নাঈম ও মেহেদি রানার নৈপুণ্যে রুপগঞ্জের দারুণ জয়

ব্যাট হাতে নাঈম ইসলাম এবার বড় কিছু করতে পারেননি। তবে বল হাতে নিজেকে মেলে ধরলেন দারুণভাবে। কিপটে বোলিংয়ে নিলেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট। শেষ দিকে পরপর দুই বলে জোড়া শিকার ধরে বড় বাধা দূর করলেন মেহেদি হাসান রানা। মাঝারি পুঁজি নিয়েও রোমাঞ্চকর জয় পেল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2022, 01:55 PM
Updated : 9 April 2022, 01:55 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শনিবার শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে রুপগঞ্জ জিতেছে ৯ রানে।

বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে ইরফান শুক্কুরের ফিফটিতে রূপগঞ্জ ৯ উইকেট হারিয়ে করে ২১৫ রান। ৬২ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন শুক্কুর।

জবাবে ১ উইকেটে ৯৯ রানের শক্ত অবস্থানে থেকে এক ওভার বাকি থাকতে ২০৬ রানে গুটিয়ে যায় শাইনপুকুর। বৃথা যায় টপ অর্ডারে অভিষেক মিত্র ও রাকিন আহমেদের ফিফটি।

ব্যাটিংয়ে ৪৪ বলে ৩২ রানের পর হাত ঘুরিয়ে ১০ ওভারে স্রেফ ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা নাঈম। তরুণ পেসার মেহেদি রানার প্রাপ্তি ৪ উইকেট।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্ক শুরু করেন রুপগঞ্জের দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও রকিবুল হাসান। দুই জনই বিদায় নেন সিকান্দার রাজার পরপর দুই ওভারে। রকিবুল ৪২ বলে ২৪ ও তানজিদ ৫২ বলে করেন ১৯ রান।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি চিরাগ জানি। বিনা উইকেটে ৪৭ থেকে দ্রুতই রুপগঞ্জের স্কোর হয়ে যায় ৩ উইকেটে ৫৯।

এরপর নাঈম ও সাব্বির রহমানের সঙ্গে পঞ্চাশোর্ধ দুটি জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন শুক্কুর। নাঈম বিদায় নেন ক্যাচ দিয়ে। ৩২ বলে ১৫ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন সাব্বির।

৪৯ বলে ফিফটি করে এগিয়ে চলা শুক্কুরও পরের ওভারে থামেন রিপন মন্ডলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। রিপন এরপর ফিরিয়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, তানবীর হায়দার ও মেহেদি রানাকে। ১৬ বলে একটি করে চার-ছক্কায় মাশরাফি করেন ১৪ রান।

রান তাড়ায় শাইনপুকুর সপ্তম ওভারে হারায় আনিসুল ইসলাম ইমনকে (১৬)। তাকে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন মেহেদি রানা।

দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন অভিষেক ও রাকিন। ইনিংস সর্বোচ্চ এই জুটি ভাঙেন নাঈম। ৮৩ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় ৫৭ রান করে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন অভিষেক।

এরপর তেমন কিছু করতে পারেননি মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, রাজা, সাজ্জাদুল ইসলাম ও নাঈম হাসান। নাঈম ইসলামের বলে উইকেটকিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন রাজা। সাজ্জাদুলকে কট বিহাইন্ড করে নিজের একমাত্র উইকেটটি নেন মাশরাফি।

১৫৫ রানে ৬ উইকেট হারানো দলের আশা আবার জেগে ওঠে রাকিন ও আলাউদ্দিন বাবুর ব্যাটে।

শেষ ২৪ বলে দরকার যখন আর ২৯ রান, মেহেদি রানাকে ছক্কায় উড়িয়ে সমীকরণ সহজ করে ফেলেন আলাউদ্দিন। কিন্তু ওই ওভারেই পরপর দুই বলে আলাউদ্দিন ও রাকিনের বিদায়ে শাইনপুকুরের আশাও প্রায় শেষ হয়ে যায়।

রাকিন ৯২ বলে ৬৭ ও আলাউদ্দিন ১৪ বলে করেন ২৪ রান। আল আমিন হোসেনের বলে হাসান মুরাদের বিদায়ের পর মেহেদি রানা নিজের পরের ওভারে নাইমুর রহমানকে বোল্ড করে দারুণ জয় এনে দেন রূপগঞ্জকে।

আট ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার তিন নম্বরে উঠে এসেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এক ম্যাচ বেশি খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ১১ দলের মধ্যে সাতে আছে শাইনপুকুর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৫০ ওভারে ২১৫/৯ (তানজিদ ১৯, রকিবুল ২৪, চিরাগ ৫, নাঈম ইসলাম ৩২, শুক্কুর ৬৪, সাব্বির ১৫, তানবীর ৮, মাশরাফি ১৪, মেহেদি রানা ১১, সামাদ ১১*; রিপন ১০-১-৩৮-৪, নাঈম হাসান ৭-৩-১৯-০, আলাউদ্দিন ৯-০-৫১-০, রাজা ১০-১-৩২-২, মুরাদ ৯-১-৩৫-১, নাইমুর ৫-০-৩৪-১)

শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: ৪৯ ওভারে ২০৬ (অভিষেক ৫৭, আনিসুল ১৬, রাকিন ৬৭, মাহিদুল ১, রাজা ৮, সাজ্জাদুল ১৩, নাঈম হাসান ৪, আলাউদ্দিন ২৪, রিপন ১১*, মুরাদ ১, নাইমুর ১; মাশরাফি ৯-০-৪৭-১, সামাদ ১০-১-২৭-০, আল আমিন ৩-০-১৫-১, মেহেদি রানা ৫-০-২৯-৪, চিরাগ ৭-০-৪৫-১, নাঈম ইসলাম ১০-২-২৩-২, তানবীর ৫-০-২০-১)

ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: নাঈম ইসলাম