প্রথম দিন শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৫৮/৪ |
ম্যাথিউসের লড়াকু সেঞ্চুরি, পিছিয়ে বাংলাদেশ
দিনের প্রথম সেশনে এলো দুই উইকেট। তবে দুই ওপেনারকে দ্রুত ফেরানোর সুবিধা নিতে পারল না বাংলাদেশ। লড়াকু সেঞ্চুরিতে দলকে এগিয়ে নিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৮। ২১৩ বলে ১৪ চার ও এক ছক্কায় ১১৪ রানে খেলছেন ম্যাথিউস। ৭৭ বলে দুই ছক্কায় দিনেশ চান্দিমালের রান ৩৪।
১৬ ওভারে ৭১ রান নিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। চমৎকার কিছু ডেলাভারির সঙ্গে বেশ কিছু আলগা বোলিং করে ওভার প্রতি প্রায় সাড়ে চার করে রান দিয়েছেন তিনি।
নিখুঁত লাইন-লেংথে বোলিং করে ১৯ ওভারে কেবল ২৭ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৩১ ওভারে ৭৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট।
প্রথম সেশনে দুই ওপেনারকে বিদায় করে দেওয়া বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সেশনে হতাশ করেন ম্যাথিউস ও কুসল মেন্ডিস। তৃতীয় সেশনের প্রথম বলেই মেন্ডিসকে আউট করার পর দ্রুত ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ফিরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।
তবে চান্দিমালকে নিয়ে স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন ম্যাথিউস। এই কন্ডিশনে কেমন ব্যাটিং প্রয়োজন তার প্রামাণ্য যেন ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিটি। বাজে বলে মেরেছেন, ভালো বল হলে ঠেকিয়ে গেছেন। তবে সব সময়ই চেষ্টা করেছেন রানের চাকাটা সচল রাখতে। অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি নেননি খুব একটা।
চান্দিমাল দুই ছক্কায় চাপ সরিয়ে নেওয়ার পর এগিয়ে যাচ্ছেন সাবলীলভাবে। এরই মধ্যে ম্যাথিউসের সঙ্গে ১৪৮ বলে গড়েছেন ৭৫ রানের জুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৫৮/৪ (ওশাদা ৩৬, করুনারত্নে ৯, কুসল মেন্ডিস ৫৪, ম্যাথিউস ১১৪*, ধনাঞ্জয়া ৬, চান্দিমাল ৩৪*; শরিফুল ১৩-১-৩৮-০, খালেদ ১১-১-৪৫-০, নাঈম ১৬-২-৭০-২, তাইজুল ৩১-৮-৭৩-১, সাকিব ১৯-৭-২৭-১)
দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিয়ে বাউন্ডারি হজম করলেন শরিফুল ইসলাম। চমৎকার এক ফ্লিকে চার মেরে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস পৌঁছে গেলেন নতুন উচ্চতায়।
আগের সেরা ৮৬ ছাপিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
১৮৩ বলে ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি পেলেন ম্যাথিউস। তার ফিফটি এসেছিল ১১১ বলে।
তাইজুল ইসলামের করা পরের ওভারে সিঙ্গেল নিয়ে জুটির রান পঞ্চাশে নিয়ে যান দিনেশ চান্দিমাল, ৯৬ বলে।
সুযোগ পেলেই দুই ব্যাটসম্যান মারছেন বাউন্ডারি। মাঝে মধ্যে একটু ঝুঁকিও নিচ্ছেন। তবে সেগুলো কাজেই লাগছে। তাতে বাড়ছে রানের গতি।
সফল রিভিউ, সাকিবের উইকেট
চা-বিরতির পর বল হাতে নিয়েই সাফল্য পেলেন সাকিব আল হাসান। চমৎকার এক ডেলিভারিতে বিদায় করে দিলেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে।
পা বাড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ধনাঞ্জয়া। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে প্যাডে লেগে ক্যাচ যায় স্লিপের দিকে। প্রথম স্লিপ থেকে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে ঝাঁপিয়ে মুঠোয় নেন মাহমুদুল হাসান জয়।
