‘ঈশ্বরের দেওয়া’ ১৯৯ রানেই খুশি ম্যাথিউস

আউট হওয়ার ঠিক পরপর এক রানের জন্য এক সমুদ্র আক্ষেপ থাকতে পারে। তবে মনের ভেতরের সেই উথাল-পাথাল ঢেউ নিস্তরঙ্গ হতে থাকে ধীরে ধীরে। সময়ের সঙ্গে প্রাপ্তির জোয়ারও প্রশান্তি বইয়ে দেয় হৃদয়ের অলিন্দে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস যেমন ভুলে গেছেন ১ রানের হতাশা। বরং ১৯৯ রান করতে পেরেই তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন স্রষ্টার প্রতি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকচট্টগ্রাম থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 May 2022, 04:11 PM
Updated : 16 May 2022, 05:07 PM

বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে যখন এলেন ম্যাথিউস, এর ঘণ্টা দুয়েক আগেই ঘটে গেছে ট্র্যাজেডি। সাড়ে ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অসাধারণ ব্যাট করে তিনি যখন ডাবল সেঞ্চুরির দুয়ারে, তখনই আত্মঘাতী পদক্ষেপ। ওভারের শেষ বলে তাকে বিরত রাখতে বাংলাদেশের অধিনায়ক ফিল্ডিং সাজালেন সিঙ্গেল আটকাতে। তিনি দুঃসাহসী হয়ে চেষ্টা করলেন বড় শট খেলতে। খেসারত দিলেন মাইলফলকের দুয়ারে থমকে গিয়ে। ১৯৯ রানে আউট!

শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে দ্বিতীয় আর বাংলাদেশের মাঠে ১৯৯ রানে আউট হওয়া প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। এমন রেকর্ডে নিজের নাম দেখতে চান না কেউই। তবে রেকর্ড অনাহূত হলেও অত রান করতে পেরে খুশি ম্যাথিউস।

“অবশ্যই আর একটি রান করতে পারলে ভালো হতো। তবে ইশ্বর যা দেয়, সেটা নিয়েই খুশি থাকতে হবে। আমি কৃতজ্ঞ যে ভালো একটি ইনিংস খেলতে পেরেছি। আশা করি, এই ইনিংস দলকে জেতাতে সহায়তা করবে।”

আউটের পেছনে নিজের শট আর নিয়তি, দুটিরই দায় দিচ্ছেন ম্যাথিউস। পেছন ফিরে তাকিয়ে তিনি হাসতেও পারলেন এমন হৃদয়ভাঙা আউট নিয়ে।

“শটটি আমি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম। ঠিকমতো লাগাতে পারিনি। এরকম দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেই থাকে।”

“ভেবেছিলাম ওভারের শেষ বল, ওই বলেই রান নিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করব। আমি ঠিকমতো খেলতে পারিনি এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাকিব ক্যাচ নিয়ে নেয়। ওই এক রান করতে পারলে ভালো লাগত, তবে যেটা বললাম, এটাই ক্রিকেট!”

টেস্টের প্রথম দিন প্রথম সেশনে ক্রিজে গিয়েছিলেন তিনি। ৫৭৮ মিনিটের ম্যারাথন ইনিংস খেলে আউট হন দ্বিতীয় দিন শেষ সেশনে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। মে মাসের প্রচণ্ড গরমে শরীর যে বিদ্রোহ করতে বসেছিল, তা তিনি অকপটেই বললেন। শোনালেন সেই চরম গরমকে জয়ের গল্পও।

“সত্যি বলতে, এই গরমে আমি শ্রান্তিতে প্রায় নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছিলাম। ৪২ ডিগ্রি ছিল তাপমাত্রা, মাঠে গরমে সিদ্ধ হওয়ার মতো অবস্থা। তবে আমি জানতাম, একবার শুরুটা ভালো করতে পারলে, পরিস্থিতি ও কন্ডিশন যেটাই হোক, যদি থিতু হতে পারি, আমাকে এগিয়ে যেতে হবে। এই ধরনের চরম প্রতিকূলতা পরিস্থিতির জন্যই তো আমরা ফিটনেস ট্রেনিং বা এসব করে থাকি।”

“কন্ডিশন যেমনই হোক, সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে পারফর্ম করতে হবে। পর্দার আড়ালে কোচরা আমাদের নিয়ে অনেক কাজ করেন এই সব পরিস্থিতি সামলানোর জন্যই।”