৩৮ রানের জয়
দুই ওপেনার লিটন দাস ও তামিম ইকবাল দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে গড়ে দিলেন ভিত। সেটা কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তুললেন সাকিব আল হাসান ও ইয়াসির আলি চৌধুরি। দক্ষিণ আফ্রিকায় নিজেদের সেরা জুটির রেকর্ড দুবার ভাঙার পর দেশটিতে সর্বোচ্চ রানও গড়ল বাংলাদেশ। সফরকারীদের সেই উচ্চতা ছুঁতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪৯তম ওভারে গুটিয়ে যায় ২৭৬ রানে। তামিম ইকবালের দল পায় ৩৮ রানের জয়।
আগে থেকেই আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের শীর্ষে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিহাস গড়া জয়ের পর তাদের পয়েন্ট হলো ১১০। সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল তারা।
শেষ দিকে দারুণ বোলিংয়ে ৪ উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ। তিনি ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩১৪/৭ (তামিম ৪১, লিটন ৫০, সাকিব ৭৭, মুশফিক ৯, ইয়াসির ৫০, মাহমুদউল্লাহ ২৫, আফিফ ১৭, মিরাজ ১৯*, তাসকিন ৭*; এনগিডি ১০-১-৭৫-১, রাবাদা ১০-০-৫৭-১, ইয়ানসেন ১০-১-৫৭-২, মহারাজ ১০-০-৫৬-২, ফেলুকওয়ায়ো ১০-১-৬৩-১)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৮.৫ ওভারে ২৭৬ (ভেরেইনা ২১, মালান ৪, বাভুমা ৩১, মারক্রাম ০, ফন ডার ডাসেন ৮৬, মিলার ৭৯, ফেলুকওয়ায়ো ২, ইয়ানসেন ২, রাবাদা ১, মহারাজ ২৩, এনগিডি ১৫*; সাকিব ১০-০-৫৪-০, শরিফুল ৮-০-৪৭-২, তাসকিন ১০-১-৩৬-৩, মুস্তাফিজ ১০-০-৫০-০, মিরাজ ৯-০-৬১-৪, মাহমুদউল্লাহ ১.৫-০-২৪-১)
মিলার বাধা সরালেন মিরাজ
জয় আর বাংলাদেশের মধ্যে বাধা হয়ে থাকা ডেভিড মিলারকে বিদায় করে দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। প্রথম ৪ ওভারে ৩৮ রান দেওয়া অফ স্পিনার দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে পেলেন চার উইকেট।
বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন মিলার। কিন্তু বলের নাগাল পাননি। বল ধরেই বেলস ফেলে দেন মুশফিকুর রহিম।
৫৭ বলে তিন ছক্কা ও আট চারে ৭৯ রান করেন মিলার। জয় থেকে বাংলাদেশ এখন কেবল ১ উইকেট দূর।
এক প্রান্তে ঝড় তুলেছেন ডেভিড মিলার। আরেক প্রান্তে নিয়মিত উইকেট হারাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মার্কো ইয়ানসেনের পর একই ওভারে কাগিসো রাবাদাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
অফ স্পিনারকে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় তামিম ইকবালের হাতে ধরা পড়েন ইয়ানসেন। ক্যাচ নিয়ে তামিম বুঝতে পারেন সীমানার বাইরে যেতে পারেন তখন আলতো করে বল উপরে ছুঁড়ে দেন। পরে ভেতরে এসে মুঠোয় জমান।
ছক্কার চেষ্টায় আকাশে তুলে দেন রাবাদা। কিপার মুশফিকুর রহিম ছুটে এসে বোলিং প্রান্তে নিতে চেয়েছিলেন ক্যাচ। তবে মিরাজই মুঠোয় জমান।
৪৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩১ রান।
ফেলুকওয়ায়োকে থামালেন মিরাজ
শুরুতে এলোমেলো বোলিং করা মেহেদী হাসান মিরাজ যেন খুঁজে পেয়েছেন লাইন লেংথ। তার পুরস্কার হিসেবেই এসেছে আন্দিলে ফেলুকওয়ায়োর উইকেট।
ছক্কায় অফ স্পিনারকে ওড়াতে চেয়েছিলেন ফেলুকওয়ায়ো। টাইমিং করতে পারেননি মোটেও। লং অফে সহজ ক্যাচ নেন লিটন দাস। ১৩ বলে স্বাগতিক অলরাউন্ডার করেন কেবল ২ রান।
৪১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৬ উইকেটে ২০৭। জয় আর বাংলাদেশের মাঝে বাধা কেবল ডেভিড মিলার।
অন্য ব্যাটসম্যানদের মতো সময় নেননি ডেভিড মিলার। ক্রিজে গিয়েও মন দেন রানের গতি বাড়ানোয়। সেই চেষ্টায় ৩৮ বলে পৌঁছান পঞ্চাশে।
