সেঞ্চুরির মালা গেঁথে চলেছেন জাকির

৯৪ থেকে পেসার আব্দুল হালিমের শর্ট বল পুল করে ছক্কায় ওড়ালেন জাকির হাসান। ওই শটে তরুণ কিপার-ব্যাটসম্যানের রান স্পর্শ করল তিন অঙ্ক। এক হাতে ব্যাট, আরেক হাতে তিনি উঁচিয়ে ধরলেন হেলমেট। বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ হোক কিংবা সীমিত ওভারের, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ক্রিকেটের খুব চেনা দৃশ্য এটি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যান যে একের পর এক সেঞ্চুরি করেই চলেছেন!

আবু হোসেন পরাগবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2022, 12:01 PM
Updated : 25 March 2022, 12:14 PM

জাকিরের সেঞ্চুরি ও বাবা অপরাজিথের ফিফটিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবার সিটি ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারায় রূপগঞ্জ টাইগার্স। বিকেএসপি ৪ নম্বর মাঠে ২৬২ রানের লক্ষ্য তারা ছুঁয়ে ফেলে ৫২ বল হাতে রেখে। বিফলে যায় সিটি ক্লাবের হয়ে জাকিরুল আহমেদের ১১৪ রানের ইনিংস।

ইনিংস শুরু করতে নেমে জাকির খেলেন ৯৯ বলে ১২৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস। ১৫টি চার ও তিনটি ছক্কার এই ইনিংসে ম্যাচের সেরা তিনিই।

এই লিগ শুরুর আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৭৫ ম্যাচে কোনো সেঞ্চুরি ছিল না জাকিরের। এবার দুই সেঞ্চুরি হয়ে গেল তিন ম্যাচের মধ্যেই! লিগের প্রথম তিন ম্যাচে তার রান ১১৭, ৬৩ ও ১২৪। 

মৌসুমে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি হলো ৬টি। গত জাতীয় লিগে একটি, পরে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে বিসিএলে তিনি করেন তিনটি সেঞ্চুরি।

বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই শাহরিয়ার কমলকে হারায় সিটি ক্লাব। মইনুল ইসলাম (১৮) ও পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উসমান খালিদও (১৩) পারেননি তেমন কিছু করে দেখাতে।

এরপরই ইনিংস সেরা ১০৮ রানের জুটি পায় তারা জাকিরুল ও আশিক উল আলমের ব্যাটে। দ্বিতীয় লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলতে নেমেই জাকিরুল প্রথম সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১০৬ বলে।

তাকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন আরিফুল হক। ১১৯ বলে ১৫ চার ও একটি ছক্কায় গড়া জাকিরুলের ১২৪ রানের ইনিংসটি।

আশিফ রান আউটে বিদায় নেন ফিফটি থেকে ১ রান দূরে থাকতে। ৬২ বলে ৩ চারে ৪৯ রানের ইনিংসটি খেলেন তিনি। শেষ দিকে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি কেউ। সিটি ক্লাবের সংগ্রহটাও তাই আরও বড় হয়নি।

রান তাড়ায় মিজানুর রহমান ও জাকিরের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় রূপগঞ্জ। ৫৬ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে একাদশ ওভারে মিজানুরের বিদায়ে (২৫)।

জাকির ও অপরাজিথ এরপর এগিয়ে নেন দলকে। উসমান খলিলকে লং অন দিয়ে ছক্কা মেরে জাকির ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে। পরের পঞ্চাশে যেতে তার লাগে কেবল ৩৩ বল।

জাকিরের বিদায়ে যখন ১৫২ রানের জুটি ভাঙে, তার দল তখন জয়ের পথে এগিয়ে অনেকটাই। ভারতীয় ব্যাটসম্যান অপরাজিথ বিদায় নেন জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে। ৭৫ বলে ৫ চার ও একটি ছক্কায় তিনি করেন ৬৯ রান।

মার্শাল আইয়ুবকে (৭*) সঙ্গে নিয়ে বাকিটা সারেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি (২৯*)।

তিন ম্যাচে এটি রুপগঞ্জের দ্বিতীয় জয়। লিগে ফেরা সিটি ক্লাব হারল প্রথম চার ম্যাচেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিটি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৬১/৮ (শাহরিয়ার ১, মইনুল ১৮, জাকিরুল ১১৪, খলিল ১৩, আশিক ৪৯, নাজমুল মিলন ৯, রাজিবুল ২২, মইনুল সোহেল ১৬*, জাওয়াদ ০, হালিম ৩*; শফিকুল ৮-০-৩৬-২, ফরহাদ ৮-১-৪১-০, শরিফউল্লাহ ৭-০-৩১-০, মুকিদুল ১০-০-৬০-২, এনামুল জুনিয়র ৬-০-৩২-০, অপরাজিথ ৬-০-২৫-১, আরিফুল ৫-০-৩৩-২)

রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৪১.২ ওভারে ২৬২/৩ (মিজানুর ২৫, জাকির ১২৪, অপরাজিথ ৬৯, ফজলে মাহমুদ ২৯*, মার্শাল ৭*; আমিনুর ৬.২০-৩৩-০, হালিম ৫-০-৩৩-০, জাওয়াদ ৮-০-৬৯-১, খলিল ৮-১-৩৮-১, মইনুল ৫-০-২৮-০, রাজিবুল ৩-০-২৮-০, মইনুল সোহেল ৩-০-২৫-০, নাজমুল মিলন ২-০-৭-১, জাকিরুল ১-০-১-০)

ফল: রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ৭ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জাকির হাসান।