তামিমের সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে বাংলাদেশের দিন

চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের লড়াইয়ে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।

আবু হোসেন পরাগবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2022, 03:58 AM
Updated : 17 May 2022, 12:37 PM

তৃতীয় দিন

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৯৭

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৭ ওভারে ৩১৮/৩

বাংলাদেশের রঙিন দিন

তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি, মাহমুদুল হাসান জয়, মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের ফিফটিতে তৃতীয় দিনটা দারুণ কাটল বাংলাদেশের।

এ দিন খেলা হয়েছে ৮৮ ওভার, ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যোগ করেছে ২৪২ রান।

তিন সেশনের দুটিতেই একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়েছে স্বাগতিকরা। সকালের সেশনে ২৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তামিম ও জয় যোগ করেন ৮১ রান।

পরের সেশনে ৩ উইকেট নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা। জয়ের বিদায়ে ১৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দ্রুত ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক।

তবে শেষ সেশনে আর কোনো উইকেট হারাতে দেননি লিটন ও মুশফিক। এই সময়ে ৩৫ ওভারে আসে ৯৮ রান। দুই ব্যাটসম্যানই অপরাজিত আছেন ফিফটি করে।

ক্র‍্যাম্পের জন‍্য চা-বিরতির পর ব‍্যাটিংয়ে নামেননি তামিম। ১৩৩ রান করা বাঁহাতি ওপেনারের জায়গায় ব‍্যাটিংয়ে নেমে লিটন দিন শেষে ১১৩ বলে ৮ চারে ৫৪ রানে অপরাজিত আছেন। ১৩৪ বলে ২ চারে ৫৩ রানে খেলছেন মুশফিক।

চতুর্থ উইকেটে এই দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৯৮।

বাংলাদেশ পিছিয়ে আর ৭৯ রানে, হাতে উইকেট ৭টি।

তৃতীয় দিনেও উইকেট ছিল যথেষ্ট ব্যাটিং সহায়ক। খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেননি শ্রীলঙ্কার বোলাররা। এর মধ্যে ক্যাচ ফেলার মাশুলও দিতে হয়েছে তাদের। বিশ্ব ফার্নান্দোর ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে সুযোগ পেয়ে এদিন ২ উইকেট নেন কাসুন রাজিথা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:  

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৯৭

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১০৭ ওভারে ৩১৮/৩ (আগের দিন ৭৬/০) (জয় ৫৮, তামিম ১৩৩ রিটায়ার্ড হার্ট, শান্ত ১, মুমিনুল ২, মুশফিক ৫৩*, লিটন ৫৪*; বিশ্ব ৮-০-৪২-০, আসিথা ১৬-২-৫৫-১, রমেশ ৩১-৮-৮৩-০, এম্বুলদেনিয়া ২৭-৬-৩৯-০, ধনঞ্জয়া ১৩-২-৩৯-০, রাজিথা ১১-৪-১৭-২)

ফিফটিতে সাকিবের পাশে মুশফিক

লিটন দাস পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরপরই ফিফটি তুলে নিলেন মুশফিকুর রহিমও। ১২৪ বলে ২টি চারে মাইলফলক স্পর্শ করলেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।

মুশফিকের এটি ২৬তম টেস্ট ফিফটি, বাংলাদেশের হয়ে যা সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

৩১টি ফিফটি করে চূড়ায় আছেন তামিম ইকবাল।

লিটন-মুশফিকের দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৩০৯। আর ৮৮ রানে পিছিয়ে তারা।

লিটনের ফিফটি

৪৮ থেকে লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার শর্ট বল পুল করে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেছেন লিটন দাস। ৯৭ বলে মাইলফলক ছুঁতে তিনি চার মেরেছেন ৮টি।

লিটনের এটি দ্বাদশ টেস্ট ফিফটি।

বছরের শুরুতে ক্রাইস্টচার্চে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরির পর আবার পঞ্চাশ ছুঁলেন তিনি। মাঝে চার ইনিংসে সর্বোচ্চ ছিল ৪১।

বাংলাদেশের তিনশ

মুশফিকুর রহিমের সিঙ্গেলে বাংলাদেশের দলীয় রান স্পর্শ করল তিনশ। ঠিক ১০১ ওভারে তিনশর ঠিকানায় পৌঁছাল স্বাগতিকরা।