আম্পায়ার আউট না দিলে রিভিউ নেন মুমিনুল হক। দুটি ব্যর্থ রিভিউয়ের পর এবার সফল হয় বাংলাদেশ। আল্ট্রা এজে ব্যাটে বল স্পর্শ করার প্রমাণ মেলার পর পাল্টায় সিদ্ধান্ত। ভাঙে ২৫ রানের জুটি।
২৭ বলে ধনাঞ্জয়া করেন ৬ রান।
৬৫.২ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ৪ উইকেটে ১৮৩। ক্রিজে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সঙ্গী দিনেশ চান্দিমাল।
সুযোগ হাতছাড়া
দারুণ বোলিং করে যাওয়া তাইজুল ইসলাম পেতে পারতেন আরেকটি উইকেট। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে স্লিপে ক্যাচ নিতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়।
দিনের শুরু থেকে স্লিপে ছিলেন সাকিব আল হাসান। চা-বিরতির পর কিছুটা সময় মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। পরে ফিরলেও সেখানে আর দাঁড়াননি।
স্পিন ও বাউন্সের জন্য ঠিক মতো খেলতে পারেননি ম্যাথিউস। ব্যাটের কানায় লেগে যায় প্রথম স্লিপের পাশ দিয়ে। ঝাঁপিয়ে পড়লেও হাত ছোঁয়াতে পারেননি জয়। জীবনের সঙ্গে বাউন্ডারিও পেয়ে যান ম্যাথিউস। সে সময় ৬৯ রানে ছিলেন তিনি।
একটুর জন্য হলো না
তৃতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই মিলতে পারতো আরেকটি উইকেট। কিন্তু সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ভীষণ কঠিন ক্যাচ গ্লাভসে নিতে পারেননি লিটন দাস।
লেগ স্টাম্পের বাইরের বল ম্যাথিউসের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ছুটছিল কিপারের পাশ দিয়ে। ডাইভ দিয়ে ক্যাচ নিতে চেষ্টা করেন লিটন কিন্তু একটুর জন্য বলের নাগাল পাননি এই উইকেট কিপার।
চা-বিরতির পর প্রথম বলেই উইকেট
হতাশার সেশন পেরিয়েই উইকেটের দেখা পেল বাংলাদেশ। চা-বিরতির পর প্রথম বলেই কুসল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে দিলেন তাইজুল ইসলাম।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর নিজেকে পুরোপুরি গুটিয়ে নিয়েছিলেন মেন্ডিস। মাঝে তেমন একটা শট খেলার চেষ্টা করেননি তিনি।
তাইজুলের বলটি ছিল মারার মতোই। শর্ট বল স্পিন করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। অনায়াসেই হতে পারত বাউন্ডারি। মেন্ডিস চেষ্টা করলেন লেগে ঘুরাতে, ঠিক মতো পারলেন না, সহজ ক্যাচ হয়ে গেল মিডউইকেটে। ভাঙল ২০৯ বল স্থায়ী ৯২ রানের জুটি।
১৩১ বরে তিন চারে ৫৪ রান করেন মেন্ডিস।
৫৬.১ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৫৮। ক্রিজে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সঙ্গী ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
বাংলাদেশের হতাশার সেশনে ম্যাথিউসেরও ফিফটি
প্রথম সেশনে ২৪ ওভারে মিলেছিল দুই ওপেনারের উইকেট। দ্বিতীয় সেশনে ৩২ ওভারে মিলল না একটিও। বাংলাদেশের হতাশার সেশনে কুসল মেন্ডিসের পর ফিফটি পেলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসও।
চা-বিরতিতে যাওয়ার সময় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৫৮। দুই ব্যাটসম্যানই খেলছেন ৫৪ রানে। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর মন্থর হয়ে যাওয়া মেন্ডিস খেলেছেন ১৩০ বল। ম্যাথিউস খেলেছেন ১১৪ বল।
