২০ বছরের ক্যারিয়ারে এনামুল জুনিয়রের প্রথম ৫ উইকেট

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে নামের পাশে উইকেট দেড়শর বেশি। কিন্তু এই সংস্করণে একটি অর্জন এতদিন অধরা ছিল এনামুল হক জুনিয়রের। অবশেষে সেই অপূর্ণতা ঘোচালেন তিনি। বাঁহাতি স্পিনারের প্রথম পাঁচ উইকেট শিকারের দিনে মোহামেডানকে গুঁড়িয়ে দিল রূপগঞ্জ টাইগার্স।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2022, 10:33 AM
Updated : 9 April 2022, 10:33 AM

মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব। প্রতিযোগিতাটির ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ১৪৩ রান তারা পেরিয়ে গেছে ৮২ বল হাতে রেখে। 

লিগে এই নিয়ে টানা চার ম্যাচ হারল মোহামেডান। ৮ ম্যাচ খেলে তাদের জয় তিনটি। টানা দুই ম্যাচে হারের পর আবার জয়ের স্বাদ পেল রূপগঞ্জ টাইগার্স। ৭ ম্যাচে এটি তাদের চতুর্থ জয়।

মাহমুদউল্লাহ-মোহাম্মদ হাফিজদের দেড়শর আগে আটকে দেওয়ার কারিগর এনামুল ৪১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচ সেরা। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে ১৩৩তম লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে এসে পেলেন প্রথম পাঁচ উইকেটের স্বাদ।

৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের আগের সেরা ছিল ২৬ রানে ৪ উইকেট। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে চার উইকেট নিয়েছেন তিনি ছয়বার।

মিরপুরের উইকেটে এদিন মিলেছে অসমান বাউন্স। স্পিনাররা পেয়েছেন টার্ন। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহামেডানের শুরুটা খারাপ ছিল না। দেখেশুনে খেলে দুই ওপেনার কাটিয়ে দেন প্রথম ১১ ওভার।

দ্বাদশ ওভারে পারভেজ হোসেনকে এলবিডব্লিউ করে ২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শরিফউল্লাহ। আরেক ওপেনার রনি তালুকদার (২ চারে ২৪) ফেরেন মুকিদুল ইসলামের বলে মিড অফে সহজ ক্যাচ দিয়ে।

এনামুল তার প্রথম শিকার ধরেন হাফিজকে ফিরিয়ে। জায়গা বানিয়ে খেলার চেষ্টায় ব্যাটে-বলে করতে ব্যর্থ হন পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, নিচু হয়ে যাওয়া বল ছোবল দেয় স্টাম্পে।

রুবেল মিয়াকে নিয়ে কিছুক্ষণ দলকে টানেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু তাদের জুটি পঞ্চাশ ছোঁয়ার আগে রুবেলকে (২৩) বোল্ড করে দেন নাসুম আহমেদ। এরপর কেবল আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন মোহামেডানের ব্যাটসম্যানরা।

এক প্রান্তে কিছুক্ষণ লড়াই চালান মাহমুদউল্লাহ। দুটি করে ছক্কা-চারে ৪৮ রান করা বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কও এনামুলের শিকার। নিচু হয়ে যাওয়া বলে তিনি হন কট বিহাইন্ড।

মোহামেডানের ইনিংসে ত্রিশ ছোঁয়া ইনিংস এই একটিই। ৪১ রানে শেষ ৭ উইকেট হারায় দলটি।

নাজমুল ইসলাম অপুকে ফিরিয়ে দারুণ প্রাপ্তির পাশাপাশি মোহামেডানের ইনিংস গুটিয়ে দেন এনামুল।

২৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার পেসার মুকিদুলের।

রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই মিজানুর রহমানকে হারায় রূপগঞ্জ টাইগার্স। জাকির হাসান ফিরে যান হাফিজের অফ স্পিনে ক্যাচ দিয়ে।

৪৬ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে সতর্ক ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নেন আসিফ আহমেদ ও ফজলে মাহমুদ। তাদের ১৩৯ বলে ৮৪ রানের জুটিতে জয় যখন নাগালে, আউট হয়ে যান আসিফ। এক ছক্কা ও ৫ চারে ৯২ বলে ৪৮ রান করেন তিনি।

পাকিস্তানের সাদ নাসিমকে নিয়ে বাকি পথ অনায়াসে পাড়ি দেন ফজলে মাহমুদ। ৩ চারে ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। পারভেজকে ছক্কায় উড়িয়ে ম্যাচ শেষ করা নাসিম মাঠ ছাড়েন ৮ বলে ১৬ রান করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৩৮.১ ওভারে ১৪৩ (রনি ২৪, পারভেজ ১৪, হাফিজ ৪, রুবেল ২৩, মাহমুদউল্লাহ ৪৮, আরিফুল ০, জাহিদুজ্জামান ৮, শুভাগত ১৫, ইয়াসিন ০, নাজমুল ২, মুশফিক ১*; নাসুম ৭-১-১৮-১, শরিফউল্লাহ ৯-০-২৪-১, মুকিদুল ৭-০-২৮-৩, এনামুল জুনি. ৯.১-২-৪১-৫, নাসিম ৬-০-৩০-০)

রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৩৬.৩ ওভারে ১৪৯/৩ (মিজানুর ৯, জাকির ২৪, আসিফ ৪৮, ফজলে মাহমুদ ৩৯*, নাসিম ১৬*; হাফিজ ১০-১-২৩-১, ইয়াসিন ৪-০-৩৩-২, নাজমুল ১০-১-৩৮-০, শুভাগত ১০-৩-২৯-০, মুশফিক ২-০-১৯-০, পারভেজ ০.২-০-৬-০)

ফল: রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: এনামুল হক জুনিয়র