শ্রীলঙ্কার চেয়ে মুমিনুল হকের দল পিছিয়ে আর ৯৭ রানে, হাতে উইকেট ৭টি।

১১৯ বলে ৪৬ রানে খেলছেন মুশফিক। লিটন ৯২ বলে ৪৭ রানে ব্যাট করছেন।

আরেকটি রিভিউ হারাল শ্রীলঙ্কা

বাঁহাতি স্পিনার লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলে পা বাড়িয়ে দেন মুশফিকুর রহিম। কোনো শট খেলার চেষ্টা তিনি করেননি। এলবিডব্লিউয়ের জোরাল আবেদনে আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ায় শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক নেন রিভিউ।

তবে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, বল স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে যেত। নষ্ট হয় শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় রিভিউ।

জীবন পেলেন লিটন

ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গেলেন লিটন দাস। বোলিংয়ে ফিরে উইকেট পেতে পেতেও পেলেন না ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।

অফ স্পিনারকে বেরিয়ে এসে ডিফেন্স করেছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বল ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় শর্ট লেগে। বেশ নিচু ক্যাচ ছিল অবশ্য, বলে হাত ছোঁয়ালেও মুঠোয় জমাতে পারেননি ওশাদা ফার্নান্দো।

তখন ৩৩ রানে ব্যাট করছিলেন লিটন।

মুশফিক-লিটন জুটিতে পঞ্চাশ

অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসকে দারুণ কাভার ড্রাইভে চার মারলেন লিটন দাস। এই বাউন্ডারিতে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তার চতুর্থ জুটির রান স্পর্শ করল পঞ্চাশ, ১০৮ বলে।

দেখেশুনে খেলে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। শ্রীলঙ্কার বোলারদের সুযোগই দিচ্ছেন না তারা।

৯০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২৭২। এখনও পিছিয়ে ১২৫ রানে।

৮৪ বলে একটি চারে ৩৫ রানে খেলছেন মুশফিক। ক্র‍্যাম্পের জন‍্য চা-বিরতির পর আর ব‍্যাটিংয়ে না নামা সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবালের জায়গায় নেমে লিটন ৬২ বলে ৫ চারে ৩২ রানে অপরাজিত আছেন।

শ্রীলঙ্কার ব্যর্থ রিভিউ

রমেশ মেন্ডিসের আগের বলে চমৎকার একটি চার মারলেন লিটন দাস। পরের বলেই বেঁচে গেলেন আউট হতে হতে।

অফ স্টাম্পে পিচ করে সোজা যাওয়া বল ডিফেন্স করার চেষ্টায় সফল হননি লিটন। ব‍্যাটের কানা ঘেঁষে বল যায় কিপারের গ্লাভসে।

আম্পায়ার জোরাল আবেদনে সাড়া না দিলে কিপার নিরোশান ডিকভেলা ও বোলার রমেশের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। আল্ট্রা এজে বল ব‍্যাটে স্পর্শের কোনো প্রমাণ মেলেনি। নষ্ট হয় শ্রীলঙ্কার একটি রিভিউ।

পরের ওভারেই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েছে সফরকারীরা।

নামেননি তামিম, ব‍্যাটিংয়ে লিটন

উইকেট না হারালেও বড় একটা ধাক্কায়ই খেল বাংলাদেশ। ক্র‍্যাম্পের জন‍্য চা-বিরতির পর ব‍্যাটিংয়ে নামেননি সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল। ১৩৩ রান করা বাঁহাতি এই ওপেনারের জায়গায় ব‍্যাটিংয়ে নামলেন লিটন দাস।

প্রথম সেশনের শেষ দিকে বোঝা যাচ্ছিল তামিমের অস্বস্তি। এক-দুই নেওয়ার পথে তার গতি ছিল মন্থর।

খুব বেশিক্ষণ হয়নি ক্রিজে এসেছেন মুশফিকুর রহিম। এর মধ‍্যে থিতু ব‍্যাটসম‍্যান তামিম মাঠ ছাড়ায় বাংলাদেশকে চেপে ধরার সুযোগ পেয়ে গেল শ্রীলঙ্কা।

১২ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর তামিম ও মুশফিক জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন। তাতে একটু করে সরে যাচ্ছিল চাপ। এখন লিটনকে নিয়ে আবার নতুন করে সব শুরু করতে হবে মুশফিককে।

৩ উইকেটের সেশন 

তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন ভালো হলো না বাংলাদেশের। প্রথম সেশনে যেখানে ২৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলেছিল ৮১ রান। পরের সেশনে ২৫ ওভারে ৬৩ রান তুলতে স্বাগতিকরা হারাল ৩ উইকেট।

ফিফটি করে মাহমুদুল হাসান জয়ের বিদায়ে ভাঙে ১৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক বিদায় নেন দ্রুতই।

