স্বেচ্ছায় আউট টি-টোয়েন্টিতে ‘অনেক দেখা যাবে’

কেউ ভালো না খেললে বা কৌশলগত কারণে বদলি খেলোয়াড় নামানো হয় ফুটবলে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও ওই জায়গায় পৌঁছানোর পথে আছে বলে মনে করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ভারতীয় স্পিনারের ধারণা, সামনের দিনগুলোয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ‘রিটায়ার্ড আউট’-এর ব্যবহার অনেক দেখা যাবে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 April 2022, 08:01 AM
Updated : 14 April 2022, 08:10 AM

আইপিএলের ম্যাচে অশ্বিনের ‘রিটায়ার্ড আউট’ নিয়েই চলমান এই আলোচনার শুরু। লক্ষ্নৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে গত রোববার রাজস্থান রয়্যালস বিপর্যয়ে পড়ার পর দশম ওভারে উইকেটে যান অশ্বিন। শিমরন হেটমায়ারের সঙ্গে জুটিতে বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে সহায়তাও করেন তিনি।

তবে শেষ দিকে দ্রুত রানের দাবি যখন যথাযথ মেটাতে মারছিলেন না, তখন ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলের পর তিনি ক্রিজ ছেড়ে যান স্বেচ্ছায়। ২৩ বলে ২৮ রান করা অশ্বিনের বদলে নামেন আগ্রাসী রিয়ান পরাগ। শেষ ওভারে একটি ছক্কাও মারেন পরাগ।

উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ৩ রানে জিতে নেয় রাজস্থান। পরাগের সেই ছক্কা তাই ম্যাচের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

কোনো চোট-অসুস্থতা ছাড়া এবং আম্পায়ার ও প্রতিপক্ষ অধিনায়কের সম্মতি ছাড়া স্বেচ্ছায় ক্রিজ ছেড়ে যাওয়াকে ক্রিকেটে বলা হয় ‘রিটায়ার্ড আউট।’ অশ্বিনের ওই আউট নিয়ে তোলপাড় চলছে ঘটনার পর থেকেই।

টেস্ট ক্রিকেটে এই আউটের ঘটনা আছে দুটি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আগে ছিল তিনটি। তবে আইপিএলে এই আউট এবারই প্রথম দেখা গেল।

ম্যাচের পর রাজস্থানের ডিরেক্টর অব ক্রিকেট ও প্রধান কোচ কুমার সাঙ্গাকারা বলেন, বাইরে থেকে তাদের ও অশ্বিনের নিজের সম্মিলিত ভাবনা মিলিয়েই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ক্রিকেট নিয়ে বৈপ্লবিক নানা চিন্তা-ভাবনায় আগেও সাড়া ফেলে দেওয়া অশ্বিন এবার তার ‘রিটায়ার্ড আউট’ নিয়ে বিশ্লেষণ করলেন নিজের ইউটিউব চ্যানেলে।

“কখনও কখনও এটা কাজে দেবে, কখনও নয়। ফুটবলে তো এসব হরহামেশাই হয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এখনও আমরা পুরোপুরি রপ্ত করতে পারিনি। এখনও নতুন এটা, পরের প্রজন্মের খেলা। ফুটবলে যদি দেখেন, মেসি-রোনালদোরা নিয়মিত গোল করে। কিন্তু তাদের গোলরক্ষককে গোল বাঁচাতে হয়, ডিফেন্ডারদের রক্ষণ সামলাতে হয় ভালোভাবে। তখনই কেবল মেসি বা রোনালদো আলোয় আসে।”

“ফুটবল যেখানে চলে গেছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটও খেলা হিসেবে সেই পথে এগোচ্ছে। ব্যাপারটা হলো বদলি খেলোয়াড় কীভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। আমি অনেকটা এই কাজই করেছি। আমরা আসলে এর মধ্যেই অনেক দেরি করে ফেলেছি। আমার বিশ্বাস, সামনের দিনগুলোয় এটা অনেক বেশি দেখা যাবে। নন-স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট করে দেওয়ার মতো বিতর্কিত কিছু এটা হবে না।”

ম্যাচের ১৫ ওভার শেষে সেদিন অশ্বিনের রান ছিল ১৪ বলে মাত্র ৯। পরে ষোড়শ ওভারে কৃষ্ণাপা গৌতমকে টানা দুই বলে ছক্কা মারেন তিনি। এরপর তিনি ভেবেছিলেন, ওই গতি ধরে রাখতে পারবেন। কিন্তু সেটা পারেননি বলেই ব্যাটিং ছেড়ে দেন। অশ্বিন এটাকে বলছেন কৌশলগত ব্যাপার।

“এটা ট্যাকটিকাল পদক্ষেপ। রিয়ান পরাগ বেশ ভালো ফর্মে ছিল। গৌতমের ওভারটি (দুই ছক্কার ওভার) শেষ হওয়ার পর নিজেকে আরেকটু সময় দেই আমি, ৪-৫ বল, স্রেফ এটা দেখতে যে চার-ছক্কা মারতে পারি কিনা। কয়েকটা বল স্লটে পেয়েছিও, চেষ্টা করেছি মারতে, কিন্তু টাইমিং হয়নি।”

“সম্ভব সবটুকুই চেষ্টা করেছি আমি, কিন্তু টাইমিং হচ্ছিল না। রিয়াগ পরাগের মতো একজন তখন ডাগআউটে, স্রেফ ১০ বল বাকি ছিল। সে এসে দুটি ছক্কা মারতে পারলেও আমাদের স্কোর ভালো জায়গায় যায়। এটা তাই ছিল ট্যাকটিকাল সিদ্ধান্ত।”