৩৯ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৫ উইকেটে ১৯৮। জয়ের জন্য শেষ ১১ ওভারে ১১৭ রান চাই স্বাগতিকদের।
দুর্দান্ত ক্যাচে জুটি ভাঙলেন ইয়াসির
রাসি ফন ডার ডাসেন ও ডেভিড মিলারের জুটি ভাঙতে একের পর এক বোলার বদলাচ্ছিলেন তামিম ইকবাল। অধিনায়কের চাওয়া শেষ পর্যন্ত পূরণ করেছেন তাসকিন আহমেদ। তাতে অবশ্য দারুণ অবদান আছে ইয়াসির আলির।
অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল হাঁটু গেড়ে লেগে ঘুরান ফন ডার ডাসেন। অনেকটা ছুটে গিয়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান ইয়াসির। ভাঙে ৬৪ বল স্থায়ী ৭০ রানের জুটি।
দারুণ বোলিংয়ে ১০ ওভারে কেবল ৩৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন তাসকিন।
৩৮ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৫ উইকেটে ১৯২। ক্রিজে মিলারের সঙ্গী আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো।
মিলার-ফন ডার ডাসেনের জুটিতে পঞ্চাশ
দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় আছেন রাসি ফন ডার ডাসেন ও ডেভিড মিলার। বেশ কিছু বড় শটও খেলেছেন তারা। কিন্তু তাদের তত দ্রুত রান তোলার সুযোগ দিচ্ছেন না বোলাররা। ৪৯ বলে এসেছে তাদের জুটির পঞ্চাশ।
বাংলাদেশের চিন্তার কারণ হতে পারে পঞ্চম বোলার। মেহেদী হাসান মিরাজ ৪ ওভারে দিয়েছেন ৩৮ রান। তার বাকি ৬ ওভার ম্যাচে রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
৩৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৪ উইকেটে ১৮২। জয়ের জন্য শেষ ১৪ ওভারে ১৩৩ রান চাই স্বাগতিকদের।
জুটি ভাঙলেন শরিফুল
ধীরে ধীরে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠা জুটি ভাঙলেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসারের বাউন্সার তাড়ার চেষ্টায় কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়লেন টেম্বা বাভুমা।
বাড়তি বাউন্স করা বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি বাভুমা। তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বলজমা পড়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভেস। ভাঙে ১০৭ বল স্থায়ী ৮৫ রানের জুটি।
৫৫ বলে দুই চারে ৩১ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক।
২৭ ওভারে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১২৩। ক্রিজে রাসি ফন ডার ডাসেনের সঙ্গী ডেভিড মিলার।
ব্যাটের কানায় লাগলেও কোনোমতে বল ছাড়াল সীমানা। সৌভাগ্যের ছক্কায় ৫৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করল রাসি ফন ডার ডাসেনের রান
২৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৩ উইকেটে ১১০। ৭ চার ও এক ছক্কায় ৫৮ বলে ৫৫ রানে ব্যাট করছেন ফন ডার ডাসেন। ৪৮ বলে টেম্বা বাভুমার রান ২৮।
জয়ের জন্য শেষ ২৬ ওভারে ২০৫ রান চাই স্বাগতিকদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার একশ
ধীরে ধীরে রান বাড়ানোর চেষ্টা করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এক প্রান্তে সাবধানী টেম্বা বাভুমা। আরেক প্রান্তে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় রাসি ফন ডার ডাসেন। তিনশ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়ায় ২৩ ওভারে তাদের সংগ্রহ ছুঁয়েছে একশ।
বাভুমা-ফন ডার ডাসেনের জুটিতে পঞ্চাশ
মেহেদী হাসানকে পরপর দুই চারে স্বাগত জানালেন রাসি ফন ডার ডাসেন। তাতে ৭১ বলে টেম্বা বাভুমার সঙ্গে তার জুটির রান গেল পঞ্চাশে।
২১ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৩ উইকেটে ৯০। ৪০ বলে ২৩ রানে খেলছেন বাভুমা। ৪৮ বলে ফন ডার ডাসেনের রান ৪১।
পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট
নিখুঁত লাইন ও লেংথে বোলিং করে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের সহজে রান করতে দিচ্ছেন না বাংলাদেশের বোলাররা। নতুন বলে তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট নিয়েছে সফরকারীরা।
১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৩ উইকেটে ৪২। ১৬ বলে ১২ রানে ব্যাট করছেন টেম্বা বাভুমা। ৬ বলে ৪ রানে খেলছেন রাসি ফন ডার ডাসেন।
শরিফুল ৫ ওভারের স্পেলে ২৩ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। ৩ ওভারে কেবল ১১ রান দিয়ে তাসকিন নিয়েছেন দুটি।
পাওয়ার প্লেতে মুস্তাফিজুর রহমানকে বোলিংয়ে আনেননি অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
তাসকিনের জোড়া আঘাত
দারুণ বোলিংয়ের পুরস্কার দ্রুতই পেলেন তাসকিন আহমেদ। একই ওভারে ফিরিয়ে দিলেন কাইল ভেরেইনা ও এইডেন মারক্রামকে।
চমৎকার এক ডেলিভারির লাইনে যেতে পারেননি ভেরেইনাকে। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর জোরাল আবেদনে সাড়া দিলে রিভিউ না নিয়েই ফেরেন তিনি। বল লাগো মিডল স্টাম্পের উপরের দিকে।
২৫ বলে ভেরেইনা করেন ২১।
দুই বল পর ড্রাইভ করার চেষ্টায় পয়েন্টে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ধরা পড়েন মারক্রাম। ৩ বল খেলে তিনি খুলতে পারেননি রানের খাতা।
৯ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ৩ উইকেটে ৪০। ক্রিজে টেম্বা বাভুমার সঙ্গী রাসি ফন ডার ডাসেন।
অফ স্টাম্পের বল কাইল ভেরেইনা ঘুরাতে চাইলেন লেগে, ব্যাটের কানায় লেগে থার্ড ম্যান দিয়ে পেয়ে গেলেন ছক্কা! তবে চমৎকার বোলিংয়ের ফসল একটু পরেই পেয়ে গেলেন শরিফুল ইসলাম। কট বিহাইন্ড করে দিলেন ইয়ানেমান মালানকে।
ব্যাটের কানায় লেগে মুশফিকের গ্লাভেস যায় বল। আম্পায়ার মনে করেছিলেন, বল ক্যারি করেনি, তার সফট সিগন্যাল ছিল নট আউট। তবে থার্ড আম্পায়ার নিশ্চিত হন, ঠিকভাবেই জমা পড়ে গ্লাভসে।
১০ বলে ৪ রান করে ফিরে যান মালান।
৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার রান ১ উইকেটে ১৮। ক্রিজে ভেরেইনার সঙ্গী অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ
নিজেদের সেরা জুটির রেকর্ড দুইবার গড়ার দিনে দক্ষিণ আফ্রিকায় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহও পেয়েছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও ইয়াসির আলি চৌধুরির ফিফটিতে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে করেছে ৩১৪ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের আগের সেরা ছিল ৭ উইকেটে ২৭৮। ২০১৭ সালের সফরে প্রথম ওয়ানডেতে ওই রান করেও হেরেছিল ১০ উইকেটে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ৩১৪/৭ (তামিম ৪১, লিটন ৫০, সাকিব ৭৭, মুশফিক ৯, ইয়াসির ৫০, মাহমুদউল্লাহ ২৫, আফিফ ১৭, মিরাজ ১৯*, তাসকিন ৭*; এনগিডি ১০-১-৭৫-১, রাবাদা ১০-০-৫৭-১, ইয়াসেন ১০-১-৫৭-২, মহারাজ ১০-০-৫৬-২, ফেলুকওয়ায়ো ১০-১-৬৩-১)
ছক্কার পর অক্কা মাহমুদউল্লাহ
পুল করে চমৎকার ছক্কা মারার পর বেরিয়ে এসে অফে তুলে মারতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। মার্কো ইয়ানসেনের স্লোয়ার বলে টাইমিং করতে পারেননি তিনি। ধরা পড়েন পয়েন্টে।
১৭ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ২৫ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।
৪৮ ওভারে বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ২৮৯। ক্রিজে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গী তাসকিন আহমেদ।
আফিফের দ্রুত বিদায়
