ইমরুলের সেঞ্চুরি, আবারও ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’-এ কাটা নাঈম

সেঞ্চুরিতে দলকে টানলেন ইমরুল কায়েস। সঙ্গে সাইফ হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের ফিফটিতে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব পেল তিনশর কাছকাছি পুঁজি। রান তাড়ায় নাঈম ইসলামের ব্যাটে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ জাগাল আশা। কিন্তু টানা দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের অধিনায়ক ‘নার্ভাস নাইন্টিজ’-এ আটকা পড়লেন। ব্যাটিং ধসে তারা যেতে পারল না লক্ষ্যের ধারেকাছে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2022, 03:46 PM
Updated : 18 March 2022, 03:46 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শুক্রবারের ম্যাচটি ৪৯ রানে জিতেছে শেখ জামাল। ২৯৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪৩ ওভারে ৪ উইকেটে ২২৫ রানের শক্ত অবস্থান থেকে রূপগঞ্জ গুটিয়ে যায় ২৪৮ রানে, ১৫ বল বাকি থাকতে।

১২২ রানের ইনিংস খেলে শেখ জামালের জয়ের নায়ক ইমরুল। ১৩৯ বলে ১৩ চার ও একটি ছক্কায় গড়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ইনিংসটি। টানা দ্বিতীয় ফিফটিতে ৭৯ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৭৮ রান করেন সাইফ। অধিনায়ক সোহান ৬৩ বলে করেন ৬৪।

নাঈম এবার আউট হন ৯৫ রানে। আগের ম্যাচে তার রান ছিল ৯২। শেখ জামালের হয়ে ৫ উইকেট নেন সাজজামুল ইসলাম।

বিপিএলে পাওয়া চোট কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফেরেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেলেও পরে ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি তিনি। ১০ ওভারে ৬১ রানে তার প্রাপ্তি শুরুর উইকেটটি।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শেখ জামাল শুরুতেই হারায় সৈকত আলিকে। ইনিংসের চতুর্থ বলে তাকে এলবিডব্লিউ করে দেন মাশরাফি।

দ্বিতীয় উইকেটে ১৬৫ রানের বড় জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন সাইফ ও ইমরুল। সাইফ ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৭ বলে। সেঞ্চুরির পথে ছুটতে থাকা ব্যাটসম্যানকে থামান মেহেদি হাসান রানা।

৫১ বলে পঞ্চাশে পা রাখা ইমরুল তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ১২৭ বলে। চিরাগ জানির বলে বোল্ড হয়ে থামেন তিনি।

এরপর দলকে তিনশর কাছে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব সোহানের। ৬৩ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৬৪ রান করা শেখ জামাল অধিনায়ক ইনিংসের শেষ বলে আউট হন।

রান তাড়ায় শুরুতে জোড়া ধাক্কা খায় রূপগঞ্জ। ১০ রানের মধ্যেই হারায় আব্বাস মুসা ও রকিবুল হাসানের উইকেট।

সেখান থেকে প্রতিরোধ গড়েন তানজিদ হাসান ও নাঈম। অল্পের জন্য তানজিদ পাননি ফিফটি। ৫৫ বলে করেন ৪৯ রান।

এরপরই তারা ইনিংস সেরা ১২৯ রানের জুটি পায় নাঈম ও চিরাগের ব্যাটে। তাদের ব্যাটে ৩৯ ওভারে দলের স্কোর স্পর্শ করে দুইশ।

শেষ ১১ ওভারে ৬ উইকেট হাতে নিয়ে তাদের দরকার ছিল ৯২ রান। উইকেটে দুই সেট ব্যাটসম্যান। কিন্তু চিরাগ ৭০ বলে ৫৯ রান করে সানজামুলের বলে বোল্ড হওয়ার পর পথ হারায় তারা।

পরে সানজামুলকেই রিভার্স সুইপ করে ক্যাচ দেন নাঈম। ১১১ বলে ৯ চারে সাজানো তার ৯৫ রানের ইনিংস। এরপর নিয়মিত উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় রূপগঞ্জ। ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন সাব্বির রহমান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৯৭/৫ (সৈকত ৬, সাইফ ৭৮, ইমরুল ১২২, সোহান ৬৪, রসুল ১১, জিয়াউর ৬*; মাশরাফি ১০-০-৬১-১, শফিউল ১০-০-৭৩-১, মেহেদি রানা ১০-০-৫৪-২, নাঈম ১০-০-৩১-০, নাবিল ৪-০-৩২-০, চিরাগ ৬-০-৪৪-১)

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৪৭.৩ ওভারে ২৪৮ (মুসা ২, তানজিদ ৪৯, রকিবুল ২, নাঈম ৯৫, চিরাগ ৫৯, সাব্বির ২৫*, মাশরাফি ৪, তানবীর ১, মেহেদি রানা ০, শফিউল ০, নাবিল ১; সুমন ৫.৩-০-২৩-০, রসুল ৮-০-৩৩-২, মৃত্যুঞ্জয় ৬-০-৪৬-২, সাইফ ৩-০-৮-০, জিয়াউর ৩-০-২৩-০, সানজামুল ১০-০-৪৭-৫, তাইবুর ৮-০-৪৫-০, সৈকত ৪-০-২১-০)

ফল: শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ৪৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ইমরুল কায়েস।

অনিকের ৬ উইকেট

কাজী অনিকের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ও মেহেদি মারুফের দারুণ ইনিংসে লিগে প্রথম জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। সিটি ক্লাবকে তারা সহজেই ৬ উইকেটে হারিয়েছে।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নিয়মিত উইকেট হারানো সিটি ক্লাব ১ বল বাকি থাকতে ১৯৯ রানে অলআউট হয়।

দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন আশিক উল আলম নাঈম। ৮৩ বলে ২ চারে গড়া তার ইনিংসটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ রানে অপরাজিত থাকেন রাজিবুল ইসলাম।

৯.৫ ওভারে মাত্র ৩০ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন অনিক। দুই ম্যাচে তরুণ বাঁহাতি এই পেসারের উইকেট হলো ৯টি।

রান তাড়ায় ৯০ রান করে পায়ে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন মারুফ। ১১৩ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় গড়া এই ওপেনারের ইনিংসটি।

২০ বল বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আকবল আলীর দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিটি ক্লাব: ৪৯.৫ ওভারে ১৯৯ (শাহরিয়ার ২৬, তৌফিক ১, মইনুল ২৭, জাওয়াদ ৯, আশিক ৫১, মইনুল ১৭, নাজমুল ৪, মামুন ২৪, রাজিবুল ৩১*, আমিনুর ১, হালিম ০, জয়নুল ৮-০-৫৩-১, আশিকুর ১০-০-৪১-২, মাহমুদুল ১০-১-৩০-০, অনিক ৯.৫-২—৩০-৬, জোহাইব ১০-০-৩০-০, আল আমিন ২-০-১১-০)

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৪৬.৪ ওভারে ২০০/৪ (মারুফ ৯০, নাবিল ১০, ফরহাদ ২৫, আল আমিন ০, মাহমুদুল ২৩, আকবর ২৭*, জোহাইব ১৮*; আমিনুর ৬-০-২১-০, জাওয়াদ ৭.৪-০-৪৫-২, রাজিবুল ১০-০-৩৭-০, মইনুল ৭-০-৩১-০, মামুন ৫-০-২০-০)

ফল: গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: কাজি অনিক।