দুই জনই কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পাওয়া কাসুন রাজিথার শিকার। তার হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়ায় শ্রীলঙ্কা।

মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল। চা-বিরতিতে ৭২ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২২০। এখনও পিছিয়ে ১৭৭ রানে।

তামিম ২১৭ বলে ১৫ চারে ১৩৩ রানে খেলছেন। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া থেকে ১৯ রান দূরে আছেন তিনি।

৩৬ বলে একটি চারে ১৪ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিক।

বাংলাদেশের দুইশ

রমেশ মেন্ডিসের বল লেগ সাইডে খেলে এক রান নিলেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের দলীয় রান স্পর্শ করল দুইশ, ৬৫.১ ওভারে।

মাঝে দ্রুত ৩ উইকেট হারানোর পর মুশফিককে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করছেন তামিম ইকবাল। ২০৪ বলে ১২৭ রানে খেলছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। মুশফিক অপরাজিত ৭ বলে ১ রান করে।

জীবন পেলেন তামিম

একবার রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া তামিম ইকবাল এবার জীবন পেলেন ক্যাচ দিয়ে।

অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসকে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বল ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় স্লিপে। তবে কঠিন ক্যাচটা নিতে পারেননি ধনঞ্জয়া ডি সিলভা।

তখন ১১৪ রানে খেলছিলেন তামিম।

বাজে শটে আউট মুমিনুল

টেস্টে খারাপ সময় কাটানো মুমিনুল হক ব্যর্থ হলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসেও। বাংলাদেশ অধিনায়ক বাজে শট খেলে আউট হয়ে গেলেন ১৯ বলে ২ রান করে।

ডানহাতি পেসার কাসুন রাজিথার লেংথ বল ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু ব্যাট ও প্যাডের মাঝে ফাঁক ছিল অনেকটা। সেই ফাঁক গলে বল ভেঙে দেয় স্টাম্প।

এই নিয়ে টানা পাঁচ ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ হলেন মুমিনুল।

কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়ে নিজের প্রথম ৪ ওভারে ৮ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিলেন রাজিথা।

একটা পর্যায়ে বিনা উইকেটে ১৬২ থেকে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩ উইকেটে ১৮৪।

১১২ রানে খেলছেন তামিম ইকবাল। নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।

রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন তামিম

অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে মিস করেন তামিম। কট বিহাইন্ডের আবেদনে আঙুল তুলে দেন আম্পায়ার।

সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের ওপেনার নেন রিভিউ। আলট্রা এজ-এ অবশ্য ব্যাটে বলের স্পর্শের প্রমাণ মেলেনি। বেঁচে যান তামিম।

তখন ১০২ রানে খেলছিলেন তিনি।

ব্যর্থ শান্ত

তিন নম্বরে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। ২২ বলে ২ রান করে ফিরলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

তার উইকেট পেলেন এমন একজন, এই টেস্টে যার খেলার কথাই ছিল না! বিশ্ব ফার্নান্দোর কনকাশন সাব হিসেবে তৃতীয় দিন খেলার সুযোগ পেয়ে নিজের প্রথম ওভারেই সাফল্য পেলেন কাসুন রাজিথা।

ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন শান্ত।

৫৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১৭৩।

১৬৯ বলে ১০২ রানে খেলছেন তামিম ইকবাল। নতুন ব্যাটসম্যান অধিনায়ক মুমিনুল হক।

তামিমের সেঞ্চুরি নম্বর ১০

৯৫ থেকে পেসার আসিথা ফার্নান্দোকে পুল করে চার মেরে তামিম ইকবাল পৌঁছে গেলেন ৯৯ রানে। পরের বল লেগ সাইডে ঠেলে তিনি পা রাখলেন কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায়, সেঞ্চুরি।

১৬২ বলে বাঁহাতি ওপেনার পূর্ণ করলেন সেঞ্চুরি। যেখানে চার ১২টি। 

টেস্টে ১৬ ইনিংস পর সেঞ্চুরি পেলেন তামিম। সবশেষ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিল্টনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ১২৬ রানের ইনিংস।

সব মিলিয়ে এটি তার দশম টেস্ট সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল অধিনায়ক মুমিনুল হকের, ১১টি।

ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে তামিমের এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। প্রথমটি ছিল সেই ২০১৪ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৯।

জয়ের বিদায়ে থামল জুটি

লাঞ্চ বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পেল শ্রীলঙ্কা। মাহমুদুল হাসান জয়কে ফিরিয়ে ১৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙলেন আসিথা ফার্নান্দো।