অন্য বোলাররা আলগা বল দিয়ে অকাতরে রান বিলিয়ে যাওয়ার পর কিছুটা সময় সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামকে দিয়ে টানা বোলিং করান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই সময়ে রানের জন্য বেশ ভুগতে হয় দুই ব্যাটসম্যানকে।
সাকিব রানের খুব একটা সুযোগই দেননি। ১০ ওভারের পাঁচটিই নেন মেডেন। তার বোলিংয়ে কেবল ৯ রান নিতে পারেন মেন্ডিস ও ম্যাথিউস। খারাপ করেননি তাইজুলও, ১৬ ওভারে ৫ মেডেনসহ দিয়েছেন কেবল ৩২ রান।
ব্যাটসম্যানদের বেশ চাপের মধ্যে থাকলেও উইকেট বের করে নিতে পারেনি বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে সৈয়দ খালেদ আক্রমণে এলে চাপ কিছুটা সরে যায়। পেসারের ওভারে ম্যাথিউস মারেন দুই বাউন্ডারি। প্রথম চারের পর সিঙ্গেল পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তিনি, ১১১ বলে।
কোনো উইকেট না হারিয়ে এই সেশনে ৮৫ রান যোগ করে দৃঢ় ভিত পেয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। জমে যাওয়া জুটি ভাঙার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তৃতীয় সেশনে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন ম্যাথিউস
তাইজুল ইসলামের বলে আম্পায়ার কট বিহাইন্ড দেওয়ার পর রিভিউ নিয়ে বাঁচলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের স্পিন করে বেরিয়ে যাওয়া বল পা বাড়িয়ে খেলার চেষ্টায় সফল হননি ম্যাথিউস। বল গ্লাভসে নিয়েই উল্লাসে মাতেন কিপার লিটন দাস।
বল ব্যাট ছুঁয়েছে কিনা নিশ্চিত ছিলেন না ম্যাথিউস। একটু সময় নিয়ে রিভিউ নেন তিনি। একটা শব্দ শোনা গেলেও আল্ট্রা এজে ব্যাট স্পর্শের কোনো প্রমাণ মেলেনি। বেঁচে যান ম্যাথিউস। সে সময় ৩৮ রানে ছিলেন তিনি।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে মেন্ডিসের পঞ্চাশ
দুই বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান আক্রমণে আসার পর কমেছে রানের গতি। দুই ব্যাটসম্যানও খেলছেন সাবধানে। এর মধ্যেই সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ স্পর্শ করেছেনন কুসল মেন্ডিস, ৯৩ বলে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তার দ্বিতীয় ফিফটি, সেঞ্চুরি আছে দুটি। ক্যারিয়ার সেরা ১৯৬ রানও বাংলাদেশের বিপক্ষেই। প্রিয় প্রতিপক্ষ পেয়ে আবার দাঁড়িয়ে গেছেন তিনি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের সঙ্গে চমৎকার জুটিতে টানছেন দলকে।
৪৩ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ২ উইকেটে ১৩৯। ৯৪ বলে ৫১ রানে খেলছেন মেন্ডিস। ৭২ বলে ম্যাথিউসের রান ৩৮।
মেন্ডিস-ম্যাথিউসের জুটিতে পঞ্চাশ
শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছেন কুসল মেন্ডিস। অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জলো ম্যাথিউস মন দিয়েছেন রানের গতি বাড়ানোর দিকে। দুই জনের ব্যাটে ম্যাচে প্রথম পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি পেয়েছে শ্রীলঙ্কা, ৬৪ বলে।
জুটিতে দুই জনেরই অবদান সমান- ২৩। বাকি চার রান এসেছে অতিরিক্ত থেকে।
বোলিংয়ে সাকিব
প্রথম সেশনে দুটি উইকেট নেওয়া সাইফ হাসান আলগা বোলিংয়ে দ্বিতীয় সেশনে রান দিচ্ছিলেন অকাতরে। ৩৬তম ওভারে তার জায়গায় বোলিংয়ে এলেন সাকিব আল হাসান। চট্টগ্রাম টেস্টে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনারের এটাই প্রথম ওভার।
মাত্র ১ রান দেন সাকিব। সেটিও হয়তো হতো না, যদি প্রথম বলেই মিস ফিল্ডিং না করতেন নাঈম।