ক্রিজে গিয়েই আফিফ হোসেন মেরেছিলেন চার ও ছক্কা। কিন্তু এরপর ভুগতে হচ্ছিল। বলের গতি বেশ কমিয়ে দিয়ে দেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররা। এক-এক করে নিতে সমস্যা হচ্ছিল না কিন্তু বাউন্ডারি আসছিল না। তাই বাড়তি কিছু করার চেষ্টায় ছিলেন আফিফ। সেই চেষ্টাতেই স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন তিনি।
১৩ বলে আফিফ করেন ১৭।
৪৬ ওভারে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ২৭২। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী মেহেদী হাসান মিরাজ।
ফিফটির পরেই আউট ইয়াসির
শত রানের জুটি ভেঙে সাকিব আল হাসানের বিদায়ের এক বল পর ফিরে গেলেন ইয়াসির আলি চৌধুরিও। লিটনের মতো এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানও বিদায় নিলেন পঞ্চাশ ছুঁয়েই।
কাগিসো রাবাদাকে পুল করে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন ইয়াসির। টাইমিং করতে পারেননি, সহজ ফিরতি ক্যাচ নেন বোলার। ৪৪ ওভারে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ইয়াসির করেন ৫০ রান।
৪৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ২৪৬। ক্রিজে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গী আফিফ হোসেন।
ইয়াসির প্রথম ফিফটি, সাকিবের বিদায়
অভিষেকে শূন্যর পর ১। অনেক প্রতীক্ষার পর সুযোগ পেয়ে ওয়ানডে প্রথম দুটি ইনিংস ছিল এমন। কিন্তু তার সামর্থ্যে আস্থা হারায়নি দল। এর প্রতিদান দিচ্ছেন ইয়াসির আলি চৌধুরি।
দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৪৩ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি।
ওয়ানডেত তার প্রথম ফিফটি স্পর্শ করার ওভারেই স্কুপ করার চেষ্টায় এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন সাকিব আল হাসান। লুঙ্গি এনগিডির নিচু ফুলটস বলের লাইন মিস করার পর রিভিউ নেননি তিনি। ভাঙে ৮২ বল স্থায়ী ১১৫ রানের জুটি।
৬৪ বলে তিন ছক্কা ও সাত চারে ৭৭ রান করেন সাকিব।
ক্রিজে গিয়েই চমৎকার কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারিতে রানের খাতা খোলেন মাহমুদউল্লাহ।
এই ম্যাচেই তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের ৯৫ ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের সেরা জুটি। সেটাকে দুইয়ে নামিয়ে দেশকে প্রথম শতরানের জুটি এনে দিলেন সাকিব আল হাসান ও ইয়াসির আলি চৌধুরি, সেটাও কেবল ৭২ বলে।
ক্রিকেট উপভোগ করছেন না বলে এই সফরে যেতেই চাননি সাকিব। নিজেকে ‘প্যাসেঞ্জার’ বলা বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারই আছেন চালকের আসনে। ৫০ বলে ৫০ ছোঁয়ার পর আরও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের দুটিতে ব্যাট করে কেবল ১ রান করতে পারা ইয়াসির আলি দেখাচ্ছেন নিজের সামর্থ্য। চমৎকার কিছু পুল ও ফ্লিক শট খেলেছেন তিনি। সাকিবকে দিচ্ছেন যোগ্য সঙ্গ।
৪১ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২৩৩। ৬০ বলে সাকিবের রান ৭২। ৪২ বলে ৪৯ রানে খেলছেন ইয়াসির।
সাকিব-ইয়াসিরের জুটিতে পঞ্চাশ
রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও ইয়াসির আলি চৌধুরি। দুই জনের ব্যাটে চতুর্থ উইকেটে ৪১ বলে এসেছে জুটির পঞ্চাশ।
আগের ওভারে আন্দিলে ফেলুকওয়ায়াকে ছক্কা মারেন সাকিব। পরের ওভারে লুঙ্গি এনগিডিকে পুল করে ছক্কায় ওড়ান ইয়াসির।
৩৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৭৫। ৪৪ বলে ৪৩ রানে খেলছেন সাকিব। ২২ বলে ইয়াসিরের রান ২০।
সাকিব-ইয়াসিরের জুটিতে পঞ্চাশ
রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও ইয়াসির আলি চৌধুরি। দুই জনের ব্যাটে চতুর্থ উইকেটে ৪১ বলে এসেছে জুটির পঞ্চাশ।