ডানহাতি পেসারের লেগ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল লেগ সাইডে ঘোরাতে চেয়েছিলেন জয়। বল তার গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে।

১৪২ বলে ৯ চারে তরুণ ওপেনার খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস।

৪৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ১৬২।

১৫৫ বলে ৯৪ রানে খেলছেন তামিম ইকবাল। নতুন ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত।

বাংলাদেশের দারুণ সেশন

তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এই সেশনে ২৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে স্বাগতিকরা তুলেছে ৮১ রান।

প্রথম ঘণ্টায় ১৪ ওভারে আসে ৫৮ রান। পরের ঘণ্টায় কমে আসে রানের গতি, ১৪ ওভারে ২৩।  

৩৫ রান নিয়ে ব্যাটিং শুরু করে দিনের শুরুতে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তামিম তুলে নেন ফিফটি। পরে কমে যায় তার রান তোলার গতি। দেখেশুনে খেলে এখন তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন সেঞ্চুরির দিকে।

আগের টেস্টে জোড়া শূন্যর পর জয় এবার তুলে নিয়েছেন ফিফটি। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরপরই মনোযোগ হারিয়ে একবার ক্যাচ তুলে দেন তিনি, তবে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন লাসিথ এম্বুলদেনিয়া।

উইকেট এখনও যথেষ্ট ব্যাটিং সহায়ক। শ্রীলঙ্কার বোলাররা খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেননি।

লাঞ্চ বিরতিতে ৪৭ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ১৫৭। এখনও পিছিয়ে ২৪০ রানে।

তামিম ১৫২ বলে ১০ চারে ৮৯ রানে খেলছেন। ১৩৪ বলে ৯ চারে ৫৮ রানে ব্যাট করছেন জয়।

বিশ্বর কনকাশন সাব রাজিথা

টেস্টের মাঝপথে একটি ধাক্কা খেল শ্রীলঙ্কা। আগের দিন ব্যাটিংয়ের সময় হেলমেটে বলের আঘাত পাওয়া বাঁহাতি পেসার বিশ্ব ফার্নান্দো ছিটকে গেলেন ম্যাচ থেকে। তার কনকাশন সাব হিসেবে একাদশে নেওয়া হলো আরেক পেসার কাসুন রাজিথাকে।

দ্বিতীয় দিন চা বিরতির একটু আগে পেসার শরিফুল ইসলামের বলে হেলমেটে আঘাত পান বিশ্ব। বিরতির পর তিনি আর ব্যাটিংয়ে নামেননি। পরে আবার ব্যাটিংয়ে নামেন, থাকেন অপরাজিত। বাংলাদেশের ইনিংসে বোলিং করেন তিনি ৪ ওভার। ৪ ওভার বোলিং করেন তৃতীয় দিন সকালেও। প্রথম ঘণ্টার পর তার ছিটকে যাওয়ার খবর আসে।

জীবন পেলেন জয়

ফিফটি করার পরপরই আউট হতে বসেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তবে তার ক্যাচ ফেলেছেন লাসিথ এম্বুলদেনিয়া।

পেসার আসিথা ফার্নান্দোর শর্ট বল হুক করতে চেয়েছিলেন জয়। ব্যাটে খেলতে পারেননি ঠিকমতো। ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ ফেলেন এম্বুলদেনিয়া, জীবন পাওয়ার পাশাপাশি জয় পেয়ে যান বাউন্ডারি।

তখন ৫১ রানে ব্যাট করছিলেন তরুণ ওপেনার। জীবন পাওয়ার পর এগিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেন সঙ্গী তামিম ইকবাল। আবার মনোযোগী হয়ে ওঠেন জয়, ওভারের বাকি বলগুলো ছেড়ে দেন তিনি।

জোড়া শূন্যর পর জয়ের ফিফটি

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তবে দ্বিতীয় টেস্টে দুই ইনিংসেই তিনি আউট হন শূন্য রানে। সেই দুঃস্মৃতি পেছনে ফেলে তরুণ ওপেনার পরের টেস্টেই ঘুরে দাঁড়ালেন দারুণভাবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করলেন ফিফটি।

৪৯ থেকে পেসার আসিথা ফার্নান্দোর বল লেগ সাইডে খেলে ডাবল নিয়ে জয় পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ১১০ বলে। পাঁচ টেস্টের ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ফিফটি।

৩৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ১৪০।

১১৪ বলে ১০ চারে ৭৯ রানে খেলছেন তামিম ইকবাল, আর জয় ১১১ বলে ৮ চারে ৫১ রানে ব্যাট করছেন।