১৩ ওভারে দুটি মেডেনসহ ৫৮ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন নাঈম।
জমে গেছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও কুসল মেন্ডিসের জুটি। তাদের ব্যাটে লাঞ্চের পর দ্রুতই তিন অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা।
দুই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের জুটিতে রান আসছে ওভারপ্রতি সাড়ে চার করে। সাড়ে তিন করে রান সংগ্রহ করা শ্রীলঙ্কা ৩১ ওভারে পৌঁছে গেছে একশ রানে।
৩১ ওভারে সফরকারীদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১১০। ৬০ বলে ৪২ রানে খেলছেন মেন্ডিস। ৩৪ বলে ম্যাথিউসের রান ১৮।
প্রথম সেশনে ২ উইকেট
মেহেদী হাসান মিরাজের চোটে টেস্টে ফেরা নাঈম হাসানের চমৎকার বোলিংয়ে প্রথম সেশনে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে বিদায় করেছে বাংলাদেশ।
প্রথম দিনের লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার সময় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৭৩। ৪৩ বলে ২৭ রানে খেলছেন কুসল মেন্ডিস। ৯ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
উইকেটে সবুজ ঘাসের ছোঁয়া আছে। বোলারদের জন্য শুরুতে কোনো সুবিধা আছে কি না সেটা বোঝার মতো বোলিং করতে পারেননি বাংলাদেশের পেসাররা। তবে খুব বেশি রানও দেননি তারা।
থিতু হওয়ার আগেই দিমুথ করুনারত্নেকে এলবিডব্লিউ করে দেন নাঈম। নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট পাওয়া এই অফ স্পিনার পরে কট বিহাইন্ড করে দেন আরেক ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দোকে।
প্রথম ঘণ্টায় মাত্র ১১ ওভার করতে পারে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ঘণ্টায় একটু উন্নতি হলেও করতে পারে কেবল ১৩ ওভার। পরের দুই সেশনে পুষিয়ে দিতে হবে ৬ ওভারের ঘাটতি।
রিভিউয়ে উন্নতির ছাপ রাখতে পারেনি বাংলাদশ। প্রথম সেশনে হারিয়েছে দুটি রিভিউ, দুটিই বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের বলে। প্রথমটিতে বল পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে, পরেরটিতে ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে।
করোনাভাইরাস থেকে সেরে ওঠে এই ম্যাচে খেলা সাকিব আল হাসান প্রথম সেশনে বোলিংয়ে আসেননি। শুরু থেকে স্লিপে ফিল্ডিং করছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।
লিটনের হেলমেটে কুসলের ব্যাট
নাঈম হাসানের শর্ট বল ক্রিজের গভীরে গিয়ে পুল করতে চেয়েছিলেন কুসল মেন্ডিস। ঠিক মতো শট খেলতে পারেননি, ফলো থ্রুয়ে ব্যাট চলে যায় আরও পেছনে। আঘাত হানে লেগে সরতে যাওয়া কিপার লিটন দাসের হেলমেটে।
হেলমেট পরে না থাকলে বাজেভাবে চোট পেতে পারতেন লিটন। বেশ জোরে লাগলেও হেলমেটের জন্যই কিছু হয়নি তার। চালিয়ে যান কিপিং।
আরেকটি ব্যর্থ রিভিউ
শরিফুল ইসলামের বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ। প্রথম সেশনেই দুটি রিভিউ হারিয়ে ফেলল দল।
অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে থেকে ম্যাথিউসকে চমকে দিয়ে ভেতরে ঢোকা বল ছোবল দেয় প্যাডে। তবে ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। তাতে ব্যর্থ হয় স্বাগতিকদের আরেকটি রিভিউ।
