স্যামসনের ঝড়ো ফিফটির পর প্রসিধের দারুণ বোলিং

প্রতিপক্ষের বোলারদের কোনো ধরনের সমীহ নয়, এমন পণ করেই যেন মাঠে নামলেন রাজস্থান রয়্যালসের ব্যাটসম্যানরা। সেই পথে চার-ছক্কার ঝড় তুলে ফিফটি উপহার দিলেন সাঞ্জু স্যামসন। দল গড়ল দুইশ ছাড়ানো সংগ্রহ। পরে প্রসিধ কৃষ্ণার দুর্দান্ত এক স্পেলে পথ হারিয়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারল না সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2022, 06:10 PM
Updated : 29 March 2022, 06:48 PM

মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ৬১ রানের জয় দিয়ে এবারের আইপিএল শুরু করল রাজস্থান। ২১১ রানের লক্ষ্য দিয়ে প্রতিপক্ষকে তারা থামিয়ে দিল ১৪৯ রানে।

রাজস্থানের বিশাল এই পুঁজি গড়ার পেছনে ছিল ব্যাটসম্যানদের সম্মিলিত অবদান। দলটির হয়ে ২৭ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা স্যামসন।

রান তাড়ায় শুরুতেই হায়দরাবাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন প্রসিধ ও ট্রেন্ট বোল্ট। দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম স্পেলে এক মেডেনসহ ৩ ওভারে স্রেফ ২ রান দিয়ে প্রসিধ নেন দুই উইকেট। নিজের শেষ ওভারে ১৪ রান দেওয়ার পরও তার বোলিং ছিল বেশ ভালো, ৪-১-১৬-২।

প্রথম স্পেলে বোল্টও করেন তিন ওভার। ৮ রান দিয়ে নেন এক উইকেট, সঙ্গে মেডেন একটি। নিজের শেষ ওভারে ১৫ রান দিয়ে আরেকটি শিকার ধরেন নিউ জিল্যান্ডের এক পেসার। মাঝে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২২ রান খরচ করে ৩ উইকেট প্রাপ্তি যুজবেন্দ্র চেহেলের।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রাজস্থান উইকেট হারাতে পারত প্রথম ওভারেই। ভুবনেশ্বর কুমারের বলটি ‘নো’ হওয়ায় স্লিপে ধরা পড়েও বেঁচে যান বাটলার।

জীবন পেয়ে বাটলার দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন। পাওয়ার প্লে শেষে রাজস্থানের রান বিনা উইকেটে ৫৮।

সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই যাশাসবি জয়সওয়ালকে বিদায় করে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শেফার্ড। তিনটি করে ছক্কা-চারে ৩৫ রান করা ইংলিশ বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান বাটলারকে ফেরান উমরান।

নেমেই ঝড় তোলেন স্যামসন। তাকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সঙ্গ দেন দেবদূত পাডিক্কেল। তাদের জুটিতে রান আসে ৪১ বলে ৭৩। 

২ ছক্কা ও ৬ চারে ২৯ বলে ৪১ রান করা পাডিক্কেলকে বোল্ড করে থামান উমরান। ওয়াশিংটনকে টানা দুই ছক্কায় উড়িয়ে ফিফটি স্পর্শ করেন স্যামসন, ২৫ বলে।

ভুবনেশ্বরকে ছক্কার ওড়ানোর চেষ্টায় লং-অনে ধরা পড়ে শেষ হয় স্যামসনের ৫ ছক্কা ও ৩ চারের ইনিংস। শিমরন হেটমায়ারের ৩ ছক্কা ও ২ চারে মাত্র ১৩ বলে ৩২ রানের ক্যামিওতে দুইশ পার করে রাজস্থান।

বিশাল রান তাড়ায় শুরুতেই পথ হারিয়ে ফেলে সানরাইজার্স। প্রসিধ ও বোল্টের দুর্দান্ত বোলিংয়ের ৯ রানে ৩ উইকেট হারায় তারা।

দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে কেন উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে দেন প্রসিধ। স্যামসনের গ্লাভস থেকে বেরিয়ে যাওয়া বল ঝাপিয়ে মুঠোয় জমান স্লিপে থাকা পাডিক্কেল।

নিজের পরের ওভারে রাহুল ত্রিপাঠীকে ফেরান ভারতের তরুণ পেসার প্রসিধ। উইকেটে নিকোলাস পুরানের অস্বস্তির সমাপ্তি হয় বোল্টের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে।

কিছুক্ষণ উইকেটে কাটানো অভিশেক শর্মাকে ফিরিয়ে প্রথম শিকার ধরে চেহেল।  আব্দুল সামাদকেও টিকতে দেননি এই লেগ স্পিনার।

রোমারিও শেফার্ড নেমে ঝড়ের আভাস দিয়ে ফিরে যান। চেহেলের লেগ স্পিনে বোল্ড হন ২ ছক্কায় ২৪ রান করে। এই উইকেটের সঙ্গে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ২৫০ উইকেট পূর্ণ করেন চেহেল।

ওয়াশংটন কিছুক্ষণ তাণ্ডব চালান। ১৪ বলে ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৪০ রান করা এই অলরাউন্ডারকে থামান বোল্ট।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রাখা এইডেন মারক্রাম ৩৯ বলে ফিফটি করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ২ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৭ রান করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ২১০/৬ (বাটলার ৩৫, জয়সওয়াল ২০, স্যামসন ৫৫, পাডিক্কেল ৪১, হেটমায়ার ৩২, পারাগ ১২, কোল্টার-নাইল ১*; ভুবনেশ্বর ৪-০-২৯-১, শেফার্ড ৪-০-৩৩-১, উমরান ৪-০-৩৯-২, ওয়াশিংটন ৩-০-৪৭-০, নাটরাজন ৪-০-৪৩-২, অভিশেক ১-০-১৫-০)

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (উইলিয়ামসন ২, অভিশেক ৯, ত্রিপাঠী ০, পুরান ও, মারক্রাম ৫৭*, সামাদ ৪, শেফার্ড ২৪, ওয়াশিংটন ৪০, ভুবনেশ্বর ৩*; বোল্ট ৪-১-২৩-২, কৃষ্ণা ৪-১-১৬-২, কোল্টার-নাইল ৩-০-৪৮-০, অশ্বিন ৪-০-২১-০, চেহেল ৪-০-২২-৩, পারাগ ১-০-১৪-০)

ফল: রাজস্থান রয়্যালস ৬১ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাঞ্জু স্যামসন