তামিম দলকে বলেছিলেন, ‘উই উইল গো ফর কিল’

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ টসে হেরে যাওয়া। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার আগ্রাসী শুরু। তামিম ইকবালের কপালে একটু চিন্তার ভাঁজই পড়ে গিয়েছিল। তবে দ্রুত দুটি উইকেট পাওয়ার পর ফিরে আসে আত্মবিশ্বাস। বাংলাদেশ অধিনায়ক তখন দলকে বলেন, এখান থেকেই চেপে ধরতে হবে প্রতিপক্ষকে। সতীর্থরা সাড়া দেন দারুণভাবে। উজ্জীবিত বাংলাদেশ অর্জন করে নেয় স্মরণীয় জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2022, 05:20 AM
Updated : 24 March 2022, 05:20 AM

সেঞ্চুরিয়নে বুধবার টসে হাসতে পারেননি তামিম। প্রথম ম্যাচে এই মাঠেই আগে ব্যাট করে তিনশর বেশি রান তুলে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার আগে ব্যাট করার সুযোগ মেলেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ ওভারেই তুলে ফেলে ৪০ রান।

পেসারদের বিবর্ণ রূপ দেখে পঞ্চম ওভারেই স্পিন আক্রমণে আনেন তামিম। তাতেই ধরা দেয় প্রথম উইকেট। বিপজ্জনক কুইন্টন ডি কককে ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। দক্ষিণ আফ্রিকায় এগিয়ে যেতে থাকে এরপরও। ইয়ানেমান মালান ও কাইলন ভেরেইনা জুটি গড়তে থাকেন।

এবার দৃশ্যপটে তাসকিন আহমেদ। ভেরেইনাকে ফিরিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা থামান এই ফাস্ট বোলার।

ম্যাচের পর তামিম জানালেন, দুই উইকেট পড়ার পরই ম্যাচের লাগাম নিতে মরিয়া ছিলেন তারা।

“আজকে ওরা যেভাবে শুরু করেছিল, তাতে এটা মনে করিনি যে দেড়শ রানে অলআউট করে দেব। কিন্তু একটা কথাই, সবাই বলেছি যে আমাদের যা আছে, আমরা সব যেন দিয়ে আসি মাঠে। এটাই ছিল আলোচনা।”

“ওরা ভালো শুরুর পর আমরা যখন দ্রুত দুটি উইকেট পেলাম, আমার মাথায় একটাই ভাবনা ছিল, ‘উই উইল গো ফর কিল। নো ম্যাটার হোয়াট, আমরা আগ্রাসী থাকব। তাসকিন যত জোরে সম্ভব বল করবে এবং আমরা উইকেট নেব।’ কারণ, সাধারণত আমাদের এরকম হয় যে আমরা ৩-৪ উইকেট নিয়ে নেই, এরপর বড় জুটি হয় আর ওরা বড় রান করে ফেলে। আজকে তাই যত কমে সম্ভব অলআউট করতে চেয়েছি।”

তাসকিন ও অন্য বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে অধিনায়কের চাওয়ার বাস্তবে রূপ নেয়। দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে ফেরান সাকিব আল হাসান। শরিফুল ইসলামকে আক্রমণে ফেরান তামিম, বাঁহাতি এই পেসার ফিরেই বিদায় করেন রাসি ফন ডার ডাসেনকে।

৮৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি প্রোটিয়ারা। তাসকিনের তোপে তারা গুটিয়ে যায় ১৫৪ রানে।

তবে ম্যাচের শেষ নয় সেখানেই। এরকম ছোট রানের ম্যাচ জমে ওঠার নজির ক্রিকেটে আছে অসংখ্য। আগের ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ধসে পড়েছিল বাজেভাবে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণও দুর্দান্ত। প্রথম ইনিংস শেষেই তাই তৃপ্তির ঢেকুর তোলেনি বাংলাদেশ।

তামিম জানালেন, রান তাড়ায় আগ্রাসী থাকাই ছিল তাদের লক্ষ্য।

“প্রথম ইনিংস শেষে আমার কথা একটাই ছিল যে, আমরা যেন এই ইনিংসে ১৫৪ বা ১৫৫ রানের ইনিংস হিসেবে না দেখি। আমাদের যেন চিন্তা থাকে যে ২৭০-২৮০ রান তাড়া করছি। কারণ এরকম ছোট রানের ম্যাচ অনেক সময় ‘ট্রিকি’ হয়ে ওঠে। শুরুতে একটি-দুটি উইকেট পড়ে গেলে বিপদ চলে আসে। আমাদের চিন্তাই ছিল যেন যতটা সম্ভব আগ্রাসী থাকতে পারি।”

সেই ভাবনার বাস্তবায়নে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তামিম। চোখধাঁধানো সব স্ট্রোকের ছটায় অধিনায়ক খেলেন ৮২ বলে ৮৭ রানের অসাধারণ ইনিংস। লিটন দাসের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে রান আসে ১২৭। ৯ উইকেটের জয়ে দল গড়ে সিরিজ জয়ের ইতিহাস।