থিতু হয়ে গিয়েছিলেন ওশাদা ফার্নান্দো। এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাবলীল গতিতে। জমে গিয়েছিল কুসল মেন্ডিসের সঙ্গে তার জুটি। চমৎকার এক ডেলিভারিতে ফার্নান্দোকে কট বিহাইন্ড করে নিজেদর দ্বিতীয় উইকেট নিলেন নাঈম হাসান।
ওভার দা উইকেটে করা অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি পা বাড়িয়ে খেলার চেষ্টা করেন ওশাদা। ঠিক মতো পারেননি, ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে। ভাঙে ৮১ বল স্থায়ী ৪৩ রানের জুটি।
আম্পায়ার আবেদনে সাড়া দিলে সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন লঙ্কান ওপেনার। তবে আল্ট্রা এজে মেলে ব্যাটের বল স্পর্শর প্রমাণ। হতাশা নিয়ে ফেরেন ওশাদা। এক ছক্কা ও তিন চারে তিনি করেন ৩৬ রান।
২১.২ ওভারে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২ উইকেটে ৬৬। ক্রিজে কুসল মেন্ডিসের সঙ্গী অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
প্রথম ঘণ্টায় করুনারত্নের উইকেট
উইকেটে সবুজ ঘাসের ছোঁয়া আছে একটু। সেই সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি শরিফুল ইসলাম কিংবা সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তবে খুব বেশি রানও দেননি এই দুই পেসার। একমাত্র সাফল্য আসে নাঈম হাসানের হাত ধরে। তরুণ এই অফ স্পিনার এলবিডব্লিউ করে বিদায় করেন লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নেকে।
পানি পানের বিরতির সময় ১১ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ১ উইকেটে ৩৩।
দিনের দ্বিতীয় ওভারে কাট করে খালেদকে দুটি চার মেরে আক্রমণাত্মক শুরু করেন ওশাদা। পরে দশম ওভারে ছক্কায় ওড়ান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে। প্রথম ঘণ্টায় বাউন্ডারি কেবল এই তিনটিই।
আস্থার সঙ্গেই খেলছেন ওশাদা। শুরুতে সময় নিচ্ছেন কুসল মেন্ডিস।
বোলিংয়ে পরিবর্তন এনেই সাফল্য পেল বাংলাদেশ। দিমুথ করুনারত্নেকে এলবিডব্লিউ করে শুরুর জুটি ভাঙলেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান।
অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পড়ে অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বল কাট করেন লঙ্কান অধিনায়ক। তবে এর আগে ছুঁয়ে যায় তার প্যাড। জোরাল আবেদনে সাড়া দিয়ে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। ভাঙে ২৩ রানের উদ্বোধনী জুটি।
ওশাদা ফার্নান্দোর সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন করুনারত্নে। সফল হননি তিনি, তবে ইম্প্যাক্ট আম্পায়ার্স কল হওয়ায় টিকে থাকে রিভিউ।
১৭ বলে বাঁহাতি এই ওপেনার করেন ৯। ক্রিজে ওশাদার সঙ্গী কুসল মেন্ডিস।
শুরুতেই ব্যর্থ রিভিউ
দিনের পঞ্চম ওভারে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হলো বাংলাদেশ। ওভার দা উইকেটে বোলিং করা বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের বল ব্যাটে খেলতে পারেননি ওশাদা ফার্নান্দো, বল লাগে প্যাডে। আম্পায়ার জোরাল আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নেন মুমিনুল হক।
বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে, বল পিচ করেছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে। শুরুতেই নষ্ট হলো একটির রিভিউ।
সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডসের স্মরণে ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে মাঠে।
