রুমানার দুর্দান্ত সেঞ্চুরি, ফাহিমার ৪ উইকেট

দুবাইয়ে ‘ফেয়ারব্রেক’ নামের আমন্ত্রণমূলক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ব্যাটে-বলে আলো ছড়ানো রুমানা আহমেদ দেশে ফিরেই অসাধারণ এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন। এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডারের ঝড়ো ইনিংসের পর সোহেলির দারুণ বোলিংয়ে মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে শুভসূচনা করল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2022, 01:09 PM
Updated : 19 May 2022, 01:09 PM

বল হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার ফাহিমা খাতুন। এই লেগ স্পিনার আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন ১০ ওভারে ২০ রান দিয়ে। বড় জয় পেয়েছে তার দলও। কেরানীগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমিকে ১২০ রানে গুটিয়ে দিয়ে তারা ৮ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে ১১২ বল হাতে রেখে।

সিটি ক্লাবের বিপক্ষে মোহামেডানের জয় ১১৫ রানে। রুমানার ১০০ বলে অপরাজিত ১২৮ রানের ইনিংসে তারা পায় ২৬৮ রানের পুঁজি। রান তাড়ায় সিটি ক্লাব থমকে যায় ১৫৩ রানে।

বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও (বিকেএসপি)। বাংলাদেশ আনসার অ্যান্ড ভিডিপির বিপক্ষে তাদের জয় ৮২ রানে। ২৩৩ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে তারা আটকে দেয় ১৫১ রানে।

মোহামেডান-সিটি ক্লাব

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় মোহামেডান। সেখান থেকে দলের স্কোর আড়াইশ পার করার কৃতিত্ব পাঁচ নম্বরে নামা রুমানার।

প্রথমে চতুর্থ উইকেটে শায়লা শারমিনের সঙ্গে ৫৩ রানের জুটিতে দলকে কক্ষপথে ফেরান তিনি। ৬০ বলে ৪টি চারে ৪৭ রান করে বিদায় নেন শায়লা।

রুমানা ফিফটি করেন ৫১ বলে। ৯০ বলে ছুঁয়ে ফেলেন তিন অঙ্ক। শেষ পর্যন্ত ১৮ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন ১২৮ রানের ইনিংসটি। সপ্তম উইকেটে সোহেলির সঙ্গে তার জুটিতে ৮০ রান আসে স্রেফ ৪৮ বলে। সোহেলি ২৭ বলে করেন ৩০ রান।

রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই উইকেট হারানো সিটি ক্লাব ঘুরে দাঁড়ায় দ্বিতীয় উইকেটে ঝিলিক ও সাদিয়া ইসলামের ৯০ রানের জুটিতে। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পর নিয়মিত উইকেট হারায় তারা। যেতে পারেনি তাই লক্ষ্যের ধারেকাছে।

ঝিলিক ৬৫ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় করেন সর্বোচ্চ ৪৩ রান। সাদিয়া ৩৭ রান করেন ৭৮ বলে।

সোহেলি ১০ ওভারে ৩ মেডেনে মাত্র ১৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। রুমানা ৬ ওভারে ২ মেডেনে ৮ রানে নেন একটি। সঙ্গে সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৬৮/৭ (শামিমা ৯, জেসিয়া ১৩, শম্পা ৯, শায়লা ৪৭, রুমানা ১২৮*, শারমিন ৭, তাজিয়া ১২, সোহেলি ৩০, জেসি ১*; সুরাইয়া ১০-০-৪৭-১, কোহিনূর ৬-০-২৪-১, মুর্শিদা ৮-০-৬০-১, পারভিন ১০-০-৪৯-১, ফারজানা ১০-১-৫৪-২, ফাতেমা ৬-০-৩১-১)

সিটি ক্লাব: ৫০ ওভারে ১৫৩/৯ (ঝিলিক ৪৩, আচেনা ০, সাদিয়া ৩৭, পারভিন ২২, শিবানি ১৫, সুরাইয়া ২, আসফিয়া ৪*, মুর্শিদা ১, ফারজানা ১, কোহিনূর ০, ফাতেমা ৫*; জেসিয়া ২-০-১০-১, সোহেলি ১০-৩-১৩-৪, তাজিয়া ৮-২-২১-০, টুম্পা ৪-০-২৭-০, শায়লা ১০-২-৩৩-১, জেসি ১০-২-৩৬-১, রুমানা ৬-২-৮-১) 

ফল: মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১১৫ রানে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: রুমানা আহমেদ

