খেলাঘরের আশা গুঁড়িয়ে ব্রাদার্সের অনায়াস জয়

দেয়ালে ঠেকে গেছে পিঠ। অবনমন এড়াতে নেই জয়ের বিকল্প। এমন সমীকরণের ম্যাচে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা করলেন হতাশ। মিডল অর্ডারে শচিন বেবির লড়াকু ফিফটিতে কোনোমতে দেড়শ পার করল খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ইমতিয়াজ হোসেনের চমৎকার ইনিংসে খেলাঘরের আশা ভেঙে দিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2022, 01:10 PM
Updated : 21 April 2022, 03:26 PM

ফতুল্লার খান সাহেব উসমান আলি স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রেলিগেশন লিগের ম্যাচে ৮ উইকেটে জিতেছে ব্রাদার্স। খেলাঘরকে ১৫২ রানে গুঁড়িয়ে দিয়ে তারা জয় তুলে নিয়েছে ১৩ বল বাকি থাকতে।

ব্রাদার্সের সঙ্গে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে টিকে গেল ১৩ বছর পর প্রতিযোগিতাটিতে ফেরা সিটি ক্লাব। ব্রাদার্সের পয়েন্ট ৮, সিটি ক্লাবের ৬। পরের মৌসুমে প্রথম বিভাগে খেলতে হবে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এবারের লিগ শেষ করা খেলাঘরকে।

ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে খেলাঘরের বিপদে হাল ধরে ৬ চারে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন ভারতীয় ব‍্যাটসম‍্যান শচিন বেবি। দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিনটি করে উইকেট নেন ব্রাদার্সের আবু হায়দার রনি ও রায়হান উদ্দিন।

রান তাড়ায় ইনিংস শুরু করতে নেমে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া ইমতিয়াজ জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ২ ছক্কা ও ১০ চারে তিনি খেলেন ৮৭ রানের ইনিংস।

বৃষ্টিতে মাঠ ভেজা থাকায় খেলা শুরু হয় দেরিতে। ৩৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে খেলাঘর। শুরুটা হয় তাদের বেশ বাজে। ৩৩ রানেই প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারায় দলটি। একজনও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফেরেন হাসানুজ্জামান। দুই ওভার পর বিদায় নেন ইলিয়াস সানি। আবু হায়দার রনিকে ফ্লিক করে আকাশে তুলে দেন অমিত মজুমদার। ক্যাচ নেন বোলার নিজেই।

এবারের মৌসুমের ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে থাকা অমিত হাসানও এদিন পারেননি দলকে টানতে। মানিক খানের সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান।

বিপর্যয়ে পড়া দলের হাল ধরেন শচিন ও প্রিতম কুমার। তাদের ৫৫ রানের জুটি ভাঙে এক ছক্কা ও ২ চারে ২৬ রান করা প্রিতমের বিদায়ে।

এরপর আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন খেলাঘরের বাকি ব্যাটসম্যানরা। সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝে এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে ৬৯ বলে ফিফটি তুলে নেন শচিন বেবি। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি।

জবাব দিতে নেমে দলকে দারুণ শুরু এনে দেন ইমতিয়াজ ও সাদিকুর রহমান। তাদের জুটিতে ৬৪ রান পায় ব্রাদার্স। টিপু সুলতানের বাঁহাতি স্পিনে তিনটি করে ছক্কা-চারে ৩৭ রান করা সাদিকুরের বিদায়ে ভাঙে দ্রুত এগোনো শুরুর জুটি। 

তিনে নেমে মোহাম্মদ আশরাফুল বোল্ড হয়ে যান ইলিয়াস সানির দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে। ততক্ষণে অবশ্য জয়ের পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে ব্রাদার্স।

এক প্রান্তে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে যান ইমতিয়াজ। ৬৬ বলে ফিফটি করেন এই ওপেনার। চারে নেমে অতিসাবধানী ব্যাটিংয়ে ৪১ বলে ১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন সাদমান ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি: ৩৫.১ ওভারে ১৫২ (হাসানুজ্জামান ৪, ইলিয়াস ৪, অমিত হাসান ৯, অমিত মজুমদার ১, শচিন বেবি ৬৪, প্রিতম ২৬, সালমান ৯, ইফতেখার ৬, মাসুন ২, নুর আলম ১২, টিপু ১*; আবু হায়দার ৭-০-২৭-৩, সোহাগ ৭-০-২০-১, মানিক ৬.১-০-২৯-২, আশরাফুল ১-০-৮-০, সজিব ৮-১-৩১-১, রাইহান ৬-০-২৯-৩)

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৩৪.৫ ওভারে ১৫৪/২ (ইমতিয়াজ ৮৭*, সাদিকুর ৩৭, আশরাফুল ৮, সাদমান ১৬*; মাসুম ৪-০-২৩-০, ইফতেখার ৬.৫-০-৩৬-০, নুর আলম ৬-০-২৮-০, শচিন বেবি ৪-১-১৫-০, টিপু ৭-০-২৯-১, ইলিয়াস সানি ৭-০-২২-১)

ফল: ব্রাদার্স ইউনিয়ন ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ইমতিয়াজ হোসেন