আগের ওভারে আন্দিলে ফেলুকওয়ায়াকে ছক্কা মারেন সাকিব। পরের ওভারে লুঙ্গি এনগিডিকে পুল করে ছক্কায় ওড়ান ইয়াসির।
৩৫ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১৭৫। ৪৪ বলে ৪৩ রানে খেলছেন সাকিব। ২২ বলে ইয়াসিরের রান ২০।
টিকলেন না মুশফিক
প্রিয় শট ঠিক মতো খেলতে পারলেন না মুশফিকুর রহিম। স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে করে ফেললেন গড়বড়। ব্যাটের উপরের কানায় লেগে উঠে গেল সহজ ক্যাচ।
বাঁহাতি স্পিনার কেশভ মহারাজের বলে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েন মুশফিক। এক চারে ১২ বলে তিনি করেন ৯। পরের বলে চমৎকার টাইমিংয়ে বোলারের মাথার উপর দিয়ে বাউন্ডারি মারেন সাকিব আল হাসান।
২৯ ওভারে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১২৯। ক্রিজে সাকিবের সঙ্গী ইয়াসির আলি চৌধুরি।
ছন্দে থাকা লিটন দাস বড় করতে পারলেন না ভালো শুরুটা। তামিম ইকবালের মতো আরেকটি নিচু হওয়া বলে বোল্ড হয়ে গেলেন ডানহাতি এই ওপেনার।
আগের বলে দুই রান নিয়ে ফিফটিতে যান লিটন। ওয়ানডেতে তার টানা তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস।
পরের বল সরে গিয়ে কাট করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বল নিচু হয়ে যাওয়ায় ব্যাটে খেলতে পারেননি। হয়ে যান বোল্ড। ৬৭ বলে এক ছক্কা ও পাঁচ চারে ৫০ রান করেন লিটন।
২৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১০৪। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী মুশফিকুর রহিম।
আচমকা নিচু হওয়া বলে এলবিডব্লিউ তামিম
সেঞ্চুরিয়নের অসমান বাউন্স শুরু থেকেই ভোগাচ্ছিল ব্যাটসম্যানদের। তবে সামলে নিচ্ছিলেন দুই ওপেনার। আন্দিলে ফেলুকওয়ায়োর আচমকা অনেক নিচু হয়ে যাওয়া বলে আর পারলেন না তামিম ইকবাল। বাংলাদেশ অধিনায়ক ফিরে গেলেন এলবিডব্লিউ হয়ে।
অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে সুইং করে ভেতরে ঢোকা বল লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন তামিম। ব্যাটে খেলতে পারেননি। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলে নেন রিভিউ। তবে কোনো কাজ হয়নি, বল লাগতো মিডল স্টাম্পে। ভাঙে ১৩০ বল স্থায়ী ৯৫ রানের জুটি।
দক্ষিণ আফ্রিাকায় ওয়ানডে এটাই বাংলাদেশের সেরা জুটি। আগের সেরা ছিল ২০১৭ সালে তৃতীয় উইকেটে ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিমের ৯৩।
৬৭ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় তামিম করেন ৪১ রান।
ক্রিজে গিয়ে দ্বিতীয় বলেই পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন সাকিব আল হাসান।
২২ ওভারে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ১০১।
মহারাজকে ছক্কার পর লিটনের দুই চার
থমকে থাকা রানের চাকায় দম দিলেন লিটন দাস। বেরিয়ে এসে কেশভ মহারাজকে লং অফ দিয়ে ছক্কায় ওড়ানোর পর মারলেন টানা দুই চার।
বাঁহাতি স্পিনাররে সুইপ করে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বাউন্ডারি মারার পর লং লেগ দিয়ে মারেন আরেকটি। তাতে বাংলাদেশের রান রেট যায় চারের ঘরে।
১৯ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৮৪।
৫৫ বলে ৪৪ রান নিয়ে খেলছেন লিটন। ৬০ বলে অধিনায়ক তামিম ইকবালের রান ৩৪।
মন্থর ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ
মার্কো ইয়ানসেনকে বেরিয়ে এসে মারতে গেলেন তামিম ইকবাল। ব্যাটের উপরের কানায় লেগে থার্ড ম্যান দিয়ে পেলেন বাউন্ডারি। অধৈর্য হয়ে খেলা এই শটে শুরুর জুটি ও দলের রান গেল পঞ্চাশে, ষোড়শ ওভারের প্রথম বলে।
