শেষের নাটকীয়তায় হেরে কলকাতার বিদায়

জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ২১ রান। প্রথম চার বলে এলো ১৮। ম্যাচ তখন অনেকটাই হেলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের দিকে। কিন্তু তীরে গিয়ে তরী ডুবল তাদের। এভিন লুইসের অবিশ্বাস্য ক্যাচ, শেষ দুই বলে মার্কাস স্টয়নিসের ২ উইকেটে রোমাঞ্চকর জয় পেল লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2022, 06:10 PM
Updated : 18 May 2022, 06:54 PM

আইপিএলে বুধবার শেষ ওভারের চরম নাটকীয়তায় লক্ষ্ণৌর জয় ২ রানে। ২১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কলকাতা থমকে যায় ২০৮ রানে।

এই জয়ে প্লে-অফের টিকেট নিশ্চিত হয়ে গেল নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি লক্ষ্ণৌর। আর বিদায়ঘণ্টা বাজল দুইবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতার।

মুম্বাইয়ের ডিওয়াই স্পোর্টস একাডেমি মাঠে বড় লক্ষ্য তাড়ায় তিন ওভারের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারায় কলকাতা। এরপর নিতিশ রানা (৪২), শ্রেয়াস আইয়ার (৫০) ও স্যাম বিলিংস (৩৬) এগিয়ে নেন দলকে।

আন্দ্রে রাসেল যখন ১১ বলে ৫ রান করে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলেন, ম্যাচ লক্ষ্ণৌর হাতের মুঠোয়। তখনও যে ২০ বলে কলকাতার দরকার ৬১ রান। সেখান থেকে অসাধারণ এক জয়ের আশা জাগান সুনিল নারাইন ও রিঙ্কু সিং।

মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমান নারাইন। ১৮তম ওভারে আভেশ খানকে নারাইন ও রিঙ্কুর একটি করে ছক্কায় আসে ১৭ রান।

১২ বলে দরকার ৩৮। ভীষণ কঠিন নিশ্চিতভাবে। জেসন হোল্ডারের প্রথম তিন বলে একটি করে ছক্কায় ব্যবধান কমান দুই ব্যাটসম্যান। এই ওভারেও আসে ঠিক ১৭ রান।

তখন পর্যন্ত এক ওভারে ৫ রান দিয়ে ১ উইকেট নেওয়া স্টয়নিসের হাতে শেষ ওভারে বল তুলে দেন অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ২১ রানের প্রয়োজনে প্রথম বল অফ স্টাম্পের বাইরে পেয়ে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মারেন রিঙ্কু। পরের বলটি ছিল শর্ট, এবার পুল করে ছক্কা।

তৃতীয় বলটি ইয়র্কারের চেষ্টায় লেংথ গড়বড় করে ফেলেন স্টয়নিস, স্লট বলে আরেকটি ছক্কা লং অফ দিয়ে। চতুর্থ বল ডিপ স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে রিঙ্কু নেন ডাবল।

২ বলে চাই ৩। পঞ্চম বল ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। রিঙ্কু খেলতে চেয়েছিলেন এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে, কিন্তু ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ায় উঠে যায় ক্যাচ। ডিপ পয়েন্ট থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে এক হাতে ক্যাচ নেন লুইস। ক্রিকেটের সেরা ক্যাচগুলোর তালিকায় ওপরের দিকেই থাকার কথা এটির।

শেষ বলে দারুণ ইয়র্কারে উমেশ যাদবের স্টাম্প এলোমেলো করে লক্ষ্ণৌকে জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসান অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার স্টয়নিস।

নায়ক হতে হতেও শেষ পর্যন্ত পারলেন না রিঙ্কু। বিফলে গেল তার ১৫ বলে ৪ ছক্কা ও ২ চারে ৪০ রানের ইনিংস। ৭ বলে ৩ ছক্কায় ২১ রানে অপরাজিত থাকেন নারাইন।

লক্ষ্ণৌর শেষের নায়ক স্টয়নিস হলেও ম্যাচের সেরা কুইন্টন ডি কক। দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যানের ৭০ বলে অপরাজিত ১৪০ রানের বিধ্বংসী ইনিংসেই বড় পুঁজি পায় দল। রাহুলের সঙ্গে তিনি গড়েন আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি, ২১০ রানের।

১০ দলের আসরে নতুন দুই দলই নিশ্চিত করে ফেলল প্লে-অফের টিকেট, গুজরাট টাইটান্সের পর এবার লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস।

বাকি দুটি স্থানের জন্য লড়াই এখন পাঁচ দলের মধ্যে। কলকাতার আগে প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে যায় চেন্নাই সুপার কিংস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।