৫ বছর আর ৬১ ইনিংসের খরা কাটল তামিম-জয়ের জুটিতে

চট্টগ্রাম টেস্টের আগে যখন এই সংস্করণে উদ্বোধনী জুটিতে শতরান পেয়েছিল বাংলাদেশ, তখনও দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশের এখনকার স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ তখনও শ্রীলঙ্কা দলে খেলে যাচ্ছেন দাপটে। সেই ম্যাচে ছিলেন অধিনায়কও। এসবই বলে দিচ্ছে, কত আগের ঘটনা সেটি। মাহমুদুল হাসান জয়ের বয়স তখনও ১৬। সেই জয় আর চেনা মুখ তামিম ইকবালকে দিয়ে এতদিন পর কাটল খরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2022, 06:26 AM
Updated : 17 May 2022, 07:24 AM

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই ৭৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছিলেন তামিম ও জয়। তৃতীয় দিন সকালে জুটি অনায়াসেই পেরিয়ে যায় শতরান। শেষ হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি অপেক্ষার। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, শুরুর জুটিতে শতরান এলো ৫ বছর ও ৬১ ইনিংস পর!

সবশেষ উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশ শতরান পেয়েছিল ২০১৭ সালের মার্চে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। গলে দলের বড় হারের ম্যাচে ১১৮ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম ও সৌম্য সরকার।

সেই জুটিকে ছাড়িয়ে এবার তৃতীয় দিন লাঞ্চ পর্যন্ত তামিম-জয়ের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১৫৭।

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের দীনহীন পারফরম্যান্সের একটি কারণ বোঝা যায় উদ্বোধনী জুটির এই দীনতায়। টেস্টের আঙিনায় প্রায় ২২ বছরের পথচলায় এটি ১৩১তম টেস্ট, শুরুর জুটি সেঞ্চুরি ছুঁতে পারল মাত্র অষ্টমবার।

এই ৮ জুটির প্রতিটিতেই এক প্রান্তে ছিলেন ‘ইকবাল।’ তামিম ইকবাল ৭টিতে, ১টিতে নাফিস ইকবাল। অমিত সম্ভাবনাময় ক্রিকেট ক্যারিয়ারকে পূর্ণতা দিতে না পারা নাফিস এখন লজিস্টকস ম্যানেজার হিসেবে আছেন দলের সঙ্গেই। বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটিতে প্রথম শতরান দেখেছিল নাফিস ও জাভেদ ওমরের জুটিতে।

২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ বাঁচানোর লড়াইয়ে ৮৩ ওভারে ১৩৩ রান যোগ করেছিলেন নাফিস ও জাভেদ।

এরপর প্রতিটি শতরানের জুটিতেই আছেন তামিম ইকবাল। শুরুটা তার অভিষেক টেস্ট থেকেই। আরেক অভিষিক্ত জুনায়েদ সিদ্দিকের সঙ্গে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ডানেডিনে ১৬১ রানের জুটি গড়েন ২০০৮ সালে।

পরের চারটি শতরানের জুটিতে তামিমের সঙ্গী ইমরুল কায়েস। ২০১০ সালে ইংল্যান্ড সফরে পরপর দুই টেস্টে লর্ডসে ও ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দুজন গড়েন ১৮৫ ও ১২৬ রানের জুটি।

২০১৪ সালে এই দুজনের সৌজন্যেই শুরুর জুটিতে প্রথম দুইশ পায় বাংলাদেশ। এই চট্টগ্রামেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুজন যোগ করেন ২২৬ রান।

পরের বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে দুজন শুধু নিজেদেরই নয়, ছাড়িয়ে যান ক্রিকেট ইতিহাসের সবাইকে। খুলনায় ৩১২ রানের জুটি গড়েন দুজন, কোনো দলের দ্বিতীয় ইনিংসে যা টেস্ট ইতিহাসের প্রথম এবং এখনও পর্যন্ত একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরি জুটি।

এরপর ২০১৭ সালে গলে তামিম-সৌম্যর ১১৮ রানের জুটি। সেই টেস্টের পর এই টেস্ট পর্যন্ত ১৫টি ভিন্ন জুটি নিয়ে খেলেছে বাংলাদেশ। তামিম-জয় জুটির তৃতীয় ইনিংস ও দেশের মাঠে দুজনের জুটির প্রথম ইনিংসেই এলো শতরান।