আবাহনী-কেরানীগঞ্জ

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কেরানীগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমির শুরুটা হয় আশা জাগানিয়া। উদ্বোধনী জুটিতে তমালিকা সুমনা ও গাজালা নাজ তুলে ফেলেন ৪৬ রান। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পরই পথ হারায় তারা। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ৪১.৩ ওভারে অল আউট হয়ে যায় ১২০ রানে।

চার নম্বরে নেমে সুমি আক্তার সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন ৭০ বলে, ৭টি চারে।

ফাহিমার ৪টি ছাড়া আশা ২৬ রানে নেন ৩ উইকেট। জাহানারা আলম ২৩ রানে নেন একটি।

আবাহনী পরে ছোট লক্ষ্য পেরিয়ে যায় সহজেই। দুই ওপেনার শারমিন সুলতানা ২১ ও ইশমা তানজিম করেন ৩১ রান। মন্টি ২৭ ও জিনাত অর্থি ৩০ রান করে দলের জয় নিয়ে ফেরেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কেরানীগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমি: ৪১.৩ ওভারে ১২০ (নাজ ৩০, তমালিকা ১৮, কামরুন ০, সুমি ৩৬, ইতি ৪, তাহেরা ৫, জহুরা ০, তৃপ্তি ২, ফারিহা ৪, ঝুমুর ০*, জাহানারা ৭-০-২৩-১, হ্যাপি ৪-০-১৩-০, সাবিকুন ৬-১-১৬-০, আশা ৭.৩-২৬-৩, ফাহিমা ১০-২-২০-৪, লাবণ্য ৭-১-২০-২)  

আবাহনী লিমিটেড: ৩১.২ ওভারে ১২২/২ (শারমিন ২১, ইশমা ৩১, মন্টি ২৭*, অর্থি ৩০*; ফারিহা ৮-১-২৫-১, তৃপ্তি ১-০-৪-০, তাহেরা ২-০-১৫-০, তমালিকা ১০-০-৩২-১, জহুরা ১.২-০-১২-০, ঝুমুর ৭-০-২২-০, মনিশা ২-০-১১-০)

ফল: আবাহনী লিমিটেড ৮ উইকেটে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: ফাহিমা খাতুন

বিকেএসপি-আনসার অ্যান্ড ভিডিপি

বিকেএসপির দুই নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বিকেএসপি ৬ উইকেটে ২৩৩ রানের পুঁজি পায় মূলত উন্নতি আক্তারের ব্যাটে। এই কিপার-ব্যাটার তিনে নেমে ১৩২ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৮১ রানের ইনিংস খেলে হন ম্যাচের সেরা।

সুমাইয়া আক্তার করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান।

আনসার অ্যান্ড ভিডিপির হয়ে হাত ঘোরান ৯ জন। একটি করে উইকেট পান তিন জন।

রান তাড়ায় প্রথম দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। সেখান থেকে পুরো ৫০ ওভার খেললেও ৯ উইকেটে ১৫১ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি।

রেশমা আক্তার সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন ৭১ বল খেলে। ৯ নম্বরে নেমে ৬১ বলে ২৯ রান করেন বোলার পান্না ঘোষ।

বিকেএসপির রাবেয়া খান ১০ ওভারে ১৯ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। নিশিতা আক্তারের প্রাপ্তি ৩টি, ২৮ রান দিয়ে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বিকেএসপি: ৫০ ওভারে ২৩৩/৬ (ফাহমিদা ২০, ইভা ১৮, উন্নতি ৮১, সুমাইয়া ২৫, জান্নাতুল ফেরদৌস ০, জান্নাতুল মাওয়া ২১*, মারুফা ১০; পান্না ৩-০-১৬-০, তিথি ১০-২-৩২-০, লিলি ৫-১-২৫-০, মাহমুদা ২-০-২৫-১, ইসমত ৮-১-৩১-০, আয়েশা ৫-০-২৬-০, পুজা ৩-০-১৬-০, আয়সা ৬-১-২৭-১, আফিয়া ৮-০-২৭-১)   

আনসার অ্যান্ড ভিডিপি: ৫০ ওভারে ১৫১/৯ (আয়েশা ১, আফিয়া ০, রেশমা ৩২, উর্মি ১১, পুজা ১৮, ইসমত ০, মাহমুদা ৯, তিথি ৬, পান্না ২৯*, আয়সা ৪, লিলি ১৫*; মারুফা ৬-১-৩০-১, রাবেয়া ১০-১-১৯-৪, নিশিতা ১০-২-২৮-৩, ফাহমিদা ১০-১-২৭-১, দিশা ৭-০-১৮-০, আসরাফি ৪-০-১৩-০, জান্নাতুল মাওয়া ১-০-৫-০, সুমাইয়া ২-০-৯-০) 

ফল: বিকেএসপি ৮২ রানে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: উন্নতি আক্তার