১৬ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৫৪।
পাওয়ার প্লের মন্থর ব্যাটিংয়ের পর রানের গতি বাড়াতে ভুগছেন দুই ওপেনার। ৫১ বলে তামিমের রান ২৭। লিটন দাস ৪৫ বলে খেলছেন ২৩ রানে।
পাওয়ারহীন পাওয়ার প্লে
দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রানের জন্য সংগ্রাম করছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস।
১০ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৩৩।
প্রথম ১০ ওভারে বাউন্ডারি এসেছে মাত্র চারটি। তামিমের ব্যাট থেকে একটি করে ছক্কা ও চার। লিটনের ব্যাট থেকে দুটি চার। প্রান্ত বদল করেও খেলতে পারছেন না তারা। তাই রান রেট কেবল তিনের একটু উপরে।
২৯ বলে তামিমের রান ১৪। ৩১ বলে লিটনের রান ১৮।
তামিম-লিটনের সাবধানী ব্যাটিং
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতে সাবধানী। কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডির পেস বোলিং দেখেশুনে খেলছেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস।
৫ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ১৫।
১৬ বলে ১ ছক্কায় তামিমের রান ৭। ১৪ বলে লিটনের রান ৭। একটু বেশি গুটিয়ে থাকায় প্রান্ত বদল করে খেলতে ভুগছেন তারা।
মিডল অর্ডারে আরেকটি সুযোগ পেলেন ইয়াসির
পাঁচ নম্বরে ইয়াসির আলি চৌধুরিকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছিলেন তামিম ইকবাল। সেই পথেই হাঁটছে দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের দুটিতে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেলেও তেমন কিছু করতে না পারা ইয়াসির টিকে গেছেন একাদশে। সবশেষ সিরিজে খেলা দলে নেই কোনো পরিবর্তন।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, ইয়াসির আলি চৌধুরি।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলে নেই ডি কক
অসুস্থতার জন্য প্রথম ওয়ানডেতে কিপার-ওপেনার কুইন্টন ডি কককে পাচ্ছে না দক্ষিণ আফ্রিকা। তার অনুপস্থিতিতে কিপিং করবেন কাইল ভেরেইনা। একাদশে ফিরেছেন পেসার কাগিসো রাবাদা।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: টেম্বা বাভুমা, ইয়ানেমান মালান, এইডেন মারক্রাম, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিডি, আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো, কেশভ মহারাজ, কাগিসো রাবাদা, তাবরাইজ শামসি, রাসি ফন ডার ডাসেন, কাইল ভেরেইনা
সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন টেম্বা বাভুমা। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক নিলেন ফিল্ডিং। আকাশে বেশ মেঘ আছে, টস জিতলে ফিল্ডিং নিলে ব্যাটিং নিতেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে আগে ব্যাট করতেও আপত্তি নেই তার।
সাহসী ক্রিকেট খেলবে ‘আন্ডারডগ’ বাংলাদেশ
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে পয়েন্টর দিক থেকে শীর্ষে বাংলাদেশ। ১০ নম্বের দক্ষিণ আফ্রিকা। বাস্তবতা যদিও এই পয়েন্ট তালিকার মতো নয়। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিজের দলকে আন্ডারডগ মনে করছেন বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। তবে নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে জিততে না পারার কোনো কারণ দেখেন না তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বাগতিকদের বিপক্ষে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। এখানে পরিবর্তন আনতে সাহসী ক্রিকেট খেলার তাগিদ দিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তিনি মনে করেন, দল হিসেবে তিন বিভাগে ভালো করলে ভাগ্য বদল করা অসম্ভব নয়।