ইয়াসিরের শাপে বর

প্রায় তিন বছর বিভিন্ন সময় ওয়ানডে দলের সঙ্গে থাকলেও খেলার সুযোগ মিলছিল না। এর মধ‍্যেই সুযোগ পেয়ে যান টেস্ট দলে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই সংস্করণ দিয়ে অভিষেকও হয়ে যায়। এরপর খেলেন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি। ওয়ানডেতে প্রথম ফিফটির পর ফিরে চাইলেন ফেলে আসা সময়ের দিকে। অনেক কিছু শিখতে পারায় সেই সময়টাকেও এখন শাপে বরই মনে হচ্ছে ইয়াসির আলি চৌধুরির। 

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2022, 07:32 AM
Updated : 19 March 2022, 09:55 AM

গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় ইয়াসিরের। এই সংস্করণে শুরু থেকেই রাখেন সামর্থ‍্যের ছাপ। চলতি বছর দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হয় ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অভিষেক।

ওয়ানডেতে প্রথম ম‍্যাচে ফেরেন শূন‍্য রানে। পরের ম‍্যাচে ব‍্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনায় ক্রিজে যেতে হয়নি। তৃতীয় ওয়ানডেতে করেন কেবল ১। এই পারফরম‍্যান্সে বাদও পড়তে পারতেন।

কিন্তু পাঁচ নম্বর পজিশনের জন‍্য দীর্ঘদিন ধরে একজনকে খুঁজে ফেরা বাংলাদেশ আস্থা রাখে তার উপর। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শুক্রবার ৪৪ বলে ৫০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন ইয়াসির। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে গড়েন ম‍্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া এক জুটি। 

৩৮ রানের ইতিহাস গড়া জয়ের পর দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা ইয়াসির জানান, খেলার জন‍্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষার সময়টা তার বেশ কাজে লেগেছে।

“দক্ষিণ আফ্রিকায় (স্বাগতিকদের বিপক্ষে) প্রথম ম‍্যাচ জিতেছি, আমার খুব ভালো লাগছে। দল জেতার পেছনে আমারও একটা অবদান ছিল। অনেক দিন ধরেই (জাতীয় দলের সঙ্গে) ছিলাম। এটা আমার জন‍্য একটা শিক্ষা ছিল। কারণ হচ্ছে, অনেক কিছু শিখতে পেরেছি ওখান থেকে। জাতীয় দলের আবহ কেমন থাকে, কীভাবে মাঠে খেলতে হয়। এটা ছিল শাপে বর। এখন থেকে খেলা শুরু করেছি, খারাপ খেলেছি, ভালো খেলছি, এটাই জীবন। জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই।”

জাতীয় দলে স্কোয়াডে ইয়াসির প্রথম জায়গা পান ওয়ানডে দিয়েই। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে আয়াল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে রাখা হয় তাকে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম ট্রফি জয়ের সেই টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ পাননি। এরপর জাতীয় দলের আশেপাশেই ছিলেন তিনি। ওয়ানডেতে দেশের হয়ে খেলার সেই অপেক্ষা শেষ হয় গত ফেব্রুয়ারিতে।

অসাধারণ ইনিংস খেলার পর রাসি ফন ডার ডাসেনের চমৎকার এক ক‍্যাচ নেন ইয়াসির। তাসকিন আহমেদের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে হাঁটু গেড়ে লেগে ঘুরান ছন্দে থাকা প্রোটিয়া ব‍্যাটসম‍্যান। অনেকটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে ক‍্যাচ নেন ইয়াসির, ভাঙে বিপজ্জনক জুটি। সেই ক‍্যাচ ধরার সময় কি একটু চাপ অনুভব করছিলেন ইয়াসির?

“একটু উদ্বেগ তো ছিলই। আমরা সব সময় ওদের চাপে রাখতে চাচ্ছিলাম। বাউন্ডারি হচ্ছিল আবার ডটও হচ্ছিল। তবে ওদের জন‍্যই চাপ বেশি ছিল। কারণ, রান রেট বরাবরই বাড়ছিল। তখনই মাথায় কাজ করছিল, এই উইকেটের জন‍্য স্পেশাল কিছু করতে হবে। আমার কাছে যদি সুযোগ আসে, আমি সেই সুযোগটা কাজে লাগাব। এছাড়া আর কিছুই না, সবাই প্রশংসা করছিল।”