ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে রেকর্ড গড়া ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে শিরোপা জিতিয়ে মেয়েদের ক্রিকেটে এপ্রিলের সেরায় সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গায় পেয়েছেন অ্যালিসা হিলি। যেখানে তার সঙ্গে আছেন ফাইনালেই ইংল্যান্ডের হয়ে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা ন্যাট সিভার ও উগান্ডার অলরাউন্ডার জ্যানেট এমবাবাজি।
গত মাসের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকাদের নাম মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা আইসিসি।
সাইমন হার্মার
বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১৫.১৫ গড়ে হার্মারের প্রাপ্তি ১৩ উইকেট। ডারবানে প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে এই অফ স্পিনার নেন ৭ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ২৯৮ রানের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে যায় স্রেফ ৫৩ রানে।
কলপ্যাক চুক্তি শেষে সাড়ে ছয় বছর পর এই সিরিজ দিয়ে ফেরা হার্মার পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় টেস্টে নেন ৬ উইকেট। দুই ইনিংসে বাংলাদেশ অল আউট ২১৭ ও ৮০ রানে। সফরকারীদের চার ইনিংসের প্রতিটিতে ৩ বা এর বেশি উইকেট নেন হার্মার। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার জেতে ২২০ রানে, দ্বিতীয়টিতে ৩৩২ রানে।
কেশভ মহারাজ
সিরিজে ১২.১২ গড়ে বাঁহাতি স্পিনার মহারাজ নেন সর্বোচ্চ ১৬ উইকেট। ৭টি করে উইকেট নেন দুই বার, দুবারই দ্বিতীয় ইনিংসে। এছাড়া দ্বিতীয় টেস্টে ব্যাট হাতে তিনি খেলেন ৯৫ বলে ৮৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। দুই ম্যাচেই তিনি হন ম্যাচ সেরা, জিতে নেন সিরিজ সেরার পুরস্কারও।
জাতিন্দার সিং
জাতিন্দার গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ লিগ টু-তে ৪টি ওয়ানডে খেলে রান করেন ২৫৯, গড় ৮৬.৩৩। পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে দুই ম্যাচে ওমানকে জেতাতে তিনি খেলেন অপরাজিত ১১৮ ও ৭৯ রানের ইনিংস। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান রান তাড়ায় ৫৩ রানের ইনিংস খেললেও ৪ রানে হেরে যায় তার দল।
অ্যালিসা হিলি
হিলি গত মাসে ম্যাচ খেলেন একটিই। বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডের বোলিং গুঁড়িয়ে এই ওপেনার খেলেন ১৩৮ বলে ২৬ চারে ১৭০ রানের ইনিংস। ছেলে-মেয়ে মিলিয়েই ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসের ফাইনালে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড এটি। ৩৫৬ পুঁজি গড়ে অস্ট্রেলিয়া জিতে নেয় রেকর্ড সপ্তম শিরোপা। হিলি আরেকটি বিধ্বংসী সেঞ্চুরি করেন সেমি-ফাইনালেও, সেটি ছিল অবশ্য মার্চ মাসে।
ন্যাট সিভার
ওই ফাইনালে বিশাল রান তাড়ার চ্যালেঞ্জে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে অপরাজিত ১৪৮ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন সিভার। তবু তার দল হেরে যায় ৭১ রানে। চার নম্বরে নেমে ১২১ বলে ১৫ চার ও একটি ছক্কায় গড়া সিভারের ইনিংসটি।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মাস সেরার মনোনয়ন পেলেন ২৯ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। প্রথমবার পেয়েছিলেন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে।
জ্যানেট এমবাবাজি
গত মাসে ব্যাট ও বল হাতে আলো ছড়িয়ে উগান্ডার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে মাস সেরার লড়াইয়ে জায়গা পেয়েছেন এমবাবাজি। উগান্ডা, নামিবিয়া ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজে ৬ টি-টোয়েন্টিতে ৭.১৮ গড়ে তিনি নেন সর্বোচ্চ ১১ উইকেট। যেখানে ৪ উইকেট ছিল দুই বার। ব্যাট হাতে ১১৮ রান করে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার ছিলেন তিনিই।
গত বছর থেকে আইসিসি মাস সেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করে। আইসিসির ভোটিং একাডেমি ও ক্রিকেট সমর্থকদের যৌথ ভোটে নির্বাচন করা হয় মাসের সেরা দুই ক্রিকেটার। ভোটিং একাডেমিতে আছেন জ্যেষ্ঠ ক্রীড়া সাংবাদিক, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকাররা। তারা ভোট দেন ই-মেইলে, আইসিসির নিবন্ধিত সমর্থকদের ভোট দিতে হয় আইসিসির ওয়েবসাইটে।
সেরার রায়ে ভোটিং একাডেমির ভোট বিবেচনায় নেওয়া হয় শতকরা ৯০ ভাগ, সমর্থকদের ভোট বাকি ১০ ভাগ।