চার বছরের চুক্তিতে এই দায়িত্ব নিচ্ছেন ম্যাকডোনাল্ড। সাদা ও রঙিন বলে আলাদা কোচ নিয়ে আলোচনা চলছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে। তবে সেই ভাবনা থেকে সরে এসে তিন সংস্করণেরই ভার দেওয়া হয়েছে ৪০ বছর বয়সী এই কোচকে।
গত ফেব্রুয়ারিতে জাস্টিন ল্যাঙ্গার পদত্যাগ করার পর থেকে কোচ খুঁজছিল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাকডোনাল্ড তো লড়াইয়ে ছিলেনই, আলোচনায় ছিল সাবেক সফল অধিনায়ক রিকি পন্টিং, অস্ট্রেলিয়া মেয়েদের দলের সফল কোচ ম্যাথু মট ও সাবেক ইংল্যান্ড কোচ ট্রেভর বেলিসের নাম। তবে ম্যাকডোনাল্ডকে বেছে নেওয়ার পেছনে বড় ভূমিকা আছে ক্রিকেটাদের সমর্থন আর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে সাফল্যের।
সম্প্রতি পাকিস্তান সফরে তিনি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কোচ। এই সফরে টেস্ট সিরিজ জয় করে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারলেও ভাঙাচোরা দল নিয়েও লড়াই করে তারা দারুণভাবে, জিতে নেয় একমাত্র টি-টোয়েন্টিও।
দলের ভেতর ম্যাকডোনাল্ডের জনপ্রিয়তাও তুমুল। টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্স প্রকাশ্যেই তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন, সাদা বলের ক্রিকেটের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চও তার আস্থার কথা জানিয়েছেন।
ল্যাঙ্গারের পদত্যাগের পেছনে মূল কারণ ছিল ক্রিকেটারদের পাশে না পাওয়াই। তার কোচিংয়ে অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও অ্যাশেজ জিতলেও কাজের ধরন নিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ছিল তার টানাপোড়েন। তাই মাত্র ৬ মাস মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাকে। ক্ষুব্ধ হয়ে তাতে রাজী হননি ল্যাঙ্গার।
ম্যাকডোনাল্ড খেলোয়াড়ী জীবনে ছিলেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চারটি টেস্ট তিনি খেলতে পেরেছিলেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রান করেছেন ৫ হাজারের কাছাকাছি, উইকেট ২০১টি। খেলোয়াড়ী জীবন খুব সমৃদ্ধ না হলেও কোচ হিসেবে এর মধ্যেই পেয়ে গেছেন অনেক সাফল্য।
পেশাদার ক্রিকেটার থাকা অবস্থায়ই ২০১৪ সালের শেষ দিকে মাত্র ৩৩ বছর বয়সে তার কোচিং ক্যারিয়ারের শুরু। লেস্টারশায়ারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলতেন তিনি। টানা দুই মৌসুমে জয়ের মুখ না দেখা দলটির কোচিংয়ের দায়িত্বও দেওয়া হয় তাকে। তার কোচিংয়েই কাটে দলটির ৯৯২ দিনের জয় খরা। দলের পুনর্গঠনের কাজটিও ঠিকঠাক করেন তিনি।
২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে ফেরেন তিনি ভিক্টোরিয়া ও মেলবোর্নে রেনেগেডসের কোচ হয়ে। তার কোচিংয়ে তিন মৌসুমের মধ্যে শেফিল্ড শিল্ডে দুটি শিরোপা জয় করে ভিক্টোরিয়া, জিতে নেয় ওয়ানডে কাপও। বিগ ব্যাশেও চ্যাম্পিয়ন হয় রেনেগেডস, এখনও পর্যন্ত যা তাদের একমাত্র শিরোপা।
দারুণ এই সাফল্যের পথ ধরে ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাকে করা হয় জাতীয় দলে ল্যাঙ্গারের সহকারী। ল্যাঙ্গারের ছুটি-অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি নানা সময়েই। এবার তিনিই মূল দায়িত্বে।
আগামী জুনে শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে শুরু হবে নতুন দায়িত্বে তার পথচলা।