টপ অর্ডারের ব্যথর্তায় নিজেকেও কাঠগড়ায় তুললেন নিগার

ওয়ানডেতে দুইশ করার অভিজ্ঞতা খুব বেশি নেই বাংলাদেশের। তবে ভারতের মতো দলকে যখন ২২৯ রানে আটকে রাখা যায়, বাড়তি আশার দোলা তখন মনে লাগেই। রান রেটের চাপ ততটা নেই, প্রয়োজন স্রেফ জুটি গড়ার। তার পরও ব্যর্থ বাংলাদেশের ব্যাটিং। বড় ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর নিগার সুলতানা দায় দিলেন টপ অর্ডারদের। নিজের ব্যর্থতার কথা বাংলাদেশ অধিনায়ক বললেন অকপটে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2022, 10:46 AM
Updated : 22 March 2022, 11:39 AM

মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ম্যাচটিতে মঙ্গলবার ভারতের কাছে ১১০ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। হ্যামিল্টনে স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা ভারতকে দারুণ শুরু এনে দিলেও বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরায় বোলাররা। কিন্তু ২৩০ রান তাড়ায় ব্যাটিংয়ে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ১১৯ রানে।

ওপেনার শারমিন আক্তার ফেরেন ৫ রানে, দলের সেরা ব্যাটার ফারজানা তিনে নেমে আউট শূন্য রানে। অধিনায়ক নিগার সুলতানা চারে নেমে করেন ৩ রান, পাঁচে নামা রুমানা আহমেদ ২। একপ্রান্ত অনেকক্ষণ আগলে রাখা মুর্শিদা খাতুন ৫৪ বল খেলে বিদায় নেন ১৯ রানে।

৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়েই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নিগার আঙুল তুললেন সেদিকেই।

“আমি মনে করি, ভারতের মতো দলকে মোটামুটি স্কোরে আটকে রেখে আমাদের বোলাররা আজকেও চমৎকার কাজ করেছে। রান তাড়া তখনই কঠিন হয়ে যায়, যখন টপ অর্ডার রান করতে না পারে। দেখা যায় যে, লোয়ার ও মিডল অর্ডারের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়। টপ অর্ডাররা যদি অবদান রাখতে পারত, তাহলে ম্যাচটি ভিন্ন হতে পারত। অন্তত আমরা আরও কাছাকাছি যেতে পারতাম।”

“টপ অর্ডার ধসে পড়ার জন্যই আজকের ম্যাচে এই অবস্থা। কোনো অজুহাত দেওয়ার কিছু নেই। এটা টপ অর্ডারদেরই দায়ভার পুরোটা। আমরা যদি দলের জন্য কিছু কিছু রান করতে পারতাম, আমিসহ, যদি তখন আউট না হতাম, যদি একটি জুটি গড়তে পারতাম, সেক্ষেত্রে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারত।”

ওয়ানডেতে কখনও ২১০ রানের বেশি তাড়া করতে পারেনি বাংলাদেশ। এই ম্যাচের আগে ৪৬ ওয়ানডেতে দুইশ ছোঁয়ার অভিজ্ঞতা ছিল স্রেফ ৬ বার। তবে এই বিশ্বকাপে এই মাঠেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩৪ করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। নিগার বললেন, সেই ম্যাচই তাদের বিশ্বাস জোগাচ্ছিল ভারতের বিপক্ষে ২৩০ রান তাড়া করার।

“হ্যামিল্টনেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩৪ রান আমরা করেছিলাম। বিশ্বাসটা তাই আমাদের ছিল যে উইকেট ভালো, প্রথম চার বা ছয় ব্যাটার লম্বা ইনিংস খেললে আমরা রান তাড়া করতে পারব।”

“আজকে যে অবস্থা ও পরিস্থিতি ছিল, ভারত একটা চেনা প্রতিপক্ষ, আমাদের সুযোগ ছিল এর চেয়ে ভালো পারফর্ম করার।”

সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলা ও টপ অর্ডারদের ব্যর্থতার পেছনে নিগারের মতে বড় ভূমিকা রেখেছে দুই দলের অভিজ্ঞতায় বিশাল ব্যবধান।

“আমার কাছে যেটা পার্থক্য মনে হয়, ওরা ২৪০ ম্যাচ খেলেছে, আমরা ৪৬টি খেলেছি মাত্র। এটা একটা পার্থক্য আছে। তারা ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক ম্যাচের ভেতরে থাকে, আমরা অতটা খেলতে পারি না। তাদের আর আমাদের শক্তির কথা যদি বলেন, স্পিন আক্রমণ কম-বেশি একই প্রায়। আমাদের বোলিং ইউনিট থেকে শুরু করে ব্যাটিংয়ে সাত-আট পর্যন্ত ব্যাটিং করার সামর্থ্য আছে। কিন্তু অভিজ্ঞতায় আমরা অনেক পিছিয়ে।”

বাংলাদেশের পরের লড়াই শক্তি, সামর্থ্য ও অভিজ্ঞতায় অনেক এগিয়ে থাকা আরেক দল, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। আগামী শুক্রবার ম্যাচটির ভেন্যু ওয়েলিংটন।