উত্তর কুইন্সল্যান্ডের টাউন্সভিলের কাছে শনিবার রাতে দুর্ঘটনায় পড়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুটি বিশ্বকাপ জেতা সাইমন্ডসের গাড়ি। অবসরের পর ওই এলাকাতেই থাকতেন ৪৬ বছর বয়সী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার।
২ স্পিনার, ২ পেসার নিয়ে শ্রীলঙ্কা
সবশেষ সিরিজে দলে আট পরিবর্তন এনে বাংলাদেশে এসেছে শ্রীলঙ্কা। একাদশে কিছু পরবির্তন তাই অনিবার্যই ছিল।
টসের সময়ে অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে জানালেন, ৭ ব্যাটসম্যান এবং দুই জন করে পেসার ও স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছেন তারা। তবে বেশ কিছু অলরাউন্ডার থাকায় বোলিংয়ে বেশ কিছু বিকল্প থাকবে লঙ্কান অধিনায়কের হাতে।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), ওশাদা ফার্নান্দো, কুসল মেন্ডিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দিনেশ চান্দিমাল, নিরোশান ডিকভেলা, রমেশ মেন্ডিস, বিশ্ব ফার্নান্দো, আসিথা ফার্নান্দো, লাসিথ এম্বুলদেনিয়া।
৩ স্পিনার, ২ পেসার নিয়ে বাংলাদেশ
করোনাভাইরাস থেকে সাকিব আল হাসান সেরে দলে যোগ দেওয়ার পর অনেক রকম কম্বিনেশনই সম্ভব ছিল। সেখান থেকে বাংলাদেশ বেছে নিয়েছে তিন স্পিনার ও দুই পেসার। শঙ্কা কাটিয়ে ফেরা সাকিবের সঙ্গে আছেন তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।
আঙুলের চোটে মেহেদী হাসান মিরাজ ছিটকে যাওয়ার পর দলে এসেছিলেন অফ স্পিনার নাঈম। এই তরুণ এবার চলে এলেন একাদশেও।
চোট ও অসুস্থতা কাটিয়ে একাদশে ফিরেছেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তার সঙ্গী সৈয়দ খালেদ আহমেদ। চোটের জন্য স্কোয়াডেই নেই পেসার তাসকিন আহমেদ। দলে থাকলেও একাদশে নেই আরেক গতিময় পেসার ইবাদত হোসেন।
বাংলাদেশ একাদশ: মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, শরিফুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা
সিরিজের প্রথম টেস্টে টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন দিমুথ করুনারত্নে। শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক নিলেন ব্যাটিং। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক জানান, টস জিতলে তিনিও ব্যাটিং নিতেন।
শ্রীলঙ্কাকে হারানোর অভিযান
নিয়মিত খেলার সুযোগ হলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়। দেশের মাটিতে আট টেস্ট খেলে জয় নেই একটিও। সব মিলিয়ে ২২ টেস্ট খেলে জয় কেবল একটি। ২০১৭ সালে কলম্বোয় নিজেদের শততম টেস্টে জিতেছিল বাংলাদেশ। উপমহাদেশের দলটির বিপক্ষে ব্যর্থতার চক্র থেকে বের হতে দেশের মাটিতে জয় চান অধিনায়ক মুমিনুল হক।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে রোববার সকাল ১০টায় শুরু হবে প্রথম টেস্ট।
চলতি বছর বাংলাদেশ কাটছে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অসধারণ জয় দিয়ে শুরু হয় বছর। পরের টেস্টেই অবশ্য দল হেরে যায় বড় ব্যবধানে। দক্ষিণ আফ্রিকায় সবশেষ সিরিজে হয় হোয়াইটওয়াশড।
দেশের মাটিতে সবশেষ সিরিজেও পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হয়েছিল বাংলাদেশ। আবার সাফল্যের পথে ফিরতে মুমিনুল মনে করেন টেস্টের ১৫ সেশনের মধ্যে নিজেদের করে নিতে হবে ১২-১৩টি সেশন।