শেখ জামালের জয়রথ চলছেই

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রাথমিক পর্বে কেবল একটি ম্যাচ হারা শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব সুপার লিগও শুরু করল জয় দিয়ে। নুরুল হাসান সোহানের দারুণ ইনিংস, পারভেজ রাসুলের অলরাউন্ড নৈপুণ্য এবং ইবাদত হোসেনের বোলিং ঝলকে তারা গুঁড়িয়ে দিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2022, 12:19 PM
Updated : 18 April 2022, 01:00 PM

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে সোমবার সুপার লিগের প্রথম ম্যাচে ৭২ রানে জিতেছে ইমরুল কায়েসের দল। ২৭১ রানের পুঁজি নিয়ে গাজী গ্রুপকে তারা গুটিয়ে দিয়েছে ১৯৯ রানে।

টানা ষষ্ঠ ম্যাচ জিতে শিরোপা জয়ের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল শেখ জামাল। তাদের পয়েন্ট ২০। দুই নম্বরে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পয়েন্ট ১৬।

শেখ জামালের নিয়মিত এক ওপেনারের অনুপস্থিতিতে ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে রবিউল ইসলাম রবি করেন ৮ চারে ৫৮ রান। চারে নেমে সোহান খেলেন এক ছক্কা ও ৬ চারে ৭৩ রানের ইনিংস।

ভারতের পারভেজ রাসুল ২ ছক্কা ও ৭ চারে করেন ৬৪ বলে ৭৩ রান। পরে বল হাতে ৩৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা এই অলরাউন্ডারই।

দলের জয়ে বল হাতে অবদান রাখেন ইবাদত, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিও। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ফেরা পেসার ইবাদতের শিকার ৩ উইকেট। ভালো বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে স্রেফ ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন তরুণ বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয়।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু পায় শেখ জামাল। সাইফ হাসান ও রবিউলের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৭৮ রান। সাইফের (২৫) বিদায়ে ভাঙে জুটি।

টুর্নামেন্ট জুড়ে শেখ জামালের মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করা রবিউল এদিন সৈকত আলির অনুপস্থিতিতে ইনিংস শুরু করে ৫৯ বলে স্পর্শ করেন ফিফটি। ভারতের ধ্রুব শোরের বল পা বাড়িয়ে খেলার চেষ্টায় হয়ে যান স্টাম্পড।

কয়েক ওভার পর ধ্রুবের অফ স্পিন জায়গা বানিয়ে খেলার চেষ্টায় অফ স্টাম্প হারান তিনে নামা ইমরুল (২৪)। এরপর দলকে টেনে নেন সোহান ও পারভেজ রাসুল। তাদের জুটিতে রান আসতে থাকে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে।

সোহান পঞ্চাশে পা রাখেন ৫৯ বলে। আসরে নিজের চতুর্থ ম্যাচ খেলতে নামা এই কিপার-ব্যাটসম্যানের যা দ্বিতীয় ফিফটি। পারভেজ রাসুলের পঞ্চাশ আসে ৫৪ বলে। তাদের জুটির রান একশ স্পর্শ করে ১০১ বলে।

ইনিংসের শেষ ওভারে গিয়ে ভাঙে দুজনের ১৪১ রানের জুটি। মারাজ মাহবুবের ফুল লেংথ বল হাঁটু গেড়ে খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান পারভেজ রাসুল। এক বল পর স্কুপ করে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন সোহান।

ওভারের শেষ বল ফুলটস পেয়ে লেগ সাইড দিয়ে ছক্কায় ওড়ান জিয়াউর রহমান।

রান তাড়ায় ইনিংসের চতুর্থ বলেই উইকেট হারায় গাজী গ্রুপ। ইবাদতের লেংথ বল উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ত্রিশ গজের ভেতর ধরা পড়েন গত যুব বিশ্বকাপে খেলা প্রান্তিক নওরোজ নাবিল।

সবশেষ তিন ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও দুই ফিফটি করা মেহেদি মারুফকে এবার ১৬ রানেই থামিয়ে দেন জিয়াউর। ৪ চারে ৩৭ রান করে ফেরেন ফরহাদ হোসেন।

আল আমিন জুনিয়র, আকবর আলিরাও করতে পারেননি কিছু। নিয়মিত উইকেট হারানো দলের এক প্রান্ত আগলে রাখেন ধ্রুব। ৬১ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন তিনি। ইবাদতের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে শেষ হয় তার এক ছক্কা ও ৪ চারে ৫৫ রানের ইনিংস।

গাজী গ্রুপের হয়ে আর কেউ যেতে পারেননি চল্লিশের ঘরেও। ২৫ বল আগেই গুটিয়ে যায় দলটির ইনিংস।

এদিন শেখ জামালের হয়ে মাঠে নামেন মেহেদি হাসান মিরাজ। জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডারের খেলার কথা ছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে থাকায় ঐতিহ্যবাহী দলটির হয়ে কোনো ম্যাচই খেলা হয়নি তার। সুপার লিগেও উঠতে পারেনি দলটি। পরে দুই দলের সমঝোতায় তাকে নেয় শেখ জামাল।

ব্যাটে-বলে অবশ্য কিছু করতে পারেননি মিরাজ। শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে করেন ২ বলে ১ রান। পরে ৬ ওভার করে ছিলেন উইকেটশূন্য।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৭১/৫ (সাইফ ২৫, রবিউল ৫৮, ইমরুল ২৪, সোহান ৭৩, রাসুল ৭৩, জিয়াউর ৭*, মিরাজ ১*; মারাজ ৮-১-৬২-২, খালেদ ১০-০-৬৭-০, আতিক ৮-১-৪৭-০, হুসনা হাবিব ১০-০-৩৭-০, ধ্রুব ১০-০-৩১-৩, আল আমিন জুনি. ৪-০-২৪-০)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৪৩.৫ ওভারে ১৯৯ (নাবিল ০, মারুফ ১৬, ফরহাদ ৩৭, ধ্রুব ৫৫, আল আমিন জুনি. ৪, আকবর ১৪, মিম মোসাদ্দেক ১৪, মারাজ ২১, হুসনা হাবিব ২৪, আতিক ১*, খালেদ ০; ইবাদত ৭-০-৪২-৩, জিয়াউর ৪-০-৯-১, সানজামুল ১০-০-৪৪-১, রাসুল ৭.৫-০-৩৪-৩, মিরাজ ৬-০-৩৬-০, মৃত্যুঞ্জয় ৬-০-১৮-২, তাইবুর ৩-০-১০-০)

ফল: শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ৭২ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: পারভেজ রাসুল