মাহমুদউল্লাহকে ছাড়িয়ে সাতের সেরা লিটন

রেকর্ড স্পর্শ করতে প্রয়োজন ছিল ১ রান, ছাড়িয়ে যেতে ২। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ছোট্ট সেই দূরত্ব পাড়ি দিলেন লিটন দাস। বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে সাত নম্বরে সর্বোচ্চ ইনিংস এখন লিটন দাসের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 May 2022, 05:11 AM
Updated : 24 May 2022, 05:11 AM

সাতে ব্যাটিংয়ে নেমে আগের রেকর্ড ছিল মাহমুদউল্লাহর। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে ১৩৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব‍্যাটসম‍্যান।

১৩৫ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন শেষ করেন লিটন। নতুন দিনের প্রথম ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে স্পর্শ করেন মাহমুদউল্লাহকে, পরের ওভারের প্রথম বলেই যান পেরিয়ে।

সাত নম্বরে নেমে বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি আছে আর কেবল দুটি। ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ১০১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম, তার প্রথম সেঞ্চুরি যেটি। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে ঠিক ১০০ রানে আউট হন নাসির হোসেন।

রেকর্ড গড়ার পর অবশ্য বেশিদূর এগোতে পারেননি লিটন। তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস থামে ২৪৬ বলে ১৪১ রানে।

সাত নম্বরের বিশ্বরেকর্ড গড়তে আরও অনেক দূর পাড়ি দিতে হতো লিটনকে। ২৭০ রানের ইনিংসটি খেলে রেকর্ডটি স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের।

সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান বলে বিবেচিত ব্র্যাডম্যান সাতে কেন নেমেছিলেন, এই প্রশ্ন জাগতে পারে অনেকের মনে। এটির উত্তরেও মিশে আছে ব্র্যাডম্যানের ক্ষুরধান ক্রিকেট মস্তিষ্কের প্রমাণ।

১৯৩৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মেলবোর্ন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ওই রেকর্ড গড়েছিলেন ব্র্যাডম্যান। সেসময় উইকেট ঢেকে রাখা হতো না। ম্যাচের সময় বৃষ্টি হওয়ায় উইকেট ছিল ভেজা। ৯ উইকেটে ২০০ রানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দেন অধিনায়ক ব্র্যাডম্যান। ভেজা উইকেটে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ড পড়ে যায় ব্যাটিং বিপর্যয়ে।

ইংলিশ অধিনায়ক গাবি অ্যালেনও পরে একই পথ বেছে নেন। ৯ উইকেটে ৭৬ রান নিয়েই ঘোষণা করে দেন ইনিংস। ভেজা উইকেটে অস্ট্রেলিয়ানদের আবার ব্যাটিংয়ে নামাতেই ওই কৌশল। ব্র্যাডম্যানও তখন দারুণ এক বুদ্ধি বের করেন। ভেজা উইকেটে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডার উল্টে দেন!

প্রথম ইনিংসের ৯ ও ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান বিল ও’রাইলি ও চাক ফ্লিটউড-স্মিথকে ওপেন করতে নামিয়ে দেন তিনি। প্রথম ইনিংস দশে নামা ফ্রাঙ্ক ওয়ার্ডকে এবার নামানো হয় তিনে। উদ্দেশ, শুরুর কঠিন সময়টুকু তারা পার করে দেবেন। চার নম্বরে কিথ রিগ নামেন চারেই। দুই নিয়মিত ওপেনার বিল ব্রাউন ও জ্যাক ফিঙ্গলটন নামেন পাঁচ ও ছয়ে।

সেই কৌশল কাজে লাগে দারুণভাবে। ৯৭ রানের মধ্যে তারা ৫ উইকেট হারালেও ততক্ষণে উইকেট সহজ হয়ে আসে। ছয়ে নামা ফিঙ্গলটন ও সাতে নামা ব্র্যাডম্যান গড়েন ৩৪৬ রানের জুটি, সেসময় যা ছিল ষষ্ঠ উইকেটে বিশ্বরেকর্ড। ৪২৮ বল খেলে ফিঙ্গলটন করেন ১৩৭, ব্র্যাডম্যান ৩৭৫ বলে ২৭০।

সাতে নেমে ব্র্যাডম্যানের সেই ইনিংস এখনও টিক এছ বিশ্বরেকর্ড হয়ে। তার আরও বেশ কিছু কীর্তির মতো এই রেকর্ডও ভাঙা মনে হয় অসম্ভরের কাছাকাছি।

সাত নম্বরে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি আছে টেস্ট ইতিহাসে আরও তিনটি-১৯২৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার জ্যাক রাইডারের অপরাজিত ২০১, ১৯৫৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডেনিস অ্যাটকিনসনের ২১৯ ও ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্টের অপরাজিত ২০৪।