শেষ বলে সিটি ক্লাবের রুদ্ধশ্বাস জয়

শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ৬ রান, হাতে তিন উইকেট। অনায়াস জয়ের অপেক্ষায় তখন সিটি ক্লাব। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ জমিয়ে দিলেন আবু হায়দার রনি। এই পেসারের প্রথম পাঁচ বল থেকে এলো কেবল ৩ রান। পাল্টে যাওয়া পরিস্থিতিতে তখন জয়ের স্বপ্ন দেখছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কিন্তু শেষ বলে ৩ রানের সমীকরণে চার মেরে সিটি ক্লাবকে জয়ের আনন্দে ভাসালেন ১০ নম্বরে নামা আমিনুর রহমান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2022, 02:20 PM
Updated : 9 April 2022, 04:24 PM

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শনিবার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে সিটি ক্লাব।

টস হেরে খেলতে নেমে ব্যাটসম্যানদের মিলিত চেষ্টায় ৮ উইকেটে ২৭০ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় ব্রাদার্স। সেই রান তাড়া করে টানা তৃতীয় জয় তুলে নেয় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দীর্ঘ ১৩ বছর পর ফেরা সিটি ক্লাব।

আমিনুর শেষ বলে চার মেরে দলকে জেতালেও সিটির এই জয়ের নায়ক আরেকজন-জাওয়াদ রুয়েন। সাত নম্বরে নেমে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৩ ছক্কা ও ৫ চারে ৬৬ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে তিনিই ম্যাচের সেরা।

ব্যাটিংয়ে নেমে ব্রাদার্সকে ভালো শুরু এনে দেন দুই ওপেনার। তাদের ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে এক ছক্কা ও ৫ চারে ৩৮ রান করা ইমতিয়াজের বিদায়ে। কয়েক ওভার পর ফিরে যান আগের ম্যাচে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা মোহাম্মদ আশরাফুল (২ চারে ২৬)।

পাকিস্তানের বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার উসমান খালিদের পরপর দুই ওভারে ফেরেন মিনহাজুল আবেদিন ও মাইশুকুর রহমান। ১১০ রানে ৪ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন আমিনুল ইসলাম ও ধীমান ঘোষ।

তাদের ৮৭ বলে ৮৪ রানের জুটি ভাঙে ৪২ বলে ফিফটি করা ধীমানের বিদায়ে। শাহরিয়ার আলমের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি এক ছক্কা ও ৬ চারে ৫১ রান করে।

শাহরিয়ার পরে ফিরিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার চতুরঙ্গা ডি সিলভাকে। এক চারে ৪০ রান করা আমিনুলও এই পেসারের শিকার।

শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড় তোলেন সোহাগ গাজী। ২৭ বলে ৫ ছক্কা ও ২ চারে অপরাজিত থাকেন ৪৮ রান নিয়ে। পাঁচ ছক্কার তিনটি মারেন খালিদকে, একটি করে শাহরিয়ার ও আমিনুরকে।

সিটি ক্লাবের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন খালিদ ও শাহরিয়ার।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুর জুটিতে ৫৬ রান তোলে সিটি ক্লাব। ২ ছক্কা ও ৩ চারে ৩৩ রান করা তৌফিক খানকে ফিরিয়ে দেন সোহাগ। আরেক ওপেনার শাহরিয়ার কমল (২৬) কট বিহাইন্ড হন সাকলাইন সজিবের বলে।

জাকিরুল আহমেদকে এলবিডব্লিউ করে দেন সোহাগ। দৌড়ে রান নেওয়ার সময় পায়ে টান লাগলে মাঠ ছাড়েন খালিদ।

ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি মইনুল ইসলাম ও আশিক উল আলম। ১৪৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলকে এগিয়ে নেন নাজমুল হোসেন ও রুয়েন।

তাদের দুইজনের জুটিতে জয়ের স্বপ্ন বুনতে শুরু করে সিটি ক্লাব। মানিক খানের বলে ৫ চারে ৩৩ রান করা নাজমুল কট বিহাইন্ড হলে ভাঙে ৮৩ রানের জুটি। হাল না ছেড়ে দলের আশার প্রদিপ জ্বেলে রাখেন ৪৩ বলে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি করা রুয়েন।

এক-দুই করে এবং বাজে বলে বাউন্ডারি মেরে রুয়েন দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন কাঙ্ক্ষিত ঠিকানার দিকে। পরে শেষ বলে আমিনুরের ওই ম্যাচ জয়ী বাউন্ডারি।

এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ওপরে উঠে গেল সিটি ক্লাব। ৮ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে তারা। ব্রাদার্স ৭ ম্যাচে ১ জয়ে আছে তলানিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৫০ ওভারে ২৭০/৮ (ইমতিয়াজ ৩৮, আশরাফুল ২৬, মাইশুকুর ১৯, মিনহাজুল ১৯, আমিনুল ৪০, ধীমান ৫১, চতুরঙ্গা ১৫, সোহাগ ৪৮*, আবু হায়দার ৭, মানিক ০*; আমিনুর ৮-০-৪৫-০, খালিদ ১০-০-৫৯-৩, রাজিবুল ১০-১-২৯-১, শাহরিয়ার ১০-০-৬৬-৩, মইনুল ১০-০-৫৭-১, রুয়েন ২-০-১২-০)

সিটি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৭২/৭ (তৌফিক ৩৩, শাহরিয়ার কমল ২৬, জাকিরুল ১৭, খালিদ ৪, আশিক ২৭, মইনুল ২০, রুয়েন ৭৯*, নাজমুল ৩৩, রাজিবুল ১০, আমিনুর ৮*; আবু হায়দার ১০-১-৫১-০, সজিব ৯.৫-১-৪০-১, চতুরঙ্গা ৮-০-৫৮-০, সোহাগ ৮-০-৩৬-২, মানিক ৭-০-৪৪-২, আশরাফুল ৭.১-০-৩৬-১)

ফল: সিটি ক্লাব ৩ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জাওয়াদ রোয়েন