরে তারা। ডেভিডের বাবাও ছিলেন একজন ক্রিকেটার। ক্রিকেটে ডেভিডের হাতেখড়ি, ক্রিকেটার হিসেবে বেড়ে ওঠা, সবই তার অস্ট্রেলিয়ায়।

বয়সভিত্তিক পর্যায়ে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলেন ডেভিড। শুরুতে সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। পরে ২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ে দারুণ খেলে দল পান বিগ ব্যাশে। তাকে দলে নেয় পার্থ স্কর্চার্স।

কিন্তু পায়ের চোটের কারণে সেবার খেলতে পারেননি পুরো আসর। ২০১৯ সালের এপ্রিলে শল্যবিদের ছুরি-কাঁচির নিচেও যেতে হয় তাকে। এরপর আর স্কর্চার্স তার সঙ্গে চুক্তি না করলে সিঙ্গাপুরে ফিরে যান ডেভিড।

জন্মসূত্রে সিঙ্গাপুরের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেয়ে লুফে নেন তিনি। ২০১৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে করেন দেশটির প্রতিনিধিত্ব। এখন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের হয়ে ১৪ টি-টোয়েন্টি খেলে ৪৬.৫০ গড় ও ১৫৮.৫২ স্ট্রাইক রেটে ৫৫৮ রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। যেখানে ফিফটি আছে ৪টি।

সে সময়ই ডেভিড বলেছিলেন, আপাতত সিঙ্গাপুরের হয়ে খেললেও ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলার লক্ষ্যেই ছুটছেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে এখন নিয়মিত মুখ ডেভিড। গত নভেম্বরে তাসমানিয়ার হয়ে খেলেছেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট। বিগ ব্যাশে খেলেছেন হোবার্ট হারিকেন্সের হয়ে।

নিয়মিত ব্যাট হাতে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে যাচ্ছেন ডেভিড। পাকিস্তান সুপার লিগের সবশেষ আসরে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ১১ ম্যাচ খেলে ১৯৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেন ২৭৮। এরপর পেয়ে যান আইপিএলেও খেলার সুযোগ।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচে স্রেফ ১২ রান করে বাদ পড়েন ডেভিড। শেষ দিকে তাকে আবারও ফেরানো হয় একাদশে। এবার তিনি দেখান ঝলক। সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচ খেলে করেন ১৮৬ রান।

টুর্নামেন্টে ডেভিডের স্ট্রাইক রেট ছিল ২১৬। আইপিএলের এক আসরে কমপক্ষে ৫০ বল খেলা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।

দারুণ এই ফর্ম সামনেও ধরে রাখতে পারলে শিগগিরই ডেভিডের অপেক্ষা ফুরাবে বলে মনে করেন হোবার্ট হারিকেন্সে তার সতীর্থ ওয়েড। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ায় মঙ্গলবার তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ডেভিড অবশ্যই খেলবে।

“এই বিশ্বকাপ হোক বা পরের বিশ্বকাপ, তার হাতে এখনও অনেক সময় আছে। সে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলতে যাচ্ছে, এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।”

ডেভিডের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চও। আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ঘরের মাঠের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে ডেভিডকে রাখার সম্ভাবনার কথাও সোমবার বলেন তিনি।

“অনেক দিন ধরে সে দারুণ ফর্মে আছে। আইপিএলের শেষ দিকটা তার জন্য ছিল অসাধারণ, সেখানে সে তার সেরাটা খেলেছে। প্রথম বল থেকে মারতে পারার দক্ষতা খুব একটা দেখা যায় না। সে কাজটি অনেকবারই করে দেখিয়েছে।”

“তাকে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। আর এই দিকটি সামনের কিছু দিনে আমরা অবশ্যই নজরে রাখব।”

বর্তমানে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট ভাইটালিটি ব্লাস্টে খেলছেন ডেভিড। ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে এখন পর্যন্ত খেলা দুই ম্যাচের একটিতে উপহার দিয়েছেন ঝড়ো ফিফটি।