প্রথমবার উইজডেনের ‘লিডিং ক্রিকেটার ইন দা ওয়ার্ল্ড’ রুট

নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার মন খারাপের প্রহরে দারুণ এক স্বীকৃতির আনন্দের দোলা পেলেন জো রুট। ইংল্যান্ডের সদ্য বিদায়ী টেস্ট অধিনায়ক মনোনীত হয়েছেন উইজডেনের ‘লিডিং ক্রিকেটার ইন দা ওয়ার্ল্ড।’ মেয়েদের ক্রিকেটে লিডিং ক্রিকেটারের সম্মান পেয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার লিজেল লি।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2022, 05:23 AM
Updated : 21 April 2022, 08:58 AM

ক্রিকেটের বাইবেল খ্যাত উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাকের ২০২২ সালের সংস্করণ প্রকাশিত হয় বৃহস্পতিবার। ক্রিকেটের অনেক ইতিহাসের দলিল এই অ্যালমানাকের ১৫৯তম সংস্করণ এটি।

উইজডেনের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী ও সম্মানজনক স্বীকৃতি ‘বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের’ তালিকায় এবার জায়গা পেয়েছেন ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ ও রোহিত শর্মা, নিউ জিল্যান্ডের ডেভন কনওয়ে, ইংল্যান্ডের অলি রবিনসন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলের অলরাউন্ডার ডানে ফন নিকার্ক।

মূল ইংলিশ গ্রীষ্মে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফর্ম করা ক্রিকেটারদের বিবেচনায় নেওয়া হয় পাঁচ বর্ষসেরার বাছাইয়ে। একাধিকবার এই স্বীকৃতি দেওয়ার নিয়ম নেই।

জো রুটের লিডিং ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পাওয়ায় খুব বিস্ময়ের কিছু নেই। ইংল্যান্ড টেস্ট দলের পারফরম্যান্স ভালো না হলেও ব্যাট হাতে তার পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। গত বছর ১৫ টেস্টে ৬ সেঞ্চুরিতে ৬১ গড়ে ১ হাজার ৭০৮ রান করেন তিনি। এক পঞ্জিকাবর্ষে যা টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

এই ১৫ টেস্টে ইংল্যান্ড জয়ের দেখা পায় স্রেফ ৪টি। কিন্তু দলের বাজে সময়ের প্রভাব পড়েনি রুটের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে।

উইজডেনর ১৫৯তম সংস্করণের প্রচ্ছদ।

উইজডেনের বর্ষসেরার স্বীকৃতি দেড়শ বছরের বেশি পুরনো হলেও লিডিং ক্রিকেটারের খেতাব দেওয়া হচ্ছে ২০০৪ সাল থেকে। ২০০৩ সালে অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য প্রথমবার এই সম্মান পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং। পরেরবার পান আরেক অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি শেন ওয়ার্ন।

রুটের আগে গত দুই বছর ‘লিডিং ক্রিকেটার’ ছিলেন তার স্বদেশি বেন স্টোকস। এর আগে টানা তিন বছর এই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন বিরাট কোহলি।

টানা তিন বছর ‘লিডিং ক্রিকেটার’ কোহলি ছাড়া হতে পারেননি আর কেউ। স্টোকস ছাড়া টানা দুইবার হয়েছেন বিরেন্দর শেবাগ। টানা না হলেও দুইবার সেরা হয়েছেন কুমার সাঙ্গাকারাও।

এবার মেয়েদের ‘লিডিং ক্রিকেটার’ লিজেল লি গত বছর ওয়ানতেডে ৯০.২৮ গড়ে করেন ৬৩২ রান, গোটা বিশ্বে যা সর্বোচ্চ। টি-টোয়েন্টিতে ৮ ম্যাচে ১১৯.৫৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ২৩২ রান।

বর্ষসেরা পাঁচে ঠাঁই পাওয়া জাসপ্রিত বুমরাহ গত বছর ইংল্যান্ডে ভারতের টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত বোলিং করেন। শেষ টেস্টের আগে স্থগিত হওয়া সিরিজে ৪ টেস্টে ১৮ উইকেট নিয়ে বড় অবদান রাখেন দলের এগিয়ে থাকায়। ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে নেন ৯ উইকেট।

ওই সিরিজেই ৫২.৫৭ গড়ে ৩৬৮ রান করে সেরার তালিকায় জায়গা করে নেন ভারতের এখনকার অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

একই সিরিজে ২১ উইকেটে নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন অলি রবিনসন। গত বছরই তার টেস্ট অভিষেক। প্রথম আন্তর্জাতিক গ্রীষ্মে তার শিকার ছিল মোট ২৮ উইকেট। অভিষেকের পরপর পুরনো টুইটের জের ধরে যদিও বিতর্কে জড়ায় তার নাম। তবে পরে মাঠের পারফরম্যান্স দিয়েই আলো কেড়ে নেন। বর্ষসেরা পাঁচে ইংল্যান্ডের একমাত্র প্রতিনিধি তিনি।

গত বছর যে টেস্টে ৭ উইকেট নিয়ে অভিষেক রবিনসনের, সেই টেস্টেই অভিষেক ডেভন কনওয়ের। টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরুটা রাঙান তিনি লর্ডসে অসাধারণ এক ডাবল সেঞ্চুরিতে। পরের টেস্টেও খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। এরপর ফিফটি করেন ইংল্যান্ডেই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে। নিউ জিল্যান্ডের বাঁহাতি ব্যাটসম্যানও তাই পাঁচ সেরার একজন।

বর্ষসেরার পাঁচে একমাত্র নারী ক্রিকেটার ডানে ফন নিকার্ক। চোটের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেভাবে দেখা যায়নি তাকে। তবে দা হানড্রেড-এর মেয়েদের সংস্করণে দারুণ পারফরম্যান্সে ওভাল ইনভিন্সিবলসকে শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার। এই টুর্নামেন্ট ইংল্যান্ডে মেয়েদের ক্রিকেটের মোড় বদলে দিয়েছে বলে মনে করা হয়।

এছাড়াও ‘লিডিং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার ইন দা ওয়ার্ল্ড’ মনোনীত হয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। গত বছর ৫৬ গড়ে ২ হাজার ৩৬ রান করে তিনি গড়েন বিশ্বরেকর্ড।