সেঞ্চুরিয়নে শুক্রবার প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায়।
দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বাগিতকদের বিপক্ষে কোনো জয় নেই বাংলাদেশের। ২০১৭ সালে তিন ওয়ানডে এবং দুটি করে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির ছয়টিতেই হারে বাজেভাবে।
এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি এড়াতে এবার মরিয়া তামিম। সিরিজ শুরুর আগের দিন জানালেন, যেভাবেই হোক ভাঙতে চান ব্যর্থতার বৃত্ত।
“আমরা জানি, সব সময়ই দক্ষিণ আফ্রিকা সফর আমাদের জন্য কঠিন হয়। আমাদের এখানে পরিবর্তন আনতে হবে। এটা করার জন্য আমার মনে হয়, আমাদের সাহসী ক্রিকেট খেলতে হবে। ওদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে আমাদের, এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
তামিমের আগে সংবাদ সম্মেলনে টেম্বা বাভুমা বলে গেলেন, আন্তর্জাতিক দলগুলোর মধ্যে মাঝেমধ্যেই ব্যবধান গড়ে দেয় কন্ডিশন। টানা খেলা থাকায় খুব বেশিদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে পারেনি বাংলাদেশ। তো সেখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পারলেন তামিমরা?
“এখানে আসার পর আমরা তিন-চারটা অনুশীলন সেশন করেছি। এর মধ্যে যতটুকু সম্ভব আমরা কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। একটা জিনিস বুঝতে হবে, এটা এমন কন্ডিশন নয়, যেখানে আমরা সব সময় খেলি। একদিক থেকে ভালো যে, আমরা সেন্টার উইকেটে তিনটা অনুশীলন সেশন করতে পেরেছি। আমরা দ্বিতীয় ম্যাচ ওয়ান্ডারার্সে খেলব, সেখানে সেন্টার উইকেটে একটা অনুশীলন সেশন করেছি।”
“যতটুকু আমরা পারছি, এর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। দুই-চার-পাঁচ দিনে এটা পরিবর্তন হয়ে যাবে না, যতটুকু সম্ভব মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা। মূল ব্যাপার হলো, মানিসকতা। মানসিকভাবে যতটা প্রস্তুত থাকা যাবে লড়াইয়ের জন্য, ভালো করার জন্য, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশে এক রকম উইকেটে খেলি, এখানে আরেক রকম উইকেট। মানসিকভাবে যত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারব তত ভালো।”
“আমি কঠিন বলব না, তবে চ্যালেঞ্জিং। আর এর জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। দুয়েকজন ছাড়া দলের প্রায় সবাই বেশ অভিজ্ঞ। অনেকেই অন্তত ৪০-৫০টা করে ওয়ানডে খেলেছে। সবাই জানে, এখানে কি আসছে। গুরুত্বপূর্ণ হবে মাইন্ডসেটটা, আমরা কতটা তৈরি চ্যালেঞ্জটা নেওয়ার জন্য। আর যদি দিনটা ভালো হয়, আমি সব সময় একটা কথা বলি, যদি আমরা ভালো খেলি, তাহলে যেকোনো দলেক হারাতে পারি। তবে আমাদের সুযোগের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে।”
সুযোগটা নিতে হবে শুরুতেই। বোলিং বা ব্যাটিং যাই করতে হোক, অধিনায়ক মনে করেন প্রথম ১৫ ওভার হবে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
“ব্যাটিংয়ে কম উইকেট হারিয়ে আমরা যদি ভালো শুরু এনে দিতে পারি, যে ধরনের উইকেট এবং এই মাঠের যে কথা শুনেছি…এখানে হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়। খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার হবে, আমরা নতুন বল কীভাবে সামলে নেই। যদি বোলিং করি, সেখানেও একই চ্যালেঞ্জ থাকবে।”
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, শুরুতে দ্রুত উইকেট তুলে নিতে হবে। শুরুতে উইকেট তুলে নিতে পারলে ম্যাচে ছন্দ পাওয়া যাবে। তখন স্পিনারদের ভালো করে ব্যবহার করা যাবে। অধিনায়ক হিসেবে আমিও তখন সহজে পরিকল্পনা করে এগোতে পারব।”
এবার একটি বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে বাংলাদেশ। দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো দক্ষিণ আফ্রিকান। নতুন পেস বোলিং অ্যালান ডোনাল্ড প্রোটিয়াদের কিংবদন্তি। ওয়ানডে সিরিজে পাওয়ার হিটিং কোচ হিসবে আছেন অ্যালবি মরকেল। ওয়ানডে অধিনায়ক জানালেন, যতটা সম্ভব তথ্য নিচ্ছেন তারা।
“উইকেট, মাঠ, আগে ব্যাটিং নাকি রান তাড়া ভালো এবং প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি। যতটুকু পারছি অবশ্যই তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি। ওরাও খুব হেল্পফুল। সব সময় যেটা বলি, সব তথ্য পাওয়া সম্ভব, কিন্তু যখন মাঠে নামবেন তখন সেটা নিজের ওপরই নির্ভর করছে। অনেক তথ্য পেতে পারি কিন্তু সেটা কীভাবে লাগাচ্ছি সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”