প্রথম ঘণ্টায় রানের জোয়ার

তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে তৃতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টা দুর্দান্ত কাটল বাংলাদেশের। এই সময়ে ১৪ ওভারে স্বাগতিকরা কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলল ৫৮ রান। ওভারপ্রতি রান চারের বেশি।

দিনের শুরু থেকে দারুণ খেলছেন দুই ওপেনার। শ্রীলঙ্কার বোলাররা তেমন সুযোগই পাচ্ছেন না। সাবলীল আর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তামিম। ৩৫ রানে দিন শুরু করে তিনি অপরাজিত আছেন ১০৪ বলে ১০ চারে ৭৬ রানে।

আগের টেস্টে দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হওয়া জয় খেলছেন দেখেশুনে। সুযোগ পেলে মারছেন বাউন্ডারি। ৯৮ বলে ৮ চারে তিনি খেলছেন ৪৮ রানে।

৩৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর বিনা উইকেটে ১৩৪।

জুটির সেঞ্চুরিতে কাটল খরা

বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল ডিপ পয়েন্টে পাঠিয়ে এক রান নিলেন তামিম ইকবাল। এতে মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে তার উদ্বোধনী জুটি রান স্পর্শ করল শতরান। কাটল দীর্ঘ খরা।

টেস্টে ৬১ ইনিংস পর শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেল বাংলাদেশ। এর আগে সবশেষ ২০১৭ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই গলে ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তামিম ও সৌম্য সরকার।

তৃতীয় দিনের শুরু থেকে সাবলীল ব্যাটিং করছেন তামিম। সুযোগ পেলেই মারছেন বাউন্ডারি। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন জয়।

২৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর বিনা উইকেটে ১০৪।

৭৯ বলে ৮ চারে ৫৭ রান ব্যাট করছেন তামিম, আর জয় ৭৫ বলে ৬ চারে ৩৭ রান খেলছেন।

আগ্রাসী ব‍্যাটিংয়ে তামিমের ফিফটি

৩৫ রানে ব্যাটিং শুরু করে দিনের পঞ্চম ওভারেই পঞ্চাশে পা রাখলেন তামিম ইকবাল। অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসকে কাট করে চার মেরে ৩২তম টেস্ট ফিফটি করলেন ৭৩ বলে।

শ্রীলঙ্কা দিনের বোলিং শুরু করে মেন্ডিসকে দিয়ে। ওভারে আসে ৩ রান। পরের ওভারে পেসার বিশ্ব ফার্নান্দোর প্রথম দুই বলে দুটি বাউন্ডারি মারেন তামিম। প্রথমটি গালি ও স্লিপ ফিল্ডারের মাঝ দিয়ে। পরেরটি গালি দিয়ে।

উইকেট ব্যাটিং সহায়ক

প্রথম দুই দিনে জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের উইকেট ছিল ব্যাটিং সহায়ক।  তৃতীয় দিনেও হয়তো বদলাচ্ছে না উইকেটের চরিত্র। ধারাভাষ্যকার ও বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার আতহার আলি খান পিচ রিপোর্টে বললেন, এখনও যথেষ্ট ব্যাটিং সহায়ক উইকেট।

লিড নেওয়ার লক্ষ‍্য নিয়ে বাংলাদেশ

দ্বিতীয় দিন প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে চারশর আগে থামানোর পর তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ব্যাটে বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে দারুণ। স্বাগতিকরা দিন শেষ করেছে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭৬ রান তুলে। 

তামিম দিন শেষ করেন ৫ চারে ৫২ বলে ৩৫ রান করে, জয় অপরাজিত ৪ চারে ৬৬ বলে ৩১ করে। 

এই দুজনের সৌজন্যে ১৩ ইনিংস পর টেস্টে অর্ধশত রানের উদ্বোধনী জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ। এবার তাদের সামনে আরেকটি খরা কাটানোর হাতছানি। 

২০১৭ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই গলে ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন তামিম ও সৌম্য সরকার। সেই থেকে এবারের টেস্টের আগ পর্যন্ত ৬১ ইনিংসে শুরুর জুটিতে আর শতরান পায়নি বাংলাদেশ। এবার কাটবে সেই খরা?

সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। তবে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু হবে নির্ধারিত সময়েই। 

দ্বিতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৩৯৭

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৯ ওভারে ৭৬/০ (জয় ৩১*, তামিম ৩৫*; বিশ্ব ৪-০-১৭-০, আসিথা ৪-১-১৯-০, রমেশ ৭-১-১৯-০, এম্বুলদেনিয়া ৪-০-১৯-০)