জয়ের ৪৪২ মিনিটের ইনিংসে অভিভূত সিডন্স

৪৪২ মিনিট। ৩২৬ বল। ১৩৭ রান। ম্যারাথন পথচলা আর একটি অসাধারণ ইনিংস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ডারবান টেস্টে যেভাবে লড়েছেন মাহমুদুল হাসান জয় আর টেনে নিয়ে গেছেন দলকে, তাতে মুগ্ধতার শেষ নেই জেমি সিডন্সের। একই অনুভূতি দলের অন্যদেরও। বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ বললেন, দলের সবাই গর্বিত জয়ের বিরোচিত ব্যাটিং প্রদর্শনীতে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2022, 04:00 PM
Updated : 2 April 2022, 05:12 PM

গত জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ২২৮ বলে ৭৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা জয়। ২১ বছর বয়সী বাটসম্যান এবার ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে আরও ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকে। উপহার দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরি। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এশিয়ার বাইরে ৩০০ বল খেলার কীর্তিও গড়লেন। ইনিংস শুরু করতে নেমে আউট হন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে।

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সিডন্সের কণ্ঠে ছিল জয়ের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচের কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে তরুণ ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংয়ের শৃ্ঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ।

“মাস দুয়েক হলো আমি দলের সঙ্গে আছি। সে শুরুতেই আমার নজর কাড়ে প্রতিভা এবং ওয়ার্ক এথিক দিয়ে, ব্যাটিংয়ে তার ধৈর্য ও নিজের খেলা নিয়ে কাজ করার নিবেদন দিয়ে।”

“আজকের ইনিংসটা গড়া ধৈর্য আর পরিকল্পনা দিয়ে। বাড়তি কিছু চেষ্টা করেনি সে। যেটুকু জানে, সেটুকুতেই আটকে রেখেছে নিজেকে। নিজের আওতার বাইরে কোনো উচ্চভিলাসী শটের টেষ্টা সে করেনি। সে যেভাবে ব্যাট করেছে, আমরা সবাই তাতে গর্বিত। ইনিংসজুড়ে ব্যাট করা বাংলাদেশের জন্য স্পেশাল কিছু। আমি নিশ্চিত নই, টেস্ট ক্রিকেটে এর চেয়ে ভালো ইনিংস বাংলাদেশের খুব বেশি আছে কিনা।”

ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ১৪১ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন জয়। দুই পাশ থেকে যখন দুই স্পিনার কেশভ মহারাজ ও সাইমন হার্মার আঁটসাঁট বোলিং করছিলেন, জয় তখন মাথা নিচু করে আঁকড়ে রাখেন উইকেট। উইকেটে লম্বা সময় টিকে থাকার সেই তাড়না ও বিশ্বাসের কথাও আলাদা করে বললেন সিডন্স।

“গতকাল বিকেলের সেশনে যখন আলো কম ছিল, দুই স্পিনার টানা বল করার সময় অস্থির হতে পারত সে। কিন্তু সে তা হয়নি। আমাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এই ধরনের ধৈর্য বিরল। সবসময়ই আলগা শট দেখা যায়। এই ইনিংসে যদিও কেউ বাজে শটে আউট হয়নি। ভালো বল আর একটি বাজে রান আউট (ইয়াসির আলি) হয়েছে।”

“সবাই ধৈর্য ধরেছে। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠ সাজানোকে কাজে লাগিয়েছে জয়। ফিল্ডারদের ওপরে রাখলে সে হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলেছে। ফিল্ডারদের পেছনে রাখলে সে এক-দুই নিয়েছে। সে বিশ্বাস করেছে যে ৬ ঘণ্টা ব্যাট করতে পারে। দলের সব তরুণ ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাসটা আছে। ওদের কাছ থেকে স্রেফ বড় ইনিংম প